নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এ যেনো অন্য সাকিব। দ্বিতীয় দিনের শেষ বিকেলে ১৭ মিনিটের ব্যাটিংয়ে হয়েছেন প্রশ্নবিদ্ধ। সান্দাকানের হ্যাটট্রিক ডেলিভারিটি সুইপ শটে বাউন্ডারিতে শুরু, ১১ রানের মাথায় লাইফ পেয়েও সতর্ক নন। টেস্ট ব্যাকরণ ভুলে দ্বিতীয় দিনটা শেষ করেছেন ৮ বলে ১৮ রানে ! সেই সাকিবকেই দেখা গেল গতকাল বড় বেশি সতর্ক,আর দায়িত্ববোধ। দেশের হয়ে শততম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারেন বার্ডসলি ও চার্লস কেলওয়ে, নিউজিল্যান্ডের বেভান কংডন ও ব্রায়ান হেস্টিংস, দক্ষিণ আফ্রিকার বিলি ওয়েড, পাকিস্তানের মজিদ খান এবং জিম্বাবুয়ের গ্রায়েম ক্রেমারের পর ৮ম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিব করেছেন সেঞ্চুরি উদযাপন। তার সেঞ্চুরিতে বিদেশের মাটিতে প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ১২৯ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। তার এই সেঞ্চুরিতে এখন শততম টেস্টে দারুন কিছু’র স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে দিনের হিরো সাকিব সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়ার প্রশ্নের যে সব উত্তর দিয়েছেন,তার চৌম্বক অংশ উপস্থাপন করছেন দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা শামীম চৌধুরী।
ষ সকালে মুশফিকুরের সঙ্গে যখন ব্যটিং করতে এলেন তখন মাথায় কি চিন্তা ছিল ?
সাকিব : পরিকল্পনা ছিল একটাই, যতোক্ষন সম্ভব ব্যাট করা। এই সেঞ্চুরিটি আমার জন্য বিশেষ কিছু। এই উইকেটে রান নেয়া সহজ ছিল না। তাই উইকেটে থাকাটাকেই বরং ভালো মনে করেছি।
ষ অবিশ্বাস্য একটা ইনিংস উপহার দিলেন? কালকের (গত পরশু) ব্যাটিং আর আজকের (গতকাল) ব্যাটিংয়ের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? রসায়নটা বলবেন ?
সাকিব : রসায়ন আসলে ওই রকম কিছু নয়। কাল (গত পরশু) যেহেতু নট আউট ছিলাম, তাই চিন্তা করার সময় পেয়েছি। অন্য কিছু মনস্থির করেছি। কিভাবে অ্যাপ্রোচ করলে ভালো হয়, ওই সময়ে তা নিয়ে ভেবেছি। বিশেষ করে চান্দিমাল প্রথম ইনিংসে যেভাবে ব্যাটিং করেছে, ওখান থেকে অনেক কিছুই শেখার ছিল। এই উইকেটে কিভাবে ব্যাটিং করতে হবে, তা দেখিয়ে দিয়েছে চান্দিমাল। তা অনেত হেল্প করেছে।
ষ দুটি বড় জুটিতে অবদান রেখেছেন। একটি মুশফিকুরের সঙ্গে ৯২ রানের, অন্যটি. মোসাদ্দেকের সঙ্গে ১৩১ রানের পার্টনারশিপ। টেস্ট অভিষেকে মোসাদ্দেকের ব্যাটিং নিয়ে আপনার মূল্যায়ন?
সাকিব : আমি ওটা বিচার করার কেউ নই। তবে আমি মনে করি বাংলাদেশের ক্রিকেটে ওর অনেক বড় ভবিষ্যত আছে। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারই বলেন কিংবা আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার অনেক ভালো ভাবে শুরু হয়েছে। ও যত বেশি ধারাবাহিক থাকবে, দেশের জন্য, নিজের জন্য ভালো হবে। ওর সঙ্গে যেহেতু ঘরোয়া ক্রিকেটেও একসঙ্গে খেলার সুযোগ হয়েছে, তাই এমনটা নয় যে ওর সঙ্গে প্রথমবার ব্যাটিং করলাম। আমরা যখনই ব্যাটিং করি, খুবই স্বাচ্ছন্দে থাকি। রান নিতে গেলেও কল করতে হয় না। মোসাদ্দেকের সঙ্গে প্রিমিয়ার ডিভিশনে ৫-৬টি ম্যাচ খেলেছি। বিপিএলে কয়েকটা ম্যাচ খেলেছি। এই কয়টা ম্যাচেই ওর সঙ্গে বোঝাপড়াটা ভালোই হয়েছে। ওর অ্যপ্রোচটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতোই উপযোগী। আশা করবো ও যেন এই অ্যপ্রোচটা ধরে রাখতে পারে।
ষ দেশের পক্ষে সেঞ্চুরি টেস্টে সেঞ্চুরি ? চাপের মুখে এই সেঞ্চুরিকে নিজের কাছে কতটা বিশেষ মনে হচ্ছে ?
সাকিব : অবশ্যই বিশেষ। যে কোনো পরিস্থিতিতেই যদি একশো করা যায়, ব্যক্তিগত অর্জনেরে দিক থেকে তা বিশেষ কিছু। এখানে এই সেঞ্চুরি আরও একটু বড়। কেননা আমার এই রান দলের জন্য প্রয়োজন ছিল। ভাগ্যক্রমে আমি করতে পেরেছি। এই কারণে আমি খুশি।
* এই সেঞ্চুরিকে কত নম্বরে রাখবেন?
সাকিব : আপাতত তো পাঁচ নম্বরেই আছে। প্রতিটি সেঞ্চুরিই আমার কাছে স্পেশাল। সত্যি কথা বলতে কি, দলের জন্য অবদান রাখতে পারা আরও স্পেশাল। এটা শততম হোক আর প্রথম টেস্ট হোক কিংবা আমার জীবনের শেষ টেস্ট হোক,অথবা ৫০তম টেস্ট হোক, আমি যদি দলের জন্য অবদান রাখতে পারি, সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটা করতে পারায় আমি খুশি। বাংলাদেশের জন্য স্পেশাল যে এটা শততম টেস্ট। আমার কাছে এটা আরেকটা টেস্ট ম্যাচ। দেশের হয়ে আরেকটা ম্যাচে খেলার সুযোগ, অবদান রাখার সুযোগ। আমি সব সময় বিষয়টাকে এভাবেই নিই। অবশ্যই বাংলাদেশের ক্রিকেট যে এগিয়ে যাচ্ছে তার একটা প্রমাণ যে, আমরা একশ টেস্ট খেলে ফেললাম। হয়তো ফল সেভাবে করতে পারিনি। তবে খুব যে খারাপও করসি তাও বলা যাবে না।
* তৃতীয় দিন শেষে আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে?
সাকিব : আমরা খুব ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আছি। আমাদের কালকের (আজ) প্রথম সেশনটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। কারণ ,দু’দলই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় আছে। কাল (আজ) প্রথম সেশনে ওরা যদি ভালো ব্যাটিং করে তাহলে আমাদের হাত থেকে ম্যাচটা বের হয়ে যেতে পারে। আর আমরা যদি ভালো বোলিং করি, কিছু উেইকেট নিতে পারি তাহলে ম্যাচটি আমাদের পক্ষে আসতে পারে। যদি তিন-চারটা উইকেট নিতে পারি আমরা চালকের আসতে থাকব। যদি ওরা রান করে ফেলে তাহলে ওরা চালকের আসনে চলে যেতে পারে।
* উইকেট কেমন দেখলেন?
সাকিব : উইকেটে আমার মনে হয়, বোলারদের জন্য যথেষ্ট সহায়তা আছে। আমাদের খুব ভালো জায়গায় বল করতে হবে। আমি বলব না যে, উইকেট খুব বাজে অবস্থায় আছে। খুব যে ভালো আছে তাও নয়। উইকেটে বোলারদের যথেষ্ট সহায়তা আছে, তার জন্য আমাদেও ধৈর্য ধরতে হবে এবং অনেক ভালো বোলিং করতে হবে।
* বাংলাদেশের এই ইনিংসকে কি ম্যাচুউরড ইনিংস বলবেন ?
সাকিব : বলা মুশকিল। একেক জনের একেক রকম মত তো থাকেই। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থান ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে,তা বলা মুশকিল। গত কিছু দিন ধরে আমরা একটা ইনিংস ভালো করছি তো আরেকটা ইনিংস ভালো করতে পারছি না। এই বছরে প্রতিটা ম্যাচে আমরা এমন একটা পরিস্থিতিতে তৈরি করছি, যেখানে ভালো অবস্থানে ছিলাম। পরের ইনিংসে গিয়ে আর ভালো জিনিসটা ধরে রাখতে পারিনি। টেস্টে পাঁচ দিন ধারাবাহিক ভালো ক্রিকেট খেলতে হয়। যেটা সহজ না। আর আমরা খুব বেশি অভ্যস্তও নই। তাই এখনো একটি বোলিং,একটি ব্যাটিং ইনিংস বাকি আছে, সেদিকেই ফোকাস রাখতে চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।