পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ইনকিলাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। ইনকিলাব প্রকাশনা অব্যাহত রেখে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করার পরিবেশে রক্ষা করতে হবে। এ জন্য কর্মরত সাংবাদিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি চাকুরীচ্যুত সাংবাদিক কর্মচারীদের পাওনা যথারীতি মিটিয়ে দেয়ার জন্যও কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।
গতকাল ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ইনকিলাব ইউনিটের উদ্যোগে বার্তাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ইউনিট প্রধান উমর ফারুক আলহাদীর সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় ইনকিলাবে কর্মরত সকল সাংবাদিক কর্মকর্তা কর্মচারী যৌথভাবে এ সভায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় শান্তিপুর্ণ পরিবেশে কাজ করার জন্য এবং ইনকিলাব রক্ষায় একটি যৌথ কমিটি গঠন করার। ‘ইনকিলাব সাংবাদিক কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ নামে গঠিত এ কমিটি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সকল সাংবাদিক সংগঠনের সাথে যোগাযোগ করে ইনকিলাবের বর্তমান পরিস্থিতি জাতির সামনে তুলে ধরবে।
জরুরী সভায় ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক এবং বিএফইউজের সহ-সভাপতি মুন্সি আবদুল মাননান বলেন, ইনকিলাবে বর্তমানে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। কোন ধরনের হঠকারি সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। ইনকিলাব বন্ধে যদি কেউ পাঁয়তারা করে থাকেন, তাহলে তাদের সেই ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, আমরা যারা কর্মরত আছি আমরাও চাই যারা চাকুরীচ্যুত তাদের পাওনা কর্তৃপক্ষ মিটিয়ে দিবেন। পাশাপাশি কর্মরত সাংবাদিক কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজে কেউ বাধা দিলে তাদের প্রথমে বুঝিয়ে বলতে হবে। তারপরেও যদি কেউ অন্যায়ভাবে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেন তখন কর্তৃপক্ষকে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি চাকুরীচ্যুত সাংবাদিক কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারাও আমাদের ভাই, আমরা আপনাদের কোন অকল্যাণ চাই না। আমরা কেউ কারও প্রতিপক্ষ নই। আপনারা আমাদের কাজে কোন বাধা দেবেন না। সকল সাংবাদিক কর্মচারী তাদের পাওনাদি পাবে বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বুঝে নিবেন, এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক বিনষ্ট হোক এমন কোন কাজ করবেন না। আর যা কিছুই করেন, তা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নকে সাথে রেখেই করতে হবে কোন ভাবেই ইউনিয়নকে এড়িয়ে গিয়ে কিছু করা ঠিক হবে না।
ইনকিলাব ইউনিট প্রধান উমর ফারুক আলহাদী গত কয়েক দিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে সভায় সকলকে অবহিত করে বলেন, চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা, পদত্যাগ করা এবং চাকুরীতে পুনরায় যোগদান করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। যারা চাকুরীচ্যুত হয়েছেন তাদের পাওনাদি কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করে দিবেন, এটা আমাদের বিনীত অনুরোধ।
তিনি বলেন, যে কোনো সমস্যা সমাধানে আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। আলোচনার মাধ্যমেই সংকট নিরসন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সমস্যা সমাধানে ইতোমধ্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। কয়েক দিন আগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, সহ-সভাপতি খুরশিদ আলম, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, যুগ্ম সম্পাদক শাহীন হাসনাত, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মুহাম্মদ এবং প্রচার সম্পাদক আকন আবদুল মান্নানসহ একটি প্রতিনিধি দল ইনকিলাব সম্পাদকের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে নেতৃবৃন্দ চাকুরীচ্যুতদের পনরায় বহাল করার প্রস্তাব রাখেন। প্রতি উত্তরে সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেছেন, আমি অপারগ, ইনকিলাব লোকসানের মধ্যে আছে, আয় কমে গেছে। তাই আমি স্টাফ কমিয়েছি। তিনি নেতাদের বলেছেন , সকলের পাওনা আমি পরিশোধ করে দেবো। তবে আমাকে সময় দিতে হবে। এ সময় সহ-সভাপতি খুরশিদ আলম জানতে চান, সাংবাদিকদের পাওনাদির হিসাব যা দিয়েছেন, তা সঠিক কিনা। চাকুরীচ্যুতদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন তাদের হিসাবে গড়মিল আছে।
প্রতি উত্তরে ইনকিলাব সম্পাদক বলেছেন, যারা এ অভিযোগ করেছেন তাদের সাথে নিয়ে আপনারা ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ আমার হিসাব শাখায় গিয়ে হিসাব করুন, যদি তাদের হিসাবে গড়মিল থাকে তাহলে তা পুনরায় হিসাব করতে পারেন। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত ইনকিলাবের জেনারেল ম্যানেজার হাবিবুর রহমান তালুকদারকে সম্পাদক বলেন, তাদের সাথে বসে সকল হিসাব বুঝিয়ে দিন এবং পাওনাদি পরিশোধের জন্য কথা বলে ব্যবস্থা নিন। তবে একই সাথে সকল টাকা পরিশোধ করা সম্ভব নয়। কারণ ইনকিলাব বর্তমানে মারাত্মক অর্থ সংকটে আছে।
এ সময় সভাপতি আবদুল হাই শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান ইনকিলাব ইউনিটকে দায়িত্ব দেন সকল বিষয়ে সম্মন্বয় করতে এবং পরবর্তী করণীয় বিষয়াদি নিয়ে ইউনিয়ন অফিসে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য।
ইউনিট প্রধান হাদী বলেন, পরবর্তীতে কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে ইউনিয়ন অফিসে এবং ইউনিয়নের দুইজন কর্মকর্তা সহ-সভাপতি খুরশিদ আলম ও বাসস ইউনিট প্রধান আবুল কালাম মানিক ইনকিলাবের জিএম হাবিবুর রহমান তালুকদারের সাথে পাওনাদির হিসাব নিয়ে কথা বলেন এবং আরো কয়েকটি পাওনা বিষয়ে পরিশোধের সিদ্ধান্ত দেন। এসব বিষয় চাকুরিচ্যুতদের অবহিত করা হয়েছে। এখন তাদের সকল পাওনা কবে পরিশোধ করা হবে এবং কত দিনের মধ্যে পরিশোধ করা হবে এ নিয়ে যখন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ইনকিলাব সম্পাদকের সাথে বেঠকের পরিবেশ তৈরী করতে যাচ্ছেন , ঠিক তখনই চাকুরিচ্যুতরা আজ সোমবার আবারো ইনকিলাব ঘেরাও কর্মসুচী দিয়েছেন।
হাদী বলেন, আন্দোলন আর আলোচনা এক সাথে চলতে পারে না। আমরা তাদের কর্মসুচীতে কোনো বাধাও দেবো না। আপনারা আপনাদের পাওনাদি আইন মোতাবেক বুঝে নিবেন এটা আমরাও চাই। কিন্তু আমরা যারা কর্মরত আছি, তাদের কাজে বাধাদান এবং তাদের কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ করে আপনাদের কি লাভ। আমরা চাই না নিজেদের মধ্যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক। আমাদের বিনীত অনুরোধ, ইনকিলাব বন্ধ হয়ে যায় এ ধরনের কিছু করবেন না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে বাধ্য হয়েই ‘ইনকিলাব সাংবাদিক কর্মকর্তা কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। দয়া করে এ ধরনের পরিবেশ তৈরী করবেন না।
সভায় ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা স্টালিন সরকার ও চীফ রিপোর্টার রফিক মুহাম্মদ, স্টাফ রিপোর্টার হাসান সোহেল বক্তব্য রাখেন।
এদিকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আবারো বলেছে, ইনকিলাব বন্ধের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। গতকাল ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ বলেছেন, চাকুিরচ্যুতদের সকল পাওনা অবিলম্বে বুঝিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি যারা কর্মরত আছেন তাদের কাজে কোন ধরনের বাধা সৃষ্টি করা যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।