Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বব্যাপী বিপুলসংখ্যক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিল

| প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপীই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ পরিকল্পনা নাটকীয়ভাবে বাতিল হয়েছে। নতুন এক জরিপে দেখা গেছে, এ ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্পের মধ্যে ৪৮ শতাংশ পরিকল্পনাই বাতিল করা হয়েছে এবং নির্মাণ শুরুর পর পরিত্যক্ত হয়েছে ৬২ শতাংশ। সবুজ পৃথিবীর পক্ষে প্রচারণার কয়েকটি গ্রুপ এই জরিপ করেছে। তাদের দাবি, চীন এবং ভারতের নীতি এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণেই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের এতোগুলো পরিকল্পনা বাতিল হয়েছে। যদিও অনেক দেশ এখনো মনে করে, বিশেষ করে এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আরো অন্তত এক দশক কয়লার ব্যবহার অব্যাহত রাখা অপরিহার্য। এর মধ্যে চীন ও ভারত অন্যতম।
২০০৬ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ৮৫ শতাংশই ছিল দেশ দুটির। তবে বুম অ্যান্ড বাস্ট ২০১৭ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দুই দেশ মাত্র ১২ মাসেই তাদের পরিকল্পনায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। প্রতিবেদনটি প্রস্তুতের পেছনে কাজ করেছে গ্রিনপিস, সিয়েরা ক্লাব এবং কোলসোয়ার্ম। তাদের মতে, কয়লা প্রকল্প বাতিলে সবচে বড় ভূমিকা রেখেছে চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিধিনিষেধ। তারা কমপক্ষে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৬০০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য বিভিন্ন প্রাদেশিক সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে।
অপরদিকে ব্যাংকগুলোর তহবিল দিতে অনাগ্রহের কারণে ভারতও এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি সৃষ্টি হয়েছে। তাদের ১৩টি লোকেশনে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার কথা থাকলেও আর অগ্রসর হয়নি। এছাড়া গত দুই বছরে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। প্রায় ১২০টি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। এর আগে অন্য কয়েকটি গ্রুপের পরিচালিত গবেষণায় বলা হয়েছিল, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সম্ভাব্য বিনিয়োগের বিপুল অর্থ আটকা পড়ে থাকবে যদি সরকারগুলো কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণের কাজ চালিয়ে যায়। আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (আইইএ) বলেছিল, এতে করে শত শত বিলিয়ন ডলার ঝুঁকিতে পড়বে। আর এমন সময় নতুন গবেষণায় জানা গেল, বিশ্বব্যাপী বিপুল সংখ্যক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাতিল হয়ে গেছে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট বায়ু দূষণের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নতুন নতুন নীতি এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি ও ব্যয় হ্রাস, সঙ্গে ব্যাটারি প্রযুক্তির উন্নতি কর্তৃপক্ষকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অনুৎসাহিত করছে। আর কয়লার ব্যবহার এইভাবে হ্রাস পেলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হার শিল্পযুগের পর দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অবশ্য গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, কয়লার ব্যবহার যথেষ্ট পরিমান কমাতে হলে ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, জাপান এবং অন্যান্য দেশে নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা কমাতে হবে। বিবিসি, ওয়েবসাইট।



 

Show all comments
  • Md Masud ২৪ মার্চ, ২০১৭, ১:০৪ পিএম says : 0
    অন্যেরা যেখানে বিলুপ্তি করছে আর আমরা সেখানে শুরু করতে যাচ্ছি! আমাদের এই উল্টো পথচলার কারনটা অতিব দু:খের।
    Total Reply(0) Reply
  • Murshed Pathan ২৪ মার্চ, ২০১৭, ১:০৫ পিএম says : 0
    তাদের সম্ভবত আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল বার্নিং সিস্টেম কেনার অর্থ নেই, যেটা বাংলাদেশের আছে এবং ইন্ডিয়া সরকার সম্ভবত এই প্রোযুক্তি বাংলাদেশ ব্যাতিত অন্যকোনো দেশের কাছেই বিক্রী কোরবে না
    Total Reply(0) Reply
  • Jakir Hossain ২৪ মার্চ, ২০১৭, ১:০৬ পিএম says : 0
    আমাদের সরকারের ফলাফল উল্টো।আমাদের সরকার বলছে কয়লা পরিবেশেরর কোন ক্ষতি করে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎকেন্দ্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ