বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ইনকিলাব ডেস্ক : কালবৈশাখী ও টর্নেডোতে ফরিদপুর, পাবনা ও রাঙ্গুনিয়ায় সহস্রাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, ফরিদপুরে সোমবার রাতে হঠাৎ করে ফরিদপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকার ৫শতাধিক ঘর-বাড়ি, গাছ পালা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ফরিদপুর জেলা প্রশাসনে এনডিসি পারভেজ মল্লিক জানান, হঠাৎ করে ফরিদপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা নয় উপজেলার ৫শতাধিক কাচা-আধা-কাচা পাকা বসত বাড়ি ও গাছ পালা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জি এম আবদুত রউফ জানিয়েছেন, ঝড়ের সাথে শিলা বৃষ্টির ফলে পেয়াজ বীজ ও ভুট্টা ক্ষেতের বেশ ক্ষতি হয়েছে। তবে পাট চাষীদের জন্য এই বৃষ্টি সহায়ক হয়েছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তুহিন মন্ডল জানান, হঠাৎ এই ঝরে আমার চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের শতাধিক বাড়ি-ঘর অধিকাংশই ভেঙে গেছে। তিনি বলে, আবজাল মন্ডলের বাজারে ১২টি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানে দোকার উড়ায় নিয়ে গেছে।
পাবনা জেলা সংবাদদাতা ও সাথিয়া সংবাদদাতা জানান, পাবনায় টর্নেডোর প্রবল আঘাতে বহুঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। গত সোমবার বিকাল এই শক্তিশালী টর্নেডো আঘাত হানে। সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুজানগর ও আমিনপুর থানা এলাকা মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, সোমবার সন্ধ্যার প্রাক্কালে সোয়া ৫টার দিকে আকস্মিকভাবে টর্নেডো আঘাত হানে। এক টর্নেডোর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। জেলার সুজানগর উপজেলার চিনাখড়া, চর গোন্দিপুর, দুপপাড়া ও হাসেমপুর গ্রামের বেশিরভাগ ঘরবাড়ি স্মরণকালের ভয়াবহ ও শক্তিশালী এই টর্নেডোর আঘাতে বিভিন্ন গ্রামের ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ঘর ও গাছ চাপা পড়ে আহত হয় প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে সবকিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অবস্থান করছে। বেশি দূর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে পাবনা-২ আসনের এমপি খন্দকার আজিজুল হক আরজু, পাবনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক বেগম মাকসুদা সিদ্দিকা, সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের রোকন, সুজানগর পৌর মেয়র আব্দুল ওহাব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
সাঁথিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, নির্বাহী অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, ক্ষেতুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুনছুর আলম পিনচু, গৌরীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন।
রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রাঙ্গুনিয়ায় বজ্রপাত ও ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার পৌরসভা সহ ১৫টি ইউনিয়নে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে শতশত বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এসময় হাজার হাজার গাছ ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়াতে যান চলাচল ব্যাহত হয়। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নাজুক সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায় এবং একাধিক স্থানে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে।
১১নং চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়নের সিএলসি গ্রামে অমর সিং চাকমা, মেসাও মুরং বাড়ির সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়। মিশন এলাকায় একাধিক স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়েছে। কোদালা বিটের সামাজিক বনায়নের শতশত গাছ ভেঙে গেছে। সরফভাটা বরখোলা পাহাড়ি পল্লীর গ্রামপ্রধান অনন্ত মারমা জানান, পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বাড়িঘরের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ঘূর্ণিঝড়ে চন্দ্রঘোনা থানা ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। বাতাসের গতি বেগ বেশি থাকায় থানার কোয়ার্টার ও অফিস কক্ষ লন্ডভন্ড হয়ে বিধ্বস্ত পড়ে। পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ নজরুল জানান, প্রচন্ড বাতাসের বেগে পুরো থানা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছে।
হোছনাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর্জা মোহাম্মদ সেখান্দর হোসেনের কয়েক একর আম বাগানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরফভাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শেখ ফরিদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে সরফভাটার ভূসিরখীল, পূর্ব সরফভাটা, মৌলানা গ্রাম, পাইট্টলিকুল গ্রামে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত এবং প্রচুর পরিমাণে গাছাপালা ভেঙে পড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়।
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের সুফিপাড়া এলাকায় বড় বড় গাছ ভেঙ্গে পড়ায় যান চলাচল আড়াইঘন্টা বন্ধ হয়ে যায়। চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিছ আজগরের নেতৃত্বে আড়াইঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে সড়ক থেকে গাছপালা সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। ইদ্রিছ আজগর চেয়ারম্যান জানান, ঘূর্ণিঝড়ে জেলেপাড়া, মিনারপাড়া সহ নদীরপাড়ের একাধিক বাড়িঘর কমবেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।