Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধাবস্থা, চীনের উদ্বেগ

| প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : কোরিয়া উপদ্বীপে যুদ্ধাবস্থার মধ্যেই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে দক্ষিণ কোরিয়ায় পরমাণু অস্ত্রবাহী মার্কিন সাবমেরিনের উপস্থিতি। পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী ইউএসএস মিশিগান গত মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পৌঁছায়। সাবমেরিনটির কার্ল ভিনসন রণতরীর সঙ্গে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়া পরস্পর উস্কানিমূলক কর্মকান্ড এবং মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে কোরিয়া উপদ্বীপে পাঠানোর ঘোষণার পর সেখানে এখন কার্যত যুদ্ধাবস্থা জারি রয়েছে। পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ইউএসএস মিশিগানে ১৫৪টি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র, ৬০ জন বিশেষ প্রশিক্ষিত সেনা এবং কয়েকটি মিনি-সাবমেরিন রয়েছে বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদপত্র চসুন ইলবো জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ায় পালিত হয় দেশটির সেনাবাহিনীর ৮৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এর আগে এমন অনুষ্ঠানের সময়ে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত মত প্রকাশের জন্য এক সংবাদ সম্মেলনে পুরো মার্কিন সিনেটকে হোয়াইট হাউসে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহর ইউএসএস কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপ কোরিয়ার নৌসীমার দিকে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন চীন সব পক্ষকে সংযত থাকার আহŸান জানিয়েছে। উল্লেখ্য, নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে উত্তর কোরিয়ার নতুন করে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার আশঙ্কার মধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে জাপানের সঙ্গে মহড়া দিতে কোরীয় উপদ্বীপের নৌসীমায় এ স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জাপানি নৌবহরের দু’টি যুদ্ধজাহাজ মার্কিন এ স্ট্রাইক গ্রুপের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। কোরীয় উপদ্বীপে উত্তপ্ত হতে থাকা এ পরিস্থিতি নিয়েই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং দুই কোরিয়া-সহ সব পক্ষকে সংযত থাকতে বললেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। গত সোমবার টেলিফোনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়া নিয়ে আলাপ করেন জিনপিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে এ ফোনালাপে শি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনও অভিযানের ঘোর বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছেন। টেলিফোনে শি বলেন, চীনের আশা, বিবদমান সব পক্ষ ধৈর্য ধারণ করবে এবং কোরীয় উপদ্বীপের বর্তমান উত্তেজক পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে মোড় নেওয়ার মত কোনও কাজ করবে না। সমস্যা সমাধান করে ওই অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনতে চীন সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা এবং নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন এই দেশটি যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ায় তাদের মিত্র দেশগুলো বিশেষ করে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা চালানোর হুমকিও দিয়েছে। উত্তর কোরিয়াকে চাপে রাখতেই কোরীয় নৌসীমার খুব কাছে জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সোমবার দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, তাদের নৌবাহিনীও এ মহড়ায় অংশ নেয়ার কথা ভাবছে। মহড়ার এ তোড়জোড়ের প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাসীন ওয়ার্কাস পার্টির মুখপত্র রডং সিনমুন পত্রিকা উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর ‘এক আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের রণতরী ডুবিয়ে দেওয়া’ হুমকি সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে। গত সোমবার একই পত্রিকার খবরে বলা হয়, এই আগ্রাসন তাদের গুরুতর বিপজ্জনক কর্মকান্ড, যারা হানা দিয়ে পরমাণু যুদ্ধ বাধিয়ে দেওয়ার তালে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের এমন পাগলামি করা উচিৎ হবে না। বরং বোকার মত সামরিক উসকানিমূলক কাজ করার যে ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে তাদের সেটা নিয়ে চিন্তা করা উচিৎ। যুক্তরাষ্ট্র ও কোরীয় উপদ্বীপে তাদের মিত্র দেশগুলোর ধারণা, উত্তর কোরিয়া আরও একটি পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার শক্তিশালী মিত্রদের অন্যতম চীনও তাদের পরমাণু অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার নিন্দা জানিয়েছে। চীন বারবারই কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে আসছে। বিবিসি, রয়টার্স।



 

Show all comments
  • শফিউল হক ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:৪৪ এএম says : 0
    তাহলে কি যুদ্ধ শুরু হয়ে যাচ্ছে ?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোরীয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ