পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : গণমানুষের বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাবের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করতে দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে সাংবাদিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আর কে মিশন রোডে দৈনিক ইনকিলাব ভবনের সামনে এক সমাবেশ বক্তারা এ হুশিয়ারি দেন। ইনকিলাবের ইউনিট চিফ উমর ফারুক আলহাদীর নেতৃত্বে এ সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশ ও দেশের মুক্ত গণমাধ্যমের স্বার্থে দেশের জনপ্রিয় দৈনিক ইনকিলাবের প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ ইনকিলাব দেশ ও জনগণের পক্ষে কথা বলে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বর কথা বলে।
বক্তারা বলেন, দৈনিক ইনকিলাবে যারা কাজ করেন তারা তাদের রুটিরুজির জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। এ পত্রিকাটির সঙ্গে সারা দেশের প্রায় ৫ শতাধিক সাংবাদিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবার পরিজনের জীবনজীবিকা জড়িয়ে আছে। দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহর, জেলা উপজেলাসহ প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছেন শত শত সাংবাদিক। তাদের সবার কর্মসংস্থানের উপায় হলো ইনকিলাবে চাকুরী। তাই নিজেদের কর্মরত সংবাদকর্মীদের প্রয়োজনেই ইনকিলাবে স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিবেশের। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, আমাদেরই কিছু সাবেক সহকর্মী আজ কোন অজানা স্বার্থে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বক্তারা আরও বলেন, যারা ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদের কঠোরভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। পাশাপাশি চাকুরীচ্যুত সাংবাদিক কর্মচারীদের পাওনাদি পরিশোধ করে দিতে হবে। এটা আমাদের ন্যায্য দাবী। তবে পাওনাদি আদায়ের নামে কোন ধরনের হঠকারী কর্মকান্ড মেনে নেয়া হবে না। বরং সকলের মধ্যে একটি সৌহাদ্যপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। ইনকিলাবের ভিতরে ও বাইরে সকল সহকর্মীদের মধ্যে সম্প্রীতি ভ্রাতৃত্বের বন্ধন থাকতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে সাংবাদিক ও ইনকিলাবের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তবে বেতনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসুচী পালনের নামে ইনকিলাব গেটে বসে কর্মরতদের কাজে বাধা দিতে দেয়া হবে না। আমরা গত ২০/২২ দিন ধরে লক্ষ্য করছি চাকুরীচ্যুতরা ইনকিলাব গেটের সামনে সমাবেশ, বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসুচী পালনের নামে ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মাওলানা এমএ মান্নান (রহ.), সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন ও তার পরিবার এবং কর্মরত সাংবাদিক কর্মকর্তাদের সর্ম্পকে নানা অপপ্রচার বিভ্রান্তি ও কুৎসা রটাচ্ছেন। আমরা এ ধরনের কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি কোন অবস্থাতেই আর এধরনের উস্কানিমুলক মিথ্যা ও বিভ্রন্তিমুলক অপপ্রচার সহ্য করা হবে না।
প্রবীণ সাংবাদিক বিএফইউজের সহসভাপতি মুন্সি আব্দুল মাননান বলেন, যারা চলে গেছেন তাদেরকে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন যার যা পাওনা-দাওনা প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে পাবেন। তারা একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটা করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু এখানে অবস্থান নিয়ে কর্তৃপক্ষকে গালিগালাজ করে, চরিত্রহনন করে বক্তৃতা করবেন; এটাও কাম্য নয়। এভাবে পাওনা আদায় হবে বলেও আমরা মনে করি না। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করে প্রতিদিন ইনকিলাবের গেটে বসে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিবেন এটা কাম্য নয়। আমরা আশাকরি, তারা এই ধরণের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবেন। পাওনা-দাওনার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের পওনা বুঝে নেবেন। কিন্তু যারা এখানে কাজ করছেন, এটা তাদের রুটি-রুজির জায়গা, তাদের কাজে বাধার সৃষ্টি হয় এমন কোনো কাজ তারা করবেন না। এর সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কাছে আমি দৃষ্টি আকর্ষন করছি-এখানে যারা কাজ করছেন, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করাও আপনাদের দায়িত্ব। আপনারা কর্মরতদের নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা আপনাদের করতে হবে। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, এখানে যে পরিস্থিতি বিগত কয়েকদিন ধরে শুরু হয়েছে, তা নিরসনে আপনারা ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। তা না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
ইউনিট চিফ উমর ফারুক আলহাদী বলেন, ইনকিলাবের বর্তমান যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা নিরসনের জন্য আলোচনার বিকল্প নেই। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রæত এ সমস্যা সমাধান করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, আজ যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের পাওনা-দাওনা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে হবে। আমরাও চাই তারা তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পান। কিন্তু আজকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যদি বিনষ্ট করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এর পরিণতি ভাল হবে না। যারা ইনকিলাবে কর্মরত আছেন তাদের কাজে আর বাধা দেয়ার চেষ্টা করবেন না। ইনকিলাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ও প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে আজ থেকে কর্মরত সাংবাদিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ সম্মিলিতভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবে।
হাদী আরও বলেন, এখন থেকে যতদিন পর্যন্ত সাংবাদিকদের পাওনাদি বুঝিয়ে দেয়া না হচ্ছে এবং সংকট নিরসন না হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এই ইনকিলাব ভবনের সামনে আমাদের কর্মসূচি চলতেই থাকবে। তিনি কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বলেন, এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা আতঙ্কিত। আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমরা আমাদের জীবিকার প্রয়োজনে এখানে কাজ করতে আসি। আমাদের নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব আপনাদের।
তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, দৈনিক ইনকিলাব দেশ ও জাতির জন্য কাজ করছে। এখানে যারা সাংবাদিক আছেন তারা দিনরাত সংবাদের পেছনে ছুটে বেড়ান। কোনো ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু একটি মহল নানা কুৎসা ও অপপ্রচার রটাচ্ছে। তারা প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে বলে বেড়াচ্ছে ইনকিলাব এখন জামায়াত-শিবিরের নিয়ন্ত্রণে। এটা ডাহা মিথ্যা কথা ও অপপ্রচার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা জরুরীভিত্তিতে তদন্ত করুন, যারা মিথ্যা অপপ্রচারে জড়িত তারাই বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত ছিল। তিনি বলেন, দৈনিক ইনকিলাবের সম্পাদক যখন দেশের বাইরে ছিলেন তখন অপপ্রচারকারীদের কয়েকজন এখানে কর্মরত ছিলেন। তারা নিজেদের যোগসাজসে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী সংবাদ প্রকাশ করে ইনকিলাবকে বন্ধ করে দিয়েছিল। বিষয়টি যখন সম্পাদক বুঝতে পারলেন, তখন তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে সম্পাদক আমাদেরকে জানিয়েছেন।
হাদী বলেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে চ্যালেঞ্জ করে বলছি-ইনকিলাব কখনও সরকার ও রাষ্ট্র বিরোধী নয়। ২০০৪ সালে যখন সারাদেশে জেএমবির উত্থান ঘটে তখন ইনকিলাব সম্পাদক এর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করেছেন। তখন চারদলীয় জোট সরকার আমল। সময়টা ছিল ইনকিলাবের জন্য খুবই কঠিন ও বৈরি সময়। কিন্তু সত্য প্রকাশে ইনকিলাব সম্পাদক ছিল অটুট। ‘জামায়াতের হাত ধরেই জেএমবির উত্থান’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর সারাদেশে জোট সরকারের অংশীদার জামায়াতে ইসলামী দেশের ৬৪ জেলায় মামলা করেছিল। সেই মামলায় সম্পাদক ও আমাকে সারাদেশে হাজিরা দিতে হয়েছে। একই সঙ্গে জোট সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে। জামায়াতের হুমকির মুখে তখন আমাদের জীবন হয়ে উঠেছিল অতীষ্ঠ। তারপরও আমরা ওই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার ছিলাম। এখনও আছি। আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে ইনকিলাব স্বোচ্চার।
ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা নুরুল ইসলাম বলেন, দাবি আদায়ের নামে প্রতি ইনকিলাবের গেটে এসে বসে থাকবেন, আমাদের কাজে বাধা দেবেন তা আর হতে দেয়া হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে চাই। বাধা দিলে আমরা তা প্রতিহত করব। ইনকিলাবের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র আর চলতে দেয়া হবে না। সহ্য করা হবে না।
ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইনকিলাবের চিফ রিপোর্টার রফিক মুহাম্মদ বলেন, অনেক হয়েছে আর নয়। আমাদের কাজে বাধা দেবেন না।
ইনকিলাবের সার্কুলার কনট্রোলার সোহেল আহমেদ বলেন, যারা স্ব ইচ্ছায় চলে গেছেন, পদত্যাগ করেছেন তাদের কর্মকান্ডে মনে হচ্ছে পাওনাদি বুঝে নেয়ার জন্য এ ধরণের অবৈধ বেআইনী কর্মকান্ডে ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। তাদের এ ষড়যন্ত্র রুখে দাড়াতে হবে। এর আগে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমরা তা রুখে দিয়েছি। এখনও যদি ষড়যন্ত্র করা হয় তা চরমভাবে রুখে দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।