Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আওয়ামী ওলামা লীগের একটি গবেষণা

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রীক মূর্তি অপসারণ, হেফাজতের ধোয়া তুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাঠ্যপুস্তকে পুনর্বহালকৃত প্রবন্ধ-কবিতা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল, রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগেও বহাল রাখাসহ ১২ দফা দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সমমনা ১৩টি ইসলামী দল গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশাল মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। মানবন্ধনে উত্থাপিত দাবীসমূহের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
(১) সারাদেশে ৫৬০টি মসজিদ তৈরির প্রকল্প নেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন। তবে সউদী অর্থায়নে নির্মিত মসজিদগুলো যাতে সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আইএস’র উদ্ভাবক ওহাবী-সালাফী মতবাদের কেন্দ্র না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
বক্তারা বলেন, সারাদেশে ৫৬০টি মসজিদ তৈরির প্রকল্প নেয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের প্রতি অভিনন্দন। মসজিদগুলোর পাশাপাশি স্থাপন করা হবে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও। তবে প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করে দেবে সউদী আরব। পাশাপাশি সাতকানিয়ার তৎকালীন জামাতী-সালাফী মতাদর্শী এমপি নদভী সউদী অর্থায়নে দেশে ১০১০টি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। তবে সউদী আরব যেহেতু মসজিদ-মাদরাসাগুলোতে অর্থায়ন করছে সেহেতু এ বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। কারণ সউদী আরব বিতর্কিত ‘ইবনে তাইমিয়া’র প্রবর্তিত উগ্র ওহাবী-সালাফী মতবাদের পৃষ্ঠপোষক। তালেবান থেকে শুরু করে বর্তমানে আইএস নামে পরিচিত যত উগ্র ও সন্ত্রাসী গ্রæপ রয়েছে সকলেই ওহাবী-সালাফী মতবাদে দীক্ষিত ও প্রশিক্ষিত। ওহাবী-সালাফী চিন্তাধারার ফসল হচ্ছে, আজকের জামাত-রাজাকার, হিযবুত তাহরীর, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, নব্য জেএমবি, আহলে হাদীস আন্দোলন, জাকির নায়েক, বিন বা’য ও আলবানীরা। যারা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধ। এই ওহাবী-সালাফী মতবাদের আন্তর্জাতিক ফসল হচ্ছে, আইএস, আন্ নুসরা, আল শাবাব, বোকো হারাম, আল কায়েদা ও তালেবানের মতো উগ্র সন্ত্রাসী গ্রæপ। ধর্মের নামে গড়ে উঠা এসব গ্রæপের সদস্যরা সউদী আরবের বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সারাবিশ্বে তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। প্রথমে তারা মুসলিম বিশ্বের মধ্যে আক্বীদাগত দ্ব›দ্ব ও বিভেদ সৃষ্টি করছে এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের শত্রæদের খুশি করার জন্য মুসলমান নামধারীদের দিয়ে বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ছড়াচ্ছে। তাই সউদী আরবের নির্মিত ৫৬০টি মসজিদ ১০১০টি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম যাতে দেশে স্থায়ীভাবে সন্ত্রাসবাদের প্রজনন কেন্দ্র না হয় সে বিষয়টি আগেই নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসিত দেশের সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রম অঙ্কুরেই বিনষ্ট হতে পারে।
(২) হেফাজতের নাম দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাঠ্যপুস্তকে সংশোধিত প্রবন্ধ, কবিতা প্রত্যাহার করা মেনে নেয়া হবে না এবং মুসলমানিত্ব তুলে দিয়ে পুনরায় হিন্দুত্ববাদ ঢুকানোর চক্রান্ত দেশবাসী মুসলমান কখনো মেনে নিবে না। শিক্ষাবিদ নামধারী নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদীদের চক্রান্তে দেশবাসী মুসলমানদের ক্ষেপানোর, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। বর্তমান পাঠ্যপুস্তকে বহাল থাকা হিন্দুত্ববাদসহ ইসলামবিরোধী সমস্ত কুফরী বিষয়গুলো বাদ দিতে হবে। পাঠ্যবইয়ে সাধারণ বানানের ভুল সংশোধনী দেয়া হলে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়ে ভুল সংশোধন করা হলো না কেন?
বক্তারা বলেন, গত ২৭ এপ্রিল ইসলামবিদ্বেষী বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী শিক্ষাবিদদের সাথে বৈঠক করে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠ্যপুস্তক থেকে পুণরায় সম্মানিত ইসলামী চেতনা সম্বলিত গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হেফাজতের দোহাই দিয়ে এসব প্রবন্ধ বাদ দিতে বাংলা বইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নাস্তিকদের মুক্তমনা বøগের অন্যতম সংগঠক ইসলামবিদ্বেষী কট্টর বামপন্থী শ্যামলী নাসরীন চৌধুরীকে। এসব হলো শিক্ষাবিদ নামধারী বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী, হিন্দুত্ববাদীদের চক্রান্তে দেশবাসী মুসলমানদের ক্ষেপানোর সরকারবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র। শিক্ষামন্ত্রী তার বামপন্থী চেতনা বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দপ্তরগুলোকে বামপন্থী নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদীদের আখড়ায় পরিণত করেছে। আলিম-ওলামাদের বাদ দিয়ে ইসলামবিদ্বেষীদের হাতে মুসলমানদের শিক্ষা ব্যবস্থা তুলে দেয়ার চক্রান্ত যেকোন মূল্যে প্রতিহত করা হবে।
বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালের সংশোধিত পাঠ্যসূচিতে ইসলামী চেতনা প্রতিফলনে ইসলামবিদ্বেষী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়াগুলো আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুললেও একই পাঠ্যসূচীতে হিন্দুত্ববাদী চেতনা বহাল রাখলেও এগুলো বাদ দিতে তারা কিছুই বলেনি। তারা তথাকথিত ইসলামীকরণের ধোঁয়া তুলেছে। অথচ সেটা সম্পূর্ণ ভুল প্রচারণা। বরং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পাঠ্যপুস্তকে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হয়েছে। ‘ও’ অক্ষরে ‘ওড়না’ শব্দ ব্যবহার নিয়ে একটি কুচক্রী মহল অপপ্রচার চালিয়েছে। ওড়না মুসলমানদের ধর্মীয় পোশাক হওয়ায় তারা সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ করছে। অথচ একই পাঠ্যক্রমে ঋ-তে শেখানো হচ্ছে ‘ঋষি’। র-তে শেখানো হচ্ছে ‘রথ টানি’। বাংলাভাষার স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবন্ধ মিলে মোট ৪৯টি বর্ণের উদাহরণ দিতে ৩৪ ভাগেরও বেশি পবিত্র দ্বীন ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর অনৈসলামিক হিন্দুত্ববাদী ও বিজাতীয় সংস্কৃতি শেখানো হচ্ছে। ৮ম শ্রেণীতে পড়ানো হচ্ছে নাস্তিক্যবাদী কবিতা মানবধর্ম, ষষ্ঠ শ্রেণীতে ‘চারুপাঠ’ বইয়ে পড়ানো হচ্ছে হিন্দুত্ববাদী কবিতা ‘মানুষ জাতি’ (কবিতার মূল নাম জাতির পাতি)। যেখানে বার বার বলা হচ্ছে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ উপনিষদ শ্লোক ‘নিখিল জগত ব্রহ্মময়’, ৪র্থ শ্রেণীতে নেমন্তন নামক কবিতায় দাওয়াত দেয়া হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মীয় গীত অনুষ্ঠান ভজনের, অষ্টম শ্রেণীতে পড়ানো হচ্ছে হিন্দুদের পুনর্জন্মবাদ নিয়ে কবিতা ‘আবার আসিবো ফিরে’ ও-তে ওড়না শেখানোয় নাস্তিক ও হিন্দুরা অনেক আন্দোলন করেছে। কিন্তু ৮ম শ্রেণীতে শেখানো হচ্ছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী শব্দ। যেমন: নাটমন্দির- দেবমন্দিরে সামনের ঘর, যেখানে নাচ-গান হয়। বোষ্টম- হরিনাম সংকীর্তন করে জীবিকা অর্জন করে এমন সৈষ্ণব। কাপালি- তান্ত্রিক হিন্দু সম্প্রদায়, চÐীমÐপ- যে মÐপে বা ছাদযুক্ত চত্বরে দূর্গা, কালী প্রভৃতি দেবীর পূজা হয়। দÐব- মাটিতে পড়ে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম। ১০ম শ্রেণীতে শরৎচন্দ্রের লেখা অভাগীর স্বর্গ গল্পে শেখানো হচ্ছে- শবযাত্রা, হিন্দুর, হরিধ্বনি, শ্মশান, ছোটজাত, অন্তেষ্টিক্রিয়া, চিতা, শব, পুত্রহস্তের মন্ত্রপুত অগ্নি, স্বর্গ, স্বর্গারোহণ, রথ, বামুন, সৎকার, সতীল²ী, মড়া পোড়ানো, ইন্দ্র, ঈশ্বর, কায়েত, হিন্দু, অশৌচ, গোবরজল, শ্রাদ্ধ, নুড়ো, ঠাকুরের মত অসংখ্য হিন্দুত্ববাদী শব্দ, ৯ম-১০ম শ্রেণীতে রণেশ দাশগুপ্তের রহমানের মা নামক ছোটগল্পে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বোরকা খুলে ফেলার প্রয়োজনীয়তা দেখানো হয়েছে। এসব কি হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা নয়?
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম পবিত্র ইসলাম হওয়ার পরও পাঠ্যপুস্তকে যৎসামান্য ইসলামী চেতনা সম্বলিত প্রবন্ধ থাকায় ইসলামবিদ্বেষী তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়াগুলো আপত্তি তুলেছে। অথচ ভারত তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হওয়ার পরও পশ্চিমবঙ্গের পাঠ্যপুস্তকে মুসলিম লেখকদের গল্প-কবিতা স্থান পায় না। যেমন পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যবইয়ের মোট ২১টি পাঠ্যে লেখক-কবির নাম উল্লেখ আছে, যার ১০০% হিন্দু ধর্মাবলম্বী। অথচ পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম জনসংখ্যা ৪০%-এর উপরে। মুসলিম কবি-সাহিত্যিকেরও অভাব নেই সেখানে, তারপরও সব বাদ, শুধু হিন্দুদের গল্প-কবিতা থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ উল্টো। মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে ২০১৭ সালের ১ম থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা বইয়ে ১৭৭টি গদ্য-পদ্যের লেখকদের মধ্যে ৭২ জন হিন্দু ৩৮ জন নাস্তিক মিলে মোট ১১১ জনই হিন্দু ও নাস্তিক লেখক। যাদের বাংলা বইয়ের শতকরা গড়ে ৬২.৭১ ভাগ দখল দেয়া হয়েছে।
বক্তারা বলেন, ১ম শ্রেণীতে ৭টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ৫জন। শতকরা ৭১ শতাংশ। ২য় শ্রেণীতে ৭টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ৫জন। শতকরা ৭২ শতাংশ। ৩য় শ্রেণীতে ১০টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ৬জন। শতকরা ৬৩ শতাংশ। ৪র্থ শ্রেণীতে ১২টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ৯জন। শতকরা ৭৫ শতাংশ। ৫ম শ্রেণীিেত ১৩টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ৮ জন। শতকরা ৬১ শতাংশ। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ১৯টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ১২জন। শতকরা ৬৩ শতাংশ। ৭ম শ্রেণীতে ২১টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ১৪ জন। শতকরা ৬৬ শতাংশ। ৮ম শ্রেণীতে ২৪টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ১৬ জন। শতকরা ৬৬ শতাংশ। ৯ম-১০ম শ্রেণীতে ৬৪টি গদ্য-পদ্যের মধ্যে হিন্দু ও নাস্তিক লেখকের সংখ্যা ৩৬ জন। শতকরা ৫৬ শতাংশ। যা শতকরা গড়ে ৬২.৭১ ভাগ। এক্ষেত্রে তারা সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ করছেনা। মুসলমানদের বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগও তুলছে না।
বক্তারা বলেন, এবারের পাঠ্যপুস্তকে ‘ছাগল গাছে উঠে আম খাচ্ছে’ এরকম একটি ছবি ছাপা হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। অথচ পঞ্চম শ্রেণীর সম্মানিত ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বইয়ে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ (মসজিদুল আকসা) উনার ছবির নামে ইসরাইলী ইহুদীদের তৈরি ‘ডোম অব দ্য রক’ নামক একটি স্থাপনার ছবি ছাপানো হয়েছে। অথচ উইকিপিডিয়াতেও মূল পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ (মসজিদুল আকসা) উনার ছবি রয়েছে। কিন্তু এর কোনো সমালোচনাও হয়নি। কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি।
বক্তারা বলেন, এ বছর যে বানান ভুলটি নিয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে, সেটা ক্লাস-৩-এর হিন্দুধর্ম বইয়ের শেষ মলাটে অবস্থিত। যেখানে ভুল বানানে লেখা হয়েছে- ফড় হড়ঃ যবধৎঃ ধহুনড়ফু। ‘আঘাত’-এর বদলে ‘হৃদয়’ দিয়ে দিয়েছে লেখকরা। এনসিটিবি ইতোমধ্যে এই ভুলগুলোর সংশোধনী দিয়েছে। যারা ভুল করেছে তাদের শাস্তিও হয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের পবিত্র দ্বীন ইসলাম নিয়ে শুধু ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা’ বইয়ে বিভিন্ন পবিত্র আয়াত শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে ২৪টি ভুল থাকলেও কোনো কারেকশনও করা হয়নি বা কোনো শাস্তিও দেয়া হয়নি! শুধু তাই নয়, সাংবিধানিক অধিকার মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা না করে উপজাতি নৃ-গোষ্ঠীর ভাষায় পাঠ্যবই ছাপানো হয়েছে। এমনকি শিশুদের ১ম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে ষড়যন্ত্রমূলক ম্যাসেজ হিসেবে ছবির মাধ্যমে কোমলমতি শিশুদের শিশুবেলাতেই যৌনতার পাঠ দেয়া হয়েছে।
বক্তারা বলেন, নতুন পাঠ্যপুস্তকে ‘ওড়না’ শব্দ থাকায় নাকি লিঙ্গ বৈষম্য হয়েছে। নাস্তিক্যবাদীদের মতে, “একেবারে ছোট বয়স থেকে নারী ও পুরুষের পার্থক্য তৈরি করে এমন কোন শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়।” তাহলে তো স্কুলের ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা ইউনিফর্মও তুলে দিতে হবে! কারণ ছেলে ও মেয়েদের আলাদা ইউনিফর্ম তাদের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করছে এবং লিঙ্গ বৈষম্য শিখছে। পাশপাশি ওড়না বিরোধীদের বক্তব্য অনুযায়ী তাহলে মেয়েরা অন্তর্বাস পরাতে পারবে না। সেলোয়ার কামিজ পরাতে পারবে না। এভাবেও তো তাহলে লিঙ্গ বৈষম্য তৈরি হয়! নারী ও পুরুষের পার্থক্য তৈরি হয়! নাস্তিক্যবাদীরা কি এগুলো বাদ দিবে? এছাড়া বঙ্গমাতা ফজিলতুন নেছা, বর্তমানকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, কৃষিমন্ত্রী সবাই মাথায় শাড়ি বা ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকেন। এভাবেই তো তারা দেশ চালাচ্ছেন। ওড়না কি তাদের নারী প্রগতিতে কোনো অন্তরায় হয়েছে?
(চলবে)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আওয়ামী


আরও
আরও পড়ুন