শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
বাদল বিহারী চক্রবর্তী
‘আকাশভরা সূর্য-তারা, বিশ^ভরা প্রাণ,
তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান।।’
হ্যাঁ, বিশ^ভরা প্রাণময় আসরে যে মনীষী তাঁর স্থান খুঁজে পেয়েছিলেন, বিস্ময়ভরা গান জাগ্রত হয়ে অনুভ‚ত ও গীত হয়েছিল যাঁর কণ্ঠ- মননে, তিনি যে আমাদের সকলেরই পরিচিত নাম, সার্ধশত বর্ষ পর নতুন করে আর যাঁর সম্পর্কে কিছু বলার থাকেনা, তবু বারবার বলতেই হয় ; সেই বাংলার দিকপাল কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীত¯্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক ; গুরুদেব যিনি, কবিগুরু ও বিশ^কবি অভিধায় যিনি নন্দিত, সেই ক্ষণজন্মা মনীষী- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শুভ জন্মদিন ২৫ বৈশাখ। বাংলা ১২৬৮ সালের এ দিনে তিনি দেখেছিলেন, তাঁর ভাষায় বিস্ময়াকীর্ণ এ পৃথিবীর বুক, ক্রমশ বয়ঃপ্রাপ্ত হয়ে যিনি মহাশূন্যের বহু অজানা ও নিগূঢ় রহস্যে বিস্ময়াভিভ‚ত হয়েছিলেন, তিনি আমাদের প্রাচ্যের প্রথম নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
সাহিত্যে আধুনিকতা কি, এ সম্বন্ধে অগণন কবি, সাহিত্যিক ও সাহিত্যব্রতী চিন্তাবিদগণ অনেক ভাবেই বলেছেন, বলার আছে এবং থাকবেও অনন্তকাল। তবে এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ এমন এক মূল্যবান কথা বলেছেন, যা পুরো বিষয়টিকেই একটা ধ্রæপদী ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে দেয় : ‘আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করো বিশুদ্ধ আধুনিকতা কি, আমি বলব বিশ^কে ব্যক্তিগত আসক্তভাবে না দেখে বিশ^কে নির্বিকার তথ্যগতভাবে দেখা।’ কিন্তু কবিগুরুর এই ব্যক্তব্য আমাদের আধুনিক লেখকদের, বিশেষত কবিদের পছন্দ হয়নি। তাঁদের প্রায় সিংহভাগ কবিজনই আধুনিকতায় খুঁজেছিলেন বদলেয়ারের সৃষ্ট নতুন পথ, ‘ ক্লেদজ কুসুম ’।
বলতে গেলে, বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশক থেকেই লেখকদের একাংশের কাছে একান্তই হয়েছিল যে, যে কোন মূল্যে রবীন্দ্রপ্রভাব থেকে বেরিয়ে আসা। বিশেষ করে, বাংলাভাষাভাষী স্বপ্রজ্ঞাপিত আধুনিকদের ভিড়ে একটা সময়ে এটা অবাক হওয়ার কিছু ছিল না যে, রবীন্দ্রনাথ যুগের প্রয়োজন অনুযায়ী ততটা প্রাগ্রসর নন। তাই রবীন্দ্রবলয় থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে একটা অন্যতম লক্ষণ, যাতে অবশ্যম্ভাবীভাবেই ছিল সাহিত্যে যৌনতার নিঃসঙ্কোচ অনুপ্রবেশ। সেই সাথে ছিল অমঙ্গল ও অশুভের মিলিত করতাল।একথা অনস্বীকার্য যে, পাশ্চাত্য প্রগতি, সমৃদ্ধি ও আধুনিকতার তুলনায় ভারতবর্ষীয়, তথা বঙ্গীয় সমাজচিত্র ও ভাবাদর্শ ততটা অগ্রসর নয় ; যেখানে প্রায় শতভাগ মানুষের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে রয়েছে আবালবৃদ্ধবনিতা সকলের অবারিত সৌন্দর্যবোধ ও ভক্তিভাব। তাই, উপমহাদেশের আধুনিকদের ঘোষণা কতটা বাস্তব ও ফলপ্রসূ রূপ নিতে পেরেছিল, তার পরিমাপ অনাগত দিনের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পানুরাগী সুধীজনদের হাতে ছেড়ে দেয়াই ভাল।
প্রারম্ভেই যেমন বহুমুখী বিশেষণে রবীন্দ্রনাথকে বিশ^সভায় অনন্য এক অপ্রতিদ্ব›দ্বী মনীষী হিসেবে যাঁর তুলনা তিনি নিজেই, তারই সপক্ষে আবারো বলছি, ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা, চিত্ররূপময়তা, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, ন্বদেশপ্রেম, বিশ^প্রেম, আধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, রোম্যান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনাতেই ছিল রবীন্দ্রনাথের কাব্য সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য। তাই, বলতে হয়, তিনি যে কতটা প্রয়োজনীয়, যেখানে প্রতিষ্ঠিত সবাই, যেমন- বিদ্রোহী কবি নজরুল, জীবনানন্দ দাশ, অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন দত্ত, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসু বা অন্যান্য কবি সাহিত্যিক এবং সাহিত্য বিশ্লেষকগণ একবাক্যে বা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নেন যে রবীন্দ্রনাথ অনতিক্রম্য এবং তাঁদের জীবনে যুক্ত। এটা কি কল্পনা করা সম্ভব যে, রবীন্দ্রনাথের জন্ম হয়নি, কিন্তু এঁরা লেখক রূপে বিদ্যমান ?
আধুনিকতার নামে যৌনতার নিঃসঙ্কোচ অনুপ্রবেশ ঘটানো নয়, রবীন্দ্রনাথ পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্প্পদর্শন তাঁর রচনায় গভীরভাবে ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন ; যেখানে উপস্থিত ছিল ভারতের ধ্রæপদী ও লৌকিক সংস্কৃতি। তাঁর গদ্যভাষাও ছিল কাব্যিক। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ,রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজ মতামত প্রকাশ করেছিলেন। পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ফিরে আসতে হয় বুদ্ধদেব বসুর সেই বহুউদ্ধৃত কথায়, অর্থাৎ বুদ্ধদেব বলতে চাইছেন যে বাংলা ভাষাভাষী লেখকদের লেখার কাজটা রবীন্দ্রনাথকে না পড়েও প্রতিনিয়ত চলছে এবং চলার কারণটা, রবীন্দ্রনাথ লিখে গেছেন বলেই।
জীবনানন্দ দাশের ‘ রবীন্দ্রনাথ ও আধুনিক বাংলা কবিতা, কবিতার কথা ’ গ্রন্থে জীবনানন্দ দাশ যখন বলেন, ‘ইংরেজ কবিরা যেমন যুগে যুগে ঘুরে ফিরে শেক্সপীয়ার-এর কেন্দ্রিকতার থেকে সঞ্চারিত হয়ে বৃত্ত রচনা করে ব্যাপ্ত হয়ে চলেছেন, আমাদের কবিরাও রবীন্দ্রনাথকে পরিক্রমা করে তা-ই করবেন’- তিনি তো আধুনিকদের রবীন্দ্র-বলয়ের কথাই জানান। আর সুধীন দত্ত তো মনে প্রাণেই জানেন, আমাদের আধুনিক ভাষা ও সংস্কৃতি রবীন্দ্রনাথেরই সৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ নিজেও যখন সুধীন দত্তকে ‘ আকাশ প্রদীপ ’ কাব্য উৎসর্গ করেন, তিনি তাতে উদারচিত্তে কনিষ্ঠকে আধুনিক কবিতার অঙ্গন থেকে তাঁর এই বইটি গ্রহণ করার আহŸান জানালেন। কার্যত অনুজপ্রতিম ও কণিষ্ঠ লেখক-কবিদের আন্দোলনকে তিনি স্বীকৃতিই দিয়ে গেলেন।
প্রথমেই বলেছি, রবীন্দ্রনাথের আধুনিকতা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের বহু বিদগ্ধ পÐিত, দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও সাহিত্য বিশ্লেষকগণ তাঁদের বিস্তর মূল্যবান মত প্রকাশ করেছেন, প্রবন্ধ লিখে গেছেন এবং লিখবেনও ; অথচ.বাঙালি নন, কবিও নন, তেমনি একজন চিন্তাবিদ, দার্শনিক-পÐিত, আবু সয়ীদ আইয়ুব (১৯০৬--১৯৮২), রবীন্দ্রনাথের আধুনিকতা নিয়ে সবিশেষ চিন্তা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে সারাজীবন উৎসাহী এই ভারতীয় অবাঙালি চিন্তাবিদ, যাঁর সম্বন্ধে আলোচনার মূল বিষয় নয়, তবুও প্রাবন্ধিক আখতার হোসেন খান এক প্রবন্ধে আবু সয়ীদ সম্বন্ধে লিখেছেন, ‘এই অবাঙালি চিন্তাবিদ গীতাঞ্জলির অনুবাদ পড়েই বাংলা ভাষা শিখতে আগ্রহী হন ; সে শিক্ষা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে হাতে গোনা অল্প সংখ্যক বাদে তাঁর মতো উন্নত ভাষায় প্রাগ্রসর মনোভাব প্রকাশে সক্ষম বাংলা ভাষার লেখক মেলা কষ্ট।’ আবু সয়ীদের নিজের কথা : ‘আমি রবীন্দ্রপ্রেমিক তের বছর থেকেই। উর্দু অনুবাদে রবীন্দ্রনাথ পড়ে এ প্রেম আরো অনেক গভীর হল।’ এই গভীরতা আর রবীন্দ্রদর্শন পিপাসা নিবারণ করতে গিয়ে তিনি এক পর্যায়ে তাঁর প্রাক-গবেষণার কথা বলেন, ‘প্রথমে রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি ইংরেজিতে পড়ে মুগ্ধ হই, তারপরে মনে হয় বাংলা ভাষার ভেতরে না ঢুকতে পারলে কবির মনের যথার্থ পরিচয় মিলবে না।’ তিনি মিশনারী স্কুল ‘ সেন্ট এ্যান্টনি ’ থেকে পাশ করে কোলকাতার ‘ সেন্ট জেভিয়ার্স ’ কলেজে ঢুকে বাঙালি ছেলেদের সঙ্গে মিশে বাংলা চর্চা করতে শেখেন।
আবার আধুনিকতার প্রশ্নে বদলেয়ারের প্রসঙ্গে আসি। সাহিত্যে প্রতীকীবাদ ও আধুনিকতার প্রবর্তক, যাঁর লেখায় রোম্যান্টিকতার পাশে এই ফরাসি মনীষী, বদলেয়ারের আবির্ভাবকেই আধুনিকতার শুরু বলতে চেয়েছেন আবু সয়ীদ। বদলেয়ার তাঁর কাব্যে এমন সব বিষয় ও প্রসঙ্গ নিয়ে আসেন যা এর আগে ছিল অভাবনীয় ; রবীন্দ্রনাথ যাকে ‘ বিশে^র প্রতি উদ্ধত অবিশ^াস ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। একটি সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর রবীন্দ্রনাথের আধুনিকতা সম্পর্কে বলেছেন, ‘তিরিশের আধুনিকতা পছন্দ করেননি রবীন্দ্রনাথ।’ এখানে নিশ্চয়ই তিনি কোন ধরনের আধুনিক কবিদের কথা বলতে চেয়েছেন, তা সহজেই অনুমেয়। আধুনিক কবিদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় অমঙ্গলবোধ বা ‘ সেন্স অব ইভিল ’ রবীন্দ্রনাথে কতটা অনুপস্থিত বা আদৌ অনুপস্থিত কিনা, আইয়ুব জানাচ্ছেন, ‘আধুনিক সাহিত্যের তুলনায় তা মাত্রায় অল্প ও গুণে স্বতন্ত্র।’ অবশ্য একথাও অবিশ^াস করার কিছু নেই যে ‘ আধুনিক সাহিত্যে ’ অমঙ্গলবোধ স্বাভাবিক বা যথাযথ নয়, সযতœচর্চিত, মাত্রাজ্ঞানরহিত। কদর্যের দিকে, দুঃখে ও পাপের দিকে আধুনিকেরা মোহমুক্ত হয়ে তাকাতে পারেননি।
সংসারের পাপ পঙ্কিল, বেদনাদগ্ধ, বিশৃঙ্খল ও বীভৎস চেহারাটা রবীন্দ্রনাথের কাছে ধরা দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তার উপস্থিতি ততটা নয়। প্রসঙ্গক্রমে আইয়ুব বলেন, ‘জীবনের কঠোর ও কদর্য দিকটা রবীন্দ্র-কাব্যে একেবারে অপ্রকাশিত কিংবা, প্রকাশ তাঁর এতই সঙ্কুচিত যে রবীন্দ্রনাথকে কেবল মধুরসের বা ভক্তিবাদের কবি ভাবা যায়, এ ধারণা খুবই বিভ্রান্ত।’ তবে, মার্জিত ও মার্জিত বহিভর্‚ত আধুনিকতায় রবীন্দ্রনাথ মার্জিতের পথেই হেঁটেছেন। তাঁর রচিত চিত্রাঙ্গদা, শ্যামা, চÐালিকার মতো গীতি নৃত্যনাট্যগুলোতে পৌরাণিক উপাদানকে নিয়ে রচিত হলেও এসবের শিল্পরস শাশ^ত, আধুনিক শিল্প ও সাহিত্যরস থেকে কখনো পশ্চাৎপদ বা সেকেলে নয়। সঙ্গীত ও নৃত্যকে তিনি শিক্ষার অপরিহার্য অঙ্গ মনে করতেন। প্রায় দেড়শো বছর ধরে গীত হয়ে আসছে রবীন্দ্রনাথের গান, যে ভুবনটাকে মনে করা হয়, তাঁর শেষ্ঠ কীর্তি। আধুনিক কালে ‘ জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে...’ এবং ‘ আমার সোনার বাংলা...’ যথাক্রমে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত দু’টি তাঁরই অনন্য রচনা।
পরিশেষে কবিগুরুর জন্মদিন ২৫ বৈশাখকে স্মরণ করে তাঁরই রচিত ‘ পঁচিশে বৈশাখ ’ কবিতা থেকে কিছুটা উদ্ধৃতি-
‘একতারা ফেলে দিয়ে
কখনো বা নিতে হল ভেরি।
খর মধ্যাহ্নের তাপে
ছুটতে হল
জয়পরাজয়ের আবর্তনের মধ্যে।
পায়ে বিঁধেছে কাঁটা,
ক্ষত বক্ষে পড়েছে রক্তধারা।
নির্মম কঠোরতা মেরেছে ঢেউ
আমার নৌকার ডাইনে বাঁয়ে,
জীবনের পণ্য চেয়েছে ডুবিয়ে দিতে
নিন্দার তলায় পঙ্কের মধ্যে।
বিদ্বেষে অনুরাগে
ঈর্ষার মৈত্রীতে
সংগীতে পরুষকোলাহলে
আলোড়িত
তপ্ত বাষ্পনিশ^াসের মধ্য দিয়ে
আমার জগৎ গিয়েছে তার কক্ষপথে।।’
কবিগুরুর এ শুভ জন্মদিনকে ঘিরেই আবারো বলতে চাই, কালের ঝর্ণাধারার মতো তাঁর রচনা ও শিল্প-সুর-সম্ভার শতাধিক বছর আগেও যেমন ছিল, এখনো আছে এবং ভবীষ্যতেও থাকবে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির চালিকা শক্তি হিসেবেই। এসবের অনুপম প্রকাশের মধ্যে দিয়েই বারবার পরিচিতি পাবো আমরা তাঁর রচনার চির প্রবহমানআধুনিকতার এবং আধুনিকতায় শাশ^ত রবীন্দ্রনাথকে।
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া ও আখতার হোসেন খান রচিত প্রবন্ধ ‘রবীন্দ্রনাথের আধুনিকতা বিষয়ে আবু সয়ীদ আইয়ুব’।
বৈশাখ ?
সালমা সেতারা
বৈশাখ ?
এখানে ঋতুদের সময় গুনে গুনে
মাটি অজস্র ফুল ফোটালেও
সহিষ্ণু শ্রান্ত রূপ মুগ্ধ কবি
লিখতে চায় না আগত যাত্রার পথে
অভিযাত্রার কবিতা
ধারহীন নির্ভার কলম হারিয়েছে
পর্যটনের দক্ষতা
লজ্জায় আরক্ত তক্ষক সময়ের অন্ধকারে
বৈশাখ ?
চিত্র যেমন দ্রোহমুখর তৃষ্ণায় শুষে
নির্জীব করে সবুজের সমারোহ
প্রযুক্তির অধুনা মালি রসায়ন থেকে পাঁচক ঢেলে
দ্রবিভূত করে মুছে দেয় দ্বিগুণ ফলানোর কৌশলে
মৌলিক সৌরভ
তেমনি তো নতুনের পুনপরিণতি
বৈশাখ ?
বুভুক্ষু সময়ের কাছে ফুল না মাটি
কোনটি প্রিয় উদর পূর্তির জন্য ?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।