নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শ্রীলংকা : ৩৩৮ও ৫৪/০
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৪৬৭
(তৃতীয় দিন শেষে)
শামীম চৌধুরী, কলম্বো (শ্রীলঙ্কা) থেকে : ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট থেকে ১২ ইনিংসের মধ্যে ভাল বলে সাকিব আউট হয়েছেন ক’বার? এ নিয়ে একটা কুইজ প্রতিযোগিতা করা যেতে পারে! টেস্টে নিজের অপমৃত্যু নিজে ডেকে আনতে জানেন যিনি এবং এটাকেই নিজের স্টাইল বলে অজুহাত দাঁড় করান যিনি, দ্বিতীয় দিনের শেষ ১৭ মিনিটেও যার অক্রিকেটীয় শটস ব্যাটিং কোচ সামারাবীরাকে ভাবিয়েছে, তৃতীয় দিনে সেই সাকিবই যেনো অচেনা সাকিব! দ্বিতীয় দিনে শ্রীলঙ্কা মিডল অর্ডার চান্দিমালের ব্যাটিং দেখে শিখেছেন,এবং তা প্রয়োগ করেই বাংলাদেশকে শততম টেস্টে দেখাচ্ছেন দারুণ কিছুর স্বপ্ন! দেশের হয়ে শততম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারেন বার্ডসলি ও চার্লস কেলওয়ে, নিউজিল্যান্ডের বেভান কংডন ও ব্রায়ান হেস্টিংস, দক্ষিণ আফ্রিকার বিলি ওয়েড, পাকিস্তানের মজিদ খান এবং জিম্বাবুয়ের গ্রায়েম ক্রেমারের পর ৮ম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিব করেছেন সেঞ্চুরি উদযাপন। তার সেঞ্চুরি (১১৬), মুশফিকুরকে নিয়ে ৯২ এবং ডেব্যুটেন্ট মোসাদ্দেককে নিয়ে ১৩১ রানের পার্টনারশিপে নেতৃত্ব দেয়ায় বিদেশের মাটিতে প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ১২৯ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ৩৩৮’র চ্যালেঞ্জে ৪৬৭। এমন একটি স্বপ্নময় দিনে শ্রীলংকা ৭৫ রানে পিছিয়ে, তবে সাকিব কৃতিতে শততম টেস্টবে রোমাঞ্চিত করার উপলক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ঘণ্টায় বিপদ নয়, উইকেটহীন ৬১, প্রথম সেশনে মুশফিকুরকে হারিয়ে (৫২) ১০১, দ্বিতীয় সেশনে সাকিবকে হারিয়ে ১১৩Ñসব ছবির মতো মনে হতে পারে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৭ সেঞ্চুরির ৩টিই যার ডাবল, সেই মোসাদ্দেক দেশের হয়ে শততম টেস্টে প্রতিনিধিত্ব করে সুযোগের সদ্বব্যহার ঠিকই করেছেন (৭৫)। বাংলাদেশের ইনিংসের স্থায়িত্ব ছিল ৫০১ মিনিট। হেরাথের শেষ স্পেল (১১.১-৪-১১-৩) এই বাঁ হাতিকে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাজারতম উইকেটের বিরল রেকর্ডে নাম লেখাতে করেছে সাহায্য। তারপরও দিনটি ছিল সাকিবময়। এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে ৫শ’ রানে ৫ম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান সাকিব। এই বছরে ২টি সেঞ্চুরি, ২টি ফিফটিতে তার গড় ৮২.১৬।
যে সাকিব শটস খেলতে করেন পছন্দ, সেই সাকিবকে ৫ম সেঞ্চুরি উদযাপনে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৩৬ মিনিট। সান্দকানকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে ১১৬ তে ফিরে যাওয়া সাকিব পুরো ইনিংসে খেলেছেন মাত্র ১০টি বাউন্ডারি শট। মুশফিকুরের সঙ্গে বোঝাপড়াটা তার দারুণ, তামীম-ইমরুলের পার্টনারশিপে ৪৯ ইনিংসে ২২৭৫’র পরে সাকিব-মুশফিকুরের ৫০তম পার্টনারশিপে এসেছে ২২৬৫ রান।
পি.সারা ওভালে প্রথম ইনিংসে ১২৯ রানের লিডই টেস্টে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় লিড। এর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৩ সালে হারারে টেস্টে ১০৯ ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লিড। এ নিয়ে বিদেশের মাটিতে ১০০’র বেশি লিড পেলো তিনবার। প্রথমটি ছিল ২০০৩ সালে মুলতানে ১০৬ রানের।
৭ রানের জন্য এই মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি মুশফিক। বাংলাদেশের ৮৬তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্যাপ মাথায় ওঠা মোসাদ্দেকের বাংলাদেশের ১৩তম অভিষিক্ত ক্রিকেটার হিসেবে হাফসেঞ্চুরি করেছেন। সাকিব-মোসাদ্দেকের ১৪৩ মিনিটে ১৩১ রানের পার্টনারশিপে প্রথম ইনিংসে শেষ ৫ উইকেটে ২৬৯ রান বিদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে শেষ ৫ উইকেটে ২৮৯ রান যোগ করেছে বাংলাদেশ। দেশের শততম টেস্টে সেঞ্চুরির রেকর্ডে সাকিব ৮ম। অস্ট্রেলিয়ার ওয়ারেন বার্ডসলি ও চার্লস কেলওয়ে, নিউজিল্যান্ডের বেভান কংডন ও ব্রায়ান হেস্টিংস, দক্ষিণ আফ্রিকার বিলি ওয়েড পাকিস্তানের মাজিদ খান এবং জিম্বাবুয়ের গ্রায়েম ক্রেমারের পর সাকিব করলেন দলের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি। শততম টেস্টে মোসাদ্দেক তার অভিষেক টেস্টে বিরল রেকর্ড গড়েছেন। শততম টেস্টে অভিষেকে হাফসেঞ্চুরি আছে কেবল একজনেরই। ১৯০৯ সালে ইংল্যান্ডের শততম টেস্টে অভিষিক্ত জ্যাক শার্প দেখা পেয়েছিলেন ফিফটি (৬১)। সঞ্চুরি মিস করা জাভেদ ওমর, তামিম ইকবাল ও নাজিমউদ্দিনের পরেই তার অবস্থান। অন্যদিকে অভিষেকে তিন সেঞ্চুরি পাওয়া ব্যাটসম্যান হচ্ছেন-আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মোহাম্মদ আশরাফুল ও আবুল হাসান রাজু। এমন ইতিহাস রচনার টেস্ট রাঙানোর স্বপ্ন যে দেখতেই পারে বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।