নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, গল (শ্রীলঙ্কা) থেকে : প্রথম ইনিংসে ১৮২ রানের লিড নিয়ে গল টেস্টে ম্যাচ জয়ের ছকই একেছিলেন শ্রীলঙ্কা কোচ। অথচ, তৃতীয় দিনে পুরোপুরি চালকের আসনে বসা শ্রীলঙ্কাকে এখন দুর্ভাবনায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ দল। তবে (২৭৪/৬ ডি.) তৃতীয় ইনিংসে নিরাপদ অবস্থানে থেকে শ্রীলঙ্কা অধিনায়কের বিলম্বিত ইনিংস ঘোষণার সিদ্ধান্তে ম্যাচে ফিরতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে ১২৫ ওভার এবং ৪৫৬ রানের চ্যালেঞ্জ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চতুর্থ ইনিংস বলে কথা। ৪১৮ রানের বেশি চেজ করে জেতার অতীত নেই কারো। তাই এই দুঃস্বপ্ন মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে চতুর্থ দিনের শেষ ঘণ্টা যেভাবে উইকেটহীন পাড়ি দিয়ে স্কোরবোর্ডে জমা করেছে ৬৭/০ বাংলাদেশ, তাতে অনেক কিছুর সম্ভাবনাই এখন দেখছে বাংলাদেশ। জয় থেকে বাংলাদেশ দূরে দাঁড়িয়ে ৩৯০ রান, ড্রয়ের জন্য পার করতে হবে পঞ্চম দিনের পুরোটা। চতুর্থ ইনিংসের চ্যালেঞ্জে ২০০৯ সালে গ্রেনাডায় ২১৫ রানের টার্গেট চার উইকেট হাতে রেখে এবং ২০১৪ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের ১০১ রানের টার্গেটে তিন উইকেটের জয়ও আছে বাংলাদেশের। রান তাড়া করে এই ম্যাচ জিতলে এটা হবে বিশ্বরেকর্ড। সে লক্ষ্য কিছুটা কঠিন বলেই ড্র’র দিকেই চোখ বাংলাদেশের।
২০০৮-৯ মৌসুমে মিরপুর চতুর্থ ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ৫২১ রানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে ৪১৩ পর্যন্ত স্কোর টেনে নেয়ার অতীত আছে বাংলাদেশের। জয়ের পেছনে না ছুটে ড্রয়ের পেছনে ছুটলেই হতো- সেই আক্ষেপ ঘোঁচাতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ছয় বছর। ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে ৪৬৭ রানের চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিয়ে জয়ের সমান ড্র’ করেছে বাংলাদেশ মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে। চতুর্থ ইনিংসের চ্যালেঞ্জ প্রথমে পাড়ি দেয়ার অতীত বাংলাদেশের ২০০৫ সালে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেয়া ৩৭৪ রানের চ্যালেঞ্জ মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে ১৪২ ওভার ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর সেই অতীত থেকেও টনিক নিতে পারে বাংলাদেশ দল।
সৌম্যের ইতিবাচক ব্যাটিং (৪৭ বলে ৬ চার ১ ছক্কায় ৫৩ নটআউট), তামীমের দায়িত্ববোধের প্রকাশে (৪৪ বলে ১৩ নটআউট) গল এ ফিরতি টেস্টও ড্রয়ের সম্ভাবনা প্রবল করেছে বলে মনে করছেন সাকিব- ‘এখনো যেহেতু ১০ উইকেট আছে, তাই এখন আমাদের দুই-তিনটা ভালো জুটি দরকার। তাহলে ভালো ভাবে ড্র করা সম্ভব। প্রথম সেশনটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কিভাবে শুরু করি তার উপরই আসলে পুরো দিনটা নির্ভর করবে।’
নতুন দিনে নতুন শুরু, হাতে আছে ১০টি উইকেটের সব ক’টি। প্রথম ইনিংসে তামীম-সৌম্যের ১১৮ রানের পার্টনারশিপে এই পার্টনারশিপ হবেন উদ্বুদ্ধ। দুইজন যেভাবে খেলছে আমার মনে হয় ওদের খেলার চেঞ্জ আনার প্রয়োজন নেই। বল অনুযায়ী খেলবে এটাই স্বাভাবিক। যার যার গেম প্লান যার যার মতো বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবে। অবশ্যই আমি যেটা বললাম, প্রথম সেশনটা গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রে ওরা দুইজন যদি খেলতে পারে, তাহলে কোনো কথাই নেই। আমরা চাইব ওরা যতক্ষণ পারুক ব্যাটিং করুক। তাহলে অবশ্যই পরের ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে যাবে। শুধু প্রতিরোধ গড়লেই হবে না, আবার শুধু মারলেই চলবে না। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করতে হবে। আজ (গতকাল) সৌম্য কোনো বাজে শট খেলেনি, সেই সঙ্গে স্ট্রাইক রেটও ভালো রেখেছে। তামিম ভালো ব্যাটিং করেছে। ও খারাপ বল পায়নি, তাই খুব বেশি রান করতে পারেনি। আমার কাছে মনে হয় দুইজনের ব্যাটিং থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’
উইকেটটির বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছেন সাকিব। প্রতিপক্ষের স্পিন সতর্কভাবে সামাল দেয়ার পরামর্শ তাই দিয়েছেন সাকিব টিমমেটদের- ‘পঞ্চম দিনে উইকেট ভিন্ন আচরণ করতেই পারে। এখন উইকেট বল অল্প অল্প ঘোরা শুরু করেছে। কালকে (আজ) হয়তো আর একটু বাড়তেও পারে। তবে আমাদের ব্যাটসম্যানরা খেলতে প্রস্তুত আছে। এখনো আমাদের হাতে ১০ উইকেট আছে। আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, ড্র করা খুবই সম্ভব। ওদের যে কোনো বোলারই হুমকি হতে পারে। যেহেতু আমরা একটু পিছিয়ে আছি, তাই একটু কেয়ারফুল থাকতেই হবে।’ শ্রীলঙ্কার বিলম্বিত ডিক্লেয়ারে বিস্মিত হননি সাকিব- ‘আমার কাছে ওমন কিছু মনে হয়নি। চা-বিরতির পর মাত্র তিন ওভার ব্যাটিং করেছে। এটা ওদের ট্যাকটিক্যাল কিছু চিন্তা থাকতে পারে।’
চতুর্থ দিনের টি-ব্রেক পার করে ইনিংস ঘোষণায় যখন স্থানীয় মিডিয়ায় প্রশ্নের মুখে শ্রীলঙ্কা দল, তখন এই সিদ্ধান্তের পক্ষেই ওকালতি করেছেন থারাঙ্গা- ‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল তাদের ১২৫ ওভার খেলতে দেবো। গলের অন্য উইকেটগুলোর মতো এখানে তেমন টার্ন পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও আমরা তাদের (বাংলাদেশ) ১২৫ ওভার ব্যাট করতে দিতে চেয়েছি, কারণ বৃষ্টির কারণে আমরা ১১ ওভার হারিয়েছি।’
এদিকে গতকাল ইনিংস ঘোষণার পর বাংলাদেশের একটি উইকেটও ফেলতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তৃতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কার সেঞ্চুরিয়ান (১১৫) উপল থারাঙ্গা। গলের লোকাল হিরো চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বলেছেন- ‘আজ (গতকাল) আমরা উইকেট পাইনি, এটা আমাদের জন্য হতাশার।’ আজ অবশিষ্ট ৯৮ ওভারের মধ্যে বাংলাদেশকে অলআউট করতে স্পিনারদের দিকে তাকিয়ে থারাঙ্গাÑ ‘এখনো ৯৮ ওভার হাতে আছে। আশা করছি, আগামীকাল (আজ) উইকেট স্পিনারদের জন্য কিছু একটা করবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।