পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ক্ষমতা নিয়েই যেন মুসলিম বিশ্বের মন জয়ে মনোযোগ দেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ক্ষমতায় বসেই ছুটে গিয়েছিলেন মিসরে। মুসলিম তরুণদের সামনে বক্তব্য দিয়েছিলেন। জয় করেছিলেন তাদের মন। ডোনাল্ড ট্রাম্প ওবামার কাজকর্ম খুব একটা পছন্দ না করলেও একই কৌশলে তিনি এগোচ্ছেন। প্রথম বিদেশ সফরে দীর্ঘদিনের মিত্র সউদি সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আরব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন ট্রাম্প। সফরকে কেন্দ্র করে আরো ৫৬টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানকে রিয়াদে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সউদি বাদশাহ সালমান। তাদের সামনেও বক্তব্য রাখবেন তিনি। যোগ দেবেন সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্থা প্রতিরোধে আয়োজিত আরব ইসলামিক আমেরিকান সামিটে। তাই বলা যায়, এক সফরে পুরো মুসলিম বিশ্বের নেতাদের পাশে পাচ্ছেন ট্রাম্প। সুযোগ পাচ্ছেন তাদের মন জয়ের। আর এ চেষ্টায় তিনি কোনো কমতি রাখবেন না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ট্রাম্পের কাছে কী চাইবেন মুসলিম নেতারা? বিশ্লেষকদের মতে, এ সফরের মূল আলোচ্য হবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যু। সেই সঙ্গে ট্রাম্পের প্রতি থাকবে ফিলিস্তিনে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণের আহŸান। সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধ নিরসন ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহŸানও জানানো হবে। সফরকালে সউদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সউদ এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করবেন ট্রাম্প। এসময় অন্তত ১০টি মার্কিন তেল কোম্পানির সঙ্গে বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনা রয়েছে সউদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি সউদি আরামকোর। সউদি আরবের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তির খবর আসতে পারে এ সফর থেকেই। ওয়াশিংটনের উড্রো উইলসন সেন্টারের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ডেভিড মিলার জানান, আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের রাজনীতিতে ইরানের বিরুদ্ধে সউদি আরবকে আরো বেশি পরিমাণে সহায়তা করবে ট্রাম্প প্রশাসন, এমনটাই আশা করছে দেশটি। ট্রাম্পের সফরকালে এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইবে সউদি সরকার। তিনি বলেন, ট্রাম্প এমন একজন ব্যক্তি যিনি একসময় সউদি আরবের সমালোচনায় মুখর ছিলেন। অথচ এখন দেশটিকে অন্যতম মিত্র স্বীকার করে সফরে যাচ্ছেন। তাই এ সফর দুপক্ষেরই অবস্থান যাচাইয়ে ভূমিকা রাখবে। গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সদস্য দেশ বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সউদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের সঙ্গে আলাদা বৈঠকে মিলিত হবেন ট্রাম্প। এসময় সিরিয়া ইস্যুতে তাদের মধ্যে কথা হবে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির বেসামরিক মানুষদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এগিয়ে নিতে আলোচনা করবেন তারা। বাংলাদেশসহ ৫৬টি মুসলিম দেশের নেতাদের সঙ্গে ধর্মীয় উগ্রপন্থার বিস্তার রোধের উপায় নিয়ে শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন ট্রাম্প। এসব গোষ্ঠীর অর্থায়নের উৎস বন্ধে আলোচনা করবেন। এ আলোচনায় একসঙ্গে সবগুলো মুসলিম দেশের নেতাদের পাশে পাচ্ছেন ট্রাম্প। আর এটাই হবে মুসলিম বিশ্বের মন জয়ের মোক্ষম সময়। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের অধ্যাপক শিবলি তেলহামি বলেন, ওবামা প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি উপসাগরীয় দেশগুলোর নেতারা মেনে নিতে পারেননি। তাদের মনে মার্কিন প্রশাসনের বিষয়ে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এখন ট্রাম্প এ নীতিতে একটু ভিন্নতা আনলে তারা সাদরে গ্রহণ করবেন। আর সফরকালে এ চেষ্টাই করবেন ট্রাম্প। ব্রুকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক সিনিয়র ফেলো মিশেল ও’হ্যানন বলেন, ট্রাম্পের এ সফরে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে নতুন যুগের সূচনা হতে যাচ্ছে। আর তা হবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির বাস্তব প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে। এতে ভূমিকা রাখবে সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনের বর্তমান পরিস্থিতি। যদিও ওবামার রেখে যাওয়া মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে এখনই বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন না এ বিশ্লেষক। সউদি সফর শেষে সোজা ইসরাইল যাবেন ট্রাম্প। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর ভ্যাটিকান সফরে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে দেখা করবেন। রোম থেকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে গিয়ে সামরিক জোট ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন। সবশেষ সিসিলিতে জি-৭ দেশগুলোর বৈঠকে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তার। আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।