Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গরু জবাই নিষেধাজ্ঞায় হুমকিতে পড়েছে ভারতের চামড়া শিল্প

ক্রিকেটের বল, ব্যাগ, বেল্টসহ চামড়ার তৈরি জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরই গরু জবাইয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে যোগী আদিত্যনাথ। ভারতের ওই রাজ্যটিতে একের পর এক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কসাইখানা। তাকে অনুসরণ করতে শুরু করেছে উত্তরখÐ, বিহার এবং গুজরাটসহ আরো কিছু রাজ্য। এতে শুধু ভারতের গোশত ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না, চামড়াজাত বিভিন্ন পণ্যের দামও বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপে মাছের দামও বাড়তে শুরু করেছে দেশটিতে। জুতা থেকে শুরু করে ক্রিকেটের বল, ব্যাগ, বেল্টসহ চামড়ার তৈরি জিনিসপত্রের দাম এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন ভারতের বাজার বিশেষজ্ঞরা। আর এর প্রভাব শুধু সংশ্লিষ্ট রাজ্যেই নয়, সমগ্র ভারতেই পড়বে। গাড়িতে ব্যবহৃত বিভিন্ন চামড়ার বস্তু থেকে নারীদের পার্স- সবকিছুই তৈরি হয় গরুর চামড়া থেকে। কিন্তু গো-হত্যা ও গো-গোশত বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় এবার সমস্যায় পড়েছে চামড়াশিল্পের কারখানাগুলি। ক্রিকেট বল, ভলিবল, সাবান তৈরির কারখানার কর্মচারীরাও কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন। সারা ভারতে ১৬৮টি শিল্প কারখানার সঙ্গে যুক্ত গরুর গোশতের ব্যবসা। কিন্তু প্রশাসনের কড়া নিয়মের বেড়াজালে পড়ে তালা লেগেছে গোশতের দোকানে। ফলে সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়তে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট বাকি শিল্পগুলোও। এছাড়া পুরো ভারতে যে পরিমাণ চামড়াজাত দ্রব্য পাওয়া যায়, তার অর্ধেকই তৈরি হয় উত্তরপ্রদেশে। মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলোতেও মার খাচ্ছে চামড়া কারখানাগুলো। ২০১৫ সালে মহারাষ্ট্রে কোলাপুরি জুতার কারখানায় কর্মী ছিল কমপক্ষে ৬০০। সেখানেও কসাইখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০০ জনে। আরো কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে কারখানাগুলো।
২০১৪ সালেও যে শিল্প থেকে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা লাভ আসতো, সেখান থেকে এখন ৮০০ কোটি টাকাও আসছে না। চামড়া কারখানার এক মালিক জানাচ্ছেন, তার ৩৪ জন কর্মী প্রতি সপ্তাহে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা ও খাওয়া-দাওয়া পেতেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের বেতন দেয়াই সম্ভব হচ্ছে না। ভারতের কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্ট’র তথ্য মতে, বছরে ৩ হাজার কোটি ফুট চামড়া উৎপাদন করে দেশটি। বিশ্বের মোট গরু এবং মহিষের ২১ শতাংশ ভারতে থাকার কারণে দেশটি চামড়াজাত পণ্যের কাঁচামাল সরবরাহে উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রাখতো।
কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্ট’র আহবায়ক তপন নন্দী বলেন, আমাদের চামড়াজাত কাঁচামাল রফতানি কমে গেছে। ভারতের ২ হাজার ট্যানারি সরবরাহ সঙ্কটে ভুগছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভারতে চামড়ার ব্যবসা থেকে আয় ছিল ৫ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার। অথচ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৪৯০ কোটি ডলার। এদিকে চামড়াজাত পণ্যের আমদানি ভারতে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বাড়ছে। হিন্দুস্তান টাইমস, ইকোনমিক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ