পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৬ মাস পরপর জরিপ পর্যালোচনা করা হচ্ছে
তারেক সালমান : সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচনের এখনও প্রায় দেড় বছর বাকী থাকলেও ইতোমধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ সকল দলের অংশ গ্রহণে প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক নির্বাচন আশা করছে দলটি। যে কারণে সংগঠনিকভাবে শাক্তিশালী ও দলদলি-কোন্দালমুক্ত দল নিয়েই নির্বাচনী মাঠের লড়াইয়ে নামতে চায় আওয়ামী লীগ। দলটির নেতাদের বক্তব্য, সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছরের শেষ দিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে দেশে একাদশ জাতীয় সংষদ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যেই ক্ষমতাসীনরা জাতীয় সংসদের তিনশত আসনে নিজেদের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে।
দলের দায়িত্বশীল নেতাদের মতে, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও বাধাহীন ভাবে অনুষ্ঠিত করার প্রক্রিয়া চলছে। আর এ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দল ও নেতৃত্বের প্রতি একান্ত অনুগত, বিতর্কহীন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। কোনো বিতর্কিত, সন্ত্রাসী ইমেজের, জনগণ কাছে অগ্রহণযোগ্য, দখলবাজীর অভিযোগে অভিযুক্তদের কোনোভাবেই মনোনয়ন দেয়া হবে না। আর এমন ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজে বের করতে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের নেতৃত্বের বাইরেও বিভিন্ন বেসরকারী এনজিও, দল সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিচ্ছে। এরপর সব জরিপের ফলাফল মিলিয়ে দল ও সরকারের হাইকমান্ড চুল-চেরা পর্যালোচনা করছেন। আর জরিপও প্রতি ৬ মাস পরপর রিভিউ করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরকারে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে বলেন, বিগত নির্বাচনের আগে হয়তো জনপ্রিয় প্রার্থী ছিলেন কিন্তু বর্তমানে খারাপ আচরণের কারণে বর্তমানে তাদের পক্ষে জন সমর্থন তার পক্ষে নেই, এমন প্রার্থীকে কোনোভাবেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না। তিনি বলেন, নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে আমাদের দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েকটি জরিপ পরিচালনা করছেন। সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ছাড়াও বিভিন্ন বেসসরকারি এনজিও সংস্থা, পেশাজীবী অনেককে দিয়েই এ জরিপ করা হচ্ছে। আবার ৬ মাস পর পর এগুলো নতুন করে করা হচ্ছে। এছাড়া দলের সভায়ও নেতৃবৃন্দ আসছেন তাদেরও একটা রিপোর্ট আছে। সেগুলোও তারা নেত্রীর কাছে দেবেন। সেখানেও আমরা একটা চিত্র পাবো। যা বিবেচনা করেই আমরা মনোনয়ন দেবো। এবার কেউ একেবারেই নিশ্চিত নয় যে, কে মনোনয়ন পাবেন।
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরপর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে ক্ষমতার ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটির নীতি-নির্ধারণী মহল থেকে তৃণমূলসহ সহযোগী সংগঠনগুলোকে নির্বাচনী প্রস্তুতির জন্য ইতোমধ্যেই দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। নির্বাচনকে সামনে রেখে জোরেশোরেই চলছে নির্বাচনী প্রস্তুতি। নির্বাচনকে সামনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন জেলা সফর শুরু করেছেন। এছাড়াও, তৃণমূলের দলীয় কোন্দল মেটাতে রকেট গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকগণ।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখেই তৃণমূলে বিদ্ধমান সমস্যা নিরসনে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। এজন্য জেলায় জেলায় প্রতিনিধি সম্মেলন করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলার নেতা ও সংসদ সদস্যদের কেন্দ্রে ডেকে আনা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব জেলার নেতা ও সংসদ সদস্যদের ডাকা হবে। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে। যেসব জায়গায় একাধিক প্রার্থীর সম্ভাব্য প্রতিযোগীতা আছে সেসব নেতাদেরও ডেকে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দলটি।
দলের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জানান, নেতাদের কেন্দ্রে ডাকার অর্থ এই না যে উপস্থিতরাই মনোনয়ন পাবেন। এমন বেশ কিছু সংসদ সদস্য আছেন যাদেরকে আগামী নির্বাচনে দলের টিকেট পেতে হলে নিজেদের আরো উন্নতি করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের নিজস্ব লোকজনদেরও কিছু সমস্যা আছে। সেসব সমস্যা স্থানীয়ভাবে মিটিয়ে ফেলতে হবে। যাতে প্রার্থী জনমতে নিজেদের গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে। তাহলে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য কাউকে আমরা মনোনয়ন দেবো না।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশ্নে আমাদের পার্টিতে কোনো বিভাজন নেই। যেসব জায়গায় সমস্যা আছে তা চিহ্নিত করে আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছি। এরপর দলের সাধারণ সম্পাদক আছেন। সবার উপরে আছেন আমাদের নেত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে যা খুশি তাই করা যায় না। এখানে কেউ গডফাদারসুলভ আচরণ করলে পাড় যেমন পাবে না, তেমনি এসব দোষে দুষ্টুরা আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়নও পাবেন না।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের সব সময় থাকে। নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম এক সঙ্গেই চলছে। আমরা দলকে শাক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এটা শুধু আমার এলাকায় নয়, সারা দেশের সংগঠনগুলো শক্তিশালী করার জন্য কাজ চলছে।
নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন যথা সময়েই হবে। অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতোই সংবিধান অনুযায়ী অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।
আগামী নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে দলের এ নীতিনির্ধারক বলেন, নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয়। গণতন্ত্রের জন্য যে কোনো সময় নির্বাচন হতে পারে। আমাদের নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আওয়ামী লীগের সম্মেলনে স্পষ্টভাবে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলে দিয়েছেন। আমরা নির্বাচন সামনে রেখে সাংগঠনিক প্রস্তুতি, প্রার্থী নির্ধারণ ও উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছি।
দলের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, আমাদের তো ৩০০ আসনে এমপি আছে। এখন আমাদের নেত্রী মনিটরিং করছেন আগামী নির্বাচনে এখান থেকে কাউকে বাদ দেয়া হবে কী না। কাজের মূল্যায়ণে কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। সেটা দেখভাল করবেন নেত্রী নিজেই।
বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসবে সেটা ধরেই আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি উল্লেখ করে আহমদ হোসেন বলেন, আমরা এখন শুধু অপেক্ষায় আছি কখন নির্বাচনী সাইরেণ বাজবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।