Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারত

উইসকনসিন ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ই ফুজিয়ান’র দাবি

| প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে পরিচিত চীন। এর পরই ভারতের অবস্থান। কিন্তু প্রচলিত এ তথ্য মোটেও সঠিক নয়। চীনের জনসংখ্যা গণনা পদ্ধতিতে ভুল আছে। তাই বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীন নয়, ভারতÑ এমনটাই দাবি করেছেন উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ই ফুজিয়ান। স¤প্রতি চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এমন দাবি করেন। ফুজিয়ানের মতে, ১৯৯১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সরকারি হিসাবে চীনে ৪৬ কোটি ৪৮ লাখ মানুষ জন্ম নিয়েছে। সেই হিসাবে দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ১৩৭ কোটি ৯৭ লাখ। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে। তার হিসাবে সেই সময়ে দেশটিতে ৩৭ কোটি ৭৬ লাখ মানুষ জন্মেছে। সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা বেশি বলায় মোট জনসংখ্যাও বেড়েছে। জনসংখ্যা গণনায় এ ভুল চীনকে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের তকমা দিয়েছে, তত্ত¡গতভাবে যা ভুল। ফুজিয়ানের মতে, সরকারি হিসাবের চেয়ে চীনের জনসংখ্যা অন্তত নয় কোটি কম, যা ইউরোপের দেশ জার্মানি ও বেলজিয়ামের মোট জনসংখ্যার সমপরিমাণ। তার হিসাব অনুযায়ী, চীনের বর্তমান জনসংখ্যা ১৩৭ কোটি ৯৭ লাখ নয়, বরং সাকল্যে ১২৯ কোটি। অন্যদিকে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ১৩২ কোটি। তাই চীনকে কোনোভাবেই বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ বলা যায় না। এ তকমা ভারতের প্রাপ্য। ফুজিয়ানের এ তত্ত¡ ভারত ও চীনের গণমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করেছে। তার এ দাবি সঠিক হলে জাতিসংঘের একটি প্রচলিত মতবাদও মিথ্যা প্রমাণিত হবে। সংস্থাটির মতে, ২০২২ সাল নাগাদ ভারত জনসংখ্যার নিরিখে চীনকে ছাপিয়ে যাবে। একদিকে ভারতে জনসংখ্যার হার দ্রæত বাড়ছে, অন্যদিকে চীনে এ হার বেশ নিম্নমুখী। তাই ২০২২ সাল নাগাদ ভারত চীনকে ছাপিয়ে যাবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়। যদিও চীনে এক সন্তান নীতি বাতিল করার পরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু দেশটির নারীদের মধ্যে (বিশেষত শহরাঞ্চলের কর্মজীবী নারী) সন্তান নেয়ার প্রবণতা কমেছে। এখন ফুজিয়ানের এ তত্ত¡ সঠিক হলে জনসংখ্যায় ভারত এরই মধ্যে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। আর এ তথ্য চোখের আড়ালে রয়েছে চীনের জনসংখ্যা গণনা পদ্ধতির ভুলের কারণে। ফুজিয়ান বলেন, আমার এ হিসাব এখন গণমাধ্যমে আলোচিত হচ্ছে। কিন্তু আমি অনেক আগেই এ ভুল ধরিয়ে দিয়েছি। তাই এ আলোচনায় আমি মোটেও বিস্মিত নই। ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয় ই ফুজিয়ানের লেখা বই ‘বিগ কান্ট্রি উইথ অ্যান এম্পটি নেস্ট’। এ বইয়ের ২০১৩ সালের সংস্করণে তিনি চীনের জনসংখ্যা গণনা পদ্ধতিতে ভুল থাকার কথা যুক্ত করেন। সমালোচনা করেন দেশটির পরিবার পরিকল্পনা নীতির। এরও আগে ২০০৩ সালে এ ভুলের বিষয়টি তার দৃষ্টিগোচর হয় বলে জানান চীনা এ গবেষক। তবে ফুজিয়ানের এ দাবি মানতে নারাজ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেমোগ্রাফার ওয়াং ফেং। তার মতে, চীন সরকার যে সংখ্যা জানিয়েছে, তা যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই জানিয়েছে। কোনো স্বাধীন গবেষকের পক্ষে এত বড় আকারে নিরীক্ষা চালানো সম্ভব নয়। তাই ফুজিয়ানের সংখ্যার চেয়ে সরকারি সংখ্যা বেশি বিশ্বাসযোগ্য। তবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেমোগ্রাফার লি জিয়ানজিং বলেন, ‘চীন সরকার দেশটিতে জন্মহার বেশি দেখিয়েছে। আর এর মাধ্যমে দেশটি জনমিতিক পরিবর্তনের বিষয়টি কম করে দেখানোর চেষ্টা করেছে।’ আর এ কারণেই তিনি ফুজিয়ানের দেয়া পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ