শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
ব্লাড ফায়ার
দালান জাহান
ব্লাড ফায়ারের পূর্বে কবি
গাছেদের কাছে গেল,
গাছেরা তাকে আত্মহত্যায় উৎসাহিত করল,
কবিতার জিওগ্লিপস দেখে-
ভ্রমণে যেতে বলল,
বিদ্রƒপ বৃষ্টি হতে পাথরের মেঘে।
যখন সে দেখলো সুমেরু থেকে
একদল গাধা হেঁটে আসছে,
প্রান্তিক শহরের দিকে,
শহরের নেংলা কুকুরগুলো
লেজ নাড়তে নাড়তে -
নিজেদের চিত্র আঁকছে,
নিজেদের পায়ের কাছে,
কবি তখন জায়গা ছেড়ে দিল।
আকাশের কঙ্কাল ছিঁড়ে কবি
হাতের লাঠি বানালেন,
দুয়ারে দুয়ারে হেঁটে চললেন,
ছায়াচ্ছন্ন বনভূমি থেকে
জলকেলিরত মাছেদের ঘরে,
এই কবিতা নিবেন কবিতা।
উন্মাদ বর্ষার গানে,
শহরের শেষ বাড়ি থেকে,
বেরিয়ে এলেন এক ষোড়েশী,
তার অরুণ-ধূসর চোখে আঁকা
বাতাসের মূর্তমূর্তি,
যে অন্ধরে ডেকে আনলো সমুদ্র,
ঝড়ের তা-বে উড়ে গেল
ঝুলিসহ অশ্রুর পাপ-সাগর।
পকেটের হাসি খুলে বুকে নিল কবি
নৈঃশেব্দের কঙ্কুম-গন্ধ,
আগুনের ভস্মগৃহ
বড্ড মলিন আর দুর্গন্ধময়,
নদীগুলো দৌড়ে এলো চকচকে রাস্তায়,
ক্ষুধার তাড়নায় ছুটে চলল
দুর্ভিক্ষের ট্রাকগুলো।
জলবনে ভয়ঙ্কর আঁধার,
বুনো আবেগ শ্বেত ছায়া,
প্রবীণ প্রেতাত্মা,
কবির সামনেই উলঙ্গ হাঘর।
বালুবাদের পৃথিবী জয়
মনি খন্দকার
বালুবারা ক্রমে পৃথিবীর অণু দখল করছে
তাদের বিষাক্ত তীরে গ্রাম থেকে শহর বন্দর
আকর্ষিক সর্বত্রই পয়জন ছড়িয়ে পড়ছে,
অস্থির অসহ্য যন্ত্রণায় প্রাণ যাচ্ছে সুশীলের
কিন্তু অনেকেই অজ্ঞাত,মৃত্যুর বিষ খুঁজে ক্লান্ত।
প্রকাশ্য বিভায় ভেঙ্গে যাচ্ছে শহরের পিরামিড
দুরন্ত শিকারী তস্কর পালিয়ে যাচ্ছে সগৌরবে।
ঘৃণ বালুবারা আমাদের সব অঙ্গ খেয়ে নিচ্ছে,
হৃৎপি- চিবাচ্ছে আনন্দে, অসহায় জেনারেল
তাদের একতা দক্ষ তীরান্দাজে আহত ফিরছে,
পৃথিবীর দেশে দেশে তাদের প্রজন্ম অঙ্কুরিত।
যোগ্য রাষ্ট্রপতি জ্ঞানি মন্ত্রীবর্গ পরাজিত সবে,
কেননা বালুবারা এখন অপিসে
জাতি সংঘ, আনবিক কমিশনে সর্বত্র ছড়িয়ে।
হিংস্র নরখাদকেরা বেশ বদলিয়ে মিশে গেছে
গলি থেকে রাজপথ দেশ থেকে ক্রমে মহাদেশে।
আধুনিক অস্ত্রে যোগ্য সেনানীরা ব্যর্থ বসে আছে,
কি করে চিনবে? ভিন্ন রূপে তারা মানব পোশাকে।
তন্ত্র মন্ত্রে শামানরা ব্যর্থ, ভুখা সিন ইটার্সেরা
পাপির সন্ধানে কিন্তু চারিদিকে নিষ্পাপ সবাই।
আমিও পারবো
ফরিদুল ইসলাম
ব্যর্থতাকে আমিও ছুড়ে ফেলতে পারি
ছুড়ে ফেলবোও নিশ্চয়ই।
রক্ত মাংসের সুঠাম দেহ
আমিও তার অধিকারী।
রুটি-কলা, দুধ-ভাত
আমিও খাই প্রতি সন্ধ্যা প্রভাত
আমিও তেমন, ওরা যেমন
আমিও পারবো নিশ্চয়ই।
মনকে বলি- ঝেড়ে ফেলো ভয়
বৃথা সংশয়।
উচ্চাশা হৃদয়ে মেখে,
ভোরের লালিমা দেখে
দুর্গমে আনো জয়।
শৃঙ্খলিত ওরা; করে সংগ্রাম
বিকলাঙ্গ; করে নীরবতা ভঙ্গ
দেশন্তরী; তবুও ছাড়ে না আশা
পাওয়া জয় আর পাওয়ার অপেক্ষায়।
ওরা পারে , জয়ী হয়
আমিও পারবো নিশ্চয়ই
নিশ্চয়ই।।
আসুন চাষ করি ফুল, পবিত্র করি আত্মা
রিক্তা রিচি
আসুন চোখে চোখে ভোগ করি মৃত্যু
দল বেঁধে মেতে উঠি রুশীয় মদে
মিথ্যার স্তূপ ভেঙে ফেলি ইমারত ভাঙার মতো
বিবেকের পানীয় দিয়ে স্বচ্ছ করি খাঁচা
যারা প্রকৃতির পোশাক ছিনিয়ে নেয়
কেড়ে নেয় গাছের লজ্জা
মাটির আবরণ চুষে খায় নির্লজ্জের মতো
আসুন তাদেরকে পান করাই জমজম কূপের পানি।
যেখানে জনতার চিৎকার শোনার সময় নেই
শোনে না মৃতলাশের বুকের আর্তনাদ
মৃত্যুপুরী যে শহর ঘুমের রাজ্যে বিচরণ করে
আসুন সেই শহরে বুলিয়ে দেই আমাদের পাঁচ আঙ্গুল।
আসুন চাষ করি ফুল, পবিত্র করি আত্মা
ঠিক ভোরের গোলাপের মতো।
আসুন প্রকৃতির তাকে তাকে সাজাই আমাদের মনের সরলতা
শহরের প্রতিটি ইট ঢেকে ফেলি সততার সুতোয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।