নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী হায়দারাবাদ (ভারত) থেকে : ওয়েলিংটন টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২১৭, ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ইনিংসে ৫৯ এরপর হায়দারাবাদে প্রথম ইনিংসে ৮২! প্রতিটি ইনিংসই হতে পারত আরো বড়, ডাবলকে ট্রিপল সেঞ্চুরিতে, কিংবা অন্য দুইটি ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করা অসম্ভব ছিল না সাকিব আল হাসানের পক্ষে। হায়দারাবাদ টেস্টের তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে উমেষ যাদবের ভঙ্ককর রূপ ছড়ানো স্পেলটি কোনোমতে পার করার পর যেভাবে করেছেন ব্যাটিং সাকিব, লাঞ্চের পর যেভাবে ভারত বোলারদের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছেন, তাতে টেস্ট ক্যারিয়ারে পঞ্চম সেঞ্চুরিটি প্র্যাপ্য ছিল এই বাঁ-হাতির। তবে শট খেলতে প্রলুদ্ধ হওয়া তার ক্রিকেটীয় দর্শনে নতুন কিছুই নয়, অশ্বিনকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে ৮২ রানের মাথায় মিড অনে ক্যাচ দিয়ে অবধারিত সেঞ্চুরি শুধু মিসই করেননি, বাংলাদেশ দলকে ফেলে দিয়েছেন চাপের মুখে সাকিব। ভালো বলে আউট হলে অপরাধী করতো না তাকে কেউ। কিন্তু এভাবে আউট হয়ে দলকে চাপের মুখে কেন ফেলে দিবেন সাকিব? এটা তো মহা অপরাধ। টেস্টে সর্বশেষ ইনিংসগুলোর অধিকাংশই থেমেছে বাজে শটে! জানেন, সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার জন্য অনুশোচনা তো করছেন-ই না, অপরাধবোধের প্রকাশ পর্যন্ত নেই সাকিবের ‘এতকিছু চিন্তা করে ব্যাটিং করি না। তবে আউট না হলে ওই সময় আমার ১০০টা হয়ে যেত। কিংবা দলের জন্য বেশিক্ষণ ব্যাটিং করতে পারতাম। অবশ্যই ভালো হতো। ব্যাটিং করার সময় আসলে এতকিছু মাথায় কাজ করে না। ব্যাটিং করতে থাকি, শটস খেলতে ভালো লাগে। ওটাই খেলতে থাকি। কখনো সফল হই, কখনো হই না। এগুলো খুব বেশি চিন্তা করার আছে বলে আমার কাছে মনে হয় না। কারণ এটা আমার ন্যাচারাল খেলা। আমি এভাবেই খেলতে পছন্দ করি।’
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে খেলছেন এভাবে। তাতে বাংলাদেশ দলকে কিন্তু কম বিপদে পড়তে হয়নি। গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে মইন আলীকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে চেয়ে স্ট্যাম্পিংয়ে কাটা পড়ে বাংলাদেশ দলকে ফেলে দিয়েছেন বিপদে। ২২ রানে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ায় ওই শটটিই শেষ পর্যন্ত হয়েছে অভিযুক্ত। নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ওয়েগনারের শর্ট অ্যান্ড ওয়াইড ডেলিভারি কাট করতে যেয়ে ২১৭ রানে থেমেছেন, দ্বিতীয় ইনিংসে রান করার আগেই অকারণে উচ্চাভিলাসী শট স্কুপ করতে যেয়ে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ সমর্থকদের বিলাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে সাউদিকে ফ্লিক করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন এমন এক সময়ে, যখন ইনজুরিতে পড়ে ইমরুল, মুশফিক, মুমিনুলহীন দলে ভরসা ছিলেন সাকিব। ৫৯ রানে ওই ইনিংস থেমে যাওয়ার পরের ইনিংসে ওয়াটলিংকে কাট করতে যেয়ে এক রানের মাথায় বোল্ড আউটটিও দৃষ্টিকটু। হায়দারাবাদে তো সেঞ্চুরি বিসর্জন দিয়েছেন। অথচ ব্যাটিংয়ের এই স্টাইল পরিবর্তন করার পক্ষে নন বলে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ‘আমি যেভাবে গত পাঁচ-ছয় বছর খেলছি, তা থেকে আমি আমার স্টাইল পরিবর্তন করতে চাই না। দলের জন্য অবদান রাখতে চাই। ২১৭ রান করেও খুশি ছিলাম না। আমি দলের জন্য আরো রান করতে চেয়েছিলাম। আমি জানি যদি স্টাইল পরিবর্তন করি, তাহলে আমার মনে হয় না আমি আর সাকিব থাকব। আমার ভাবনাটা এমনই।’
সর্বশেষ কবে ভালো বলে আউট হয়েছেন, তা সাকিব নিজেও মনে করতে পারছেন না বলে টেলিভিশনে সাক্ষাতকারে বলেছেন। দলের জন্য অবদান রাখতে চান, মুখে তা বললেও আসলে কি তার প্রতিফলন আছে ব্যাটিংয়ে? বিরাট কোহলী যেখানে সেঞ্চুরিগুলোকে ডাবলে পরিণত করছেন, অপেক্ষা করছেন বাজে বলের জন্য, তা পর্যন্ত আমলে আনছেন না সাকিব। এমন এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব মাথা নাড়িয়ে যে উত্তর দিয়েছেন, তার অর্থ কি জানেন ‘এই স্টাইল আমি পরিবর্তন করব না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।