প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
ডিলান হাসান: চলচ্চিত্রের কেউ মৃত্যুবরণ করলে শাকিব দেখতে যান না, এমনকি জানাজায়ও অংশগ্রহণ করেন না। তিনি নাকি সহ্য করতে পারেন না। আবার কলকাতায় তার স্ত্রী অপু বিশ্বাস যখন হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য ভর্তি, তখনও তিনি পাশে ছিলেন না। এমনকি সন্তান জন্মগ্রহণের দুই মাস অতিক্রম করার পরও তিনি দেখতে যাননি। হাসপাতালে তার স্ত্রী প্রসব বেদনায় যখন কাতর, তখন তিনি দিব্যি শূটিং করছিলেন। হয়তো এ দৃশ্যও তিনি সহ্য করতে পারবেন না বলে যাননি। তার হৃদয় এতটাই নাজুক যে, এসব সহ্য করার মতো শক্তি নেই। অথচ বিশ্বের এমন কোনো লোক নেই, সন্তান জন্মদানের সময় স্ত্রীর পাশে থাকে না। অতি ব্যস্ত মানুষটিও তার ব্যস্ততা ফেলে সন্তান জন্মগ্রহণের সময়টিতে উপস্থিত থাকেন। সন্তানের মুখ দেখে আনন্দে আত্মহারা হন। আমরা দেখেছি, বিশ্বের নামী-দামী তারকা, খেলোয়াড়রাও শূটিং ও খেলা ফেলে স্ত্রীর কাছে ছুটে গেছেন। সন্তান জন্মগ্রহণের সময় উপস্থিত থেকেছেন। আমাদের দেশে তারকাদের মধ্যে ব্যতিক্রম দেখা গেল শাকিবকে। সন্তান জন্মগ্রহণ করার সময় উপস্থিত তো ছিলেনই না, উপরন্তু সন্তানের মুখ দেখেছেন দুই মাস পর। তিনি এমনই পিতা! সে যাই হোক, তিনি যে সন্তানের বাবা হয়েছেন এবং বিয়ে করেছেন, তা জনসম্মুখে যদি অপু বিশ্বাস প্রকাশ না করতেন, তবে হয়তো আজও তা অগোচরেই থেকে যেত। প্রশ্ন হচ্ছে, অপু কেন সন্তান নিয়ে হাজির হলেন? এর উত্তর বিভিন্নভাবে হতে পারে। হয়তো শাকিব পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন। প্রকাশ হওয়ার পর তার এক মন্তব্য থেকেই তা প্রতীয়মান হয়। তিনি বলেছিলেন, আমার সন্তানকে এভাবে দেখতে বা দেখাতে চাননি। প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে আর কবে এবং কীভাবে দেখতে বা দেখাতে চেয়েছিলেন? যে বিয়ের খবর দশ বছর গোপন রেখেছিলেন, তা আর কতকাল গেলে তিনি প্রকাশ করতেন? নাকি বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাই ছিলেন? বিষয়টি অপু বিশ্বাস বুঝতে পেরেই হয়তো নিরুপায় হয়ে সন্তান নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। অপুর এই হাজির হওয়া শাকিবের জন্য বজ্রাঘাত হওয়াই স্বাভাবিক। তার রাগত কথাবার্তায় তার প্রমাণ মেলে। রেগেমেগে বলে ফেলেন অপুকে নয় ছেলেকে মেনে নেবেন। অপুও বলেছিলেন, তাকে মেনে না নিলেও চলবে, ছেলের স্বীকৃতি পেলেই খুশি। একজন মা কখন এ কথা বলেন? যখন সে নিরুপায় এবং সন্তানের জন্য নিজেকেও বিসর্জন দিতে পারেন তখন। অপু মায়ের চিরায়ত এ বৈশিষ্ট্যের প্রমাণ দিয়েই কাজটি করেছেন। শেষ পর্যন্ত অনেক পানি ঘোলা করে শাকিব দুজনকেই মেনে নিয়েছেন। বলেছেন, গত পহেলা বৈশাখ অপুকে ঘরে তুলে নেবেন। তার আগের দিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। বলতে হয়, হায় সেলুকাস! হায় শাকিব! কত রঙ্গই না করতে পারো! যাই হোক, পহেলা বৈশাখের বিকেলে একটি অভিজাত হোটেলে স্ত্রী-পুত্রসহ ফটোসেশন করা ছাড়া তিনি আর কিছু করলেন না। অপুকেও ঘরে তুলে নিলেন না। সংসারও শুরু করলেন না। বলেছেন, অপু অপুর বাসায় থাকবে। সে তার বাসায়। পরদিনই তিনি পাবনায় শূটিংয়ে চলে যান। এ থেকে কি প্রতীয়মান হয় না, বিয়ে এবং সংসার করার পুরো বিষয়টি নিয়ে শাকিব একটি নাটুকে প্রেক্ষাপট রচনা করেছেন? বিয়ের কথা স্বীকার এবং মেনেই যদি নেবেন, তবে প্রকাশের পরপরই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার শুরু করাটাই ছিল স্বাভাবিক। নিদেন পক্ষে সময় নিয়ে ঘর-সংসার করার সুনির্দিষ্ট দিন-ক্ষণ ঘোষণা করতে পারতেন। শাকিব কেন তা করলেন না বা করছেন না? কেন স্ত্রী-সন্তানকে আলাদা রাখছেন? এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, অপুর সাথে বিবাহিত জীবনের দশ বছরে শাকিবের হয়তো দূরত্ব বেড়েছে। হয়তো তারা বোঝাপড়ার মাধ্যমে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অপু হয়তো উপলব্ধি করেছেন, শাকিব তার সন্তানকে এড়িয়ে যেতে চাইছেন, তাই বাধ্য হয়ে নিজের স্বীকৃতি বিসর্জন দিয়ে সন্তানের স্বীকৃতি আদায়ের পন্থা অবলম্বন করেছেন। অপু হয়তো এই স্বীকৃতিই বড় প্রাপ্তি হিসেবে ধরে নিয়েছেন। তাই ঘটনা পরবর্তী সময়ে অপু শাকিবের কথা মতোই আচরণ ও বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। দর্শক যদি আর কিছুকাল পর শোনেন তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। চলচ্চিত্রে বিয়ে এবং ছাড়াছাড়ি হওয়া এমন কোনো ব্যাপার নয়। শাকিব ও অপুর মধ্যে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তবে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না এবং এ ছাড়াছাড়ির মধ্যে যদি বুবলি নামক নায়িকাটি কারণ হয়ে উঠেন, তবে তাতেও বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। আর যাই হোক, ‘ফ্যামিলি টাইম’কে তো উপেক্ষা করা যায় না!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।