Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মাসেতু নিয়ে হিলারি ও ইউনূস ষড়যন্ত্র করেছিলেন -তোফায়েল

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের নামে এ সরকারের উপর কলংকের বোঝা চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, তা আজ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। সেখানে কিছু মানুষ ষড়যন্ত্র করেছিল। মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ও নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধে ষড়যন্ত্র করেন। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর ন্যায় অন্যায়ের সাথে মাথানত করেননি। তিনি বলেছিলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে কোনো দুর্নীতি হয়নি, আজ তা প্রমাণিত হলো। সে কারণেই তিনি নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আমাদের দেশের কিছু মানুষ টকশোয় তাদের সাথে সুর মিলিয়েছিলেন। আদালতের রায়ের মাধ্যমে তাদের অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুরে বলব, এখন তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। মন্ত্রী গতকাল ঢাকায় প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জনতা ব্যাংক লি. আয়োজিত বার্ষিক সম্মেলন-২০১৭ এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন। জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান-এর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম। ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সদস্যবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তোফায়ের আহমেদ বলেছেন, সবকিছুতে রাজনীতি ঢুকানো ঠিক নয়। ব্যাংকিং খাত একটি সংবেদনশীল খাত, এখানে সংশ্লিষ্ট সকলকে যতœবান হয়ে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে। তালিকা করে খেলাপি ঋণ আদায় করতে হবে, নতুন করে যাতে কোনো ঋণখেলাপি তৈরি না হয়, সে বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের দুর্নীতি না হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। দেশে বিদ্যমান ব্যাংকিং ব্যবস্থায় কর্পোরেট সুশাসনসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে অভিজ্ঞতা নেই বা যারা এ খাতের ক্ষতি করতে পারে, এরকম কাউকে ব্যাংক পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া উচিত হবে না। সুদের হার কমিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম বৃদ্ধি করে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করাটা এখন ব্যাংকিং খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে হবে।  দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতের ভূমিকা ও দায়িত্ব অনেক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ঋণ ব্যবস্থাকে বহুমুখীকরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঋণ যেন শুধু খাতভিত্তিক না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। এটাকে বহুমুখী করতে পারলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এতে দেশে বেকারত্বের হার হবে। ফজলে কবির বলেন, ৪টি গ্রুপের মধ্যে ঋণস্থিতি মূলধনের ২৫ শতাংশ নিচে আছে। আরও ৫টি গ্রুপের মধ্যে রয়েছে ১৫ শতাংশ। ফলে ৯টি গ্রুপের মধ্যে মোট ৪০ শতাংশ ঋণস্থিতি রয়েছে।
ব্যাংক খাতের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মোট ৫৬টি ব্যাংকের মধ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে ৬টি। এর মধ্যে বেসিক ও বিডিবিএল ছাড়া সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক ভালো অবস্থানে রয়েছে। শুধু এই চারটি ব্যাংকের আমানত রয়েছে মোট ব্যাংক খাতের ২৬ শতাংশ। আর ঋণের পরিমাণ রয়েছে ১৭ শতাংশ।
গভর্নর বলেন, বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে এই চারটি ব্যাংকই ঋণ দিচ্ছে; এছাড়া সরকারের সব সামাজিক নিরাপত্তা কাজেও ব্যাংকগুলো বড় ভূমিকা পালন করছে। তবে এর মধ্যে জনতা অনেক এগিয়ে রয়েছে।
ক্লাসিফাইড লোনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্লাসিফাইড লোনের ক্ষেত্রে সোনালী এবং অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ে জনতা ব্যাংক অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। সোনালী এবং অগ্রণী ব্যাংকের যেখানে ২৫ শতাংশ ক্লাসিফাইড লোন রয়েছে, সেখানে জনতা ব্যাংকের রয়েছে ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
ফজলে কবির বলেন, এসএমই বা ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকে আরও গুরুত্ব দেয়া উচিত। কারণ এটি আমদের ভাবিষ্যৎ গড়তে সহায়তা করে। দারিদ্র্যতা দূর করতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায্য করে এটি। এছাড়া নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে সহায়তা করে। উদ্যোক্তাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উদ্যোক্তা সহায়ক ঋণ বা স্টার্টআপ ক্যাপিটাল সৃষ্টি করতে হবে। ফলে ভালো উদ্যোক্তা তৈরি হবে এবং জিডিপি অর্জনে বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে কৃষি ঋণের মতো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়ার কথাও ভাবছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এটি এখনও গবেষণাধীন রয়েছে। ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তার প্রসঙ্গে ফজলে কবির বলেন, সাইবার নিরাপত্তার দিকে নজর বাড়াতে হবে। সাইবার নিরাপত্তার জন্য অটোমেশিনের সঙ্গে বিকল্প পদ্ধতির ব্যবহারও করতে হবে। এতে যেকোনো সমস্যার দ্রুত সমাধান করা সম্ভব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তোফায়েল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ