Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গাদের জন্য মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী জাহাজ

মিয়ানমারে গত অক্টোবর থেকে ৯২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত : জাতিসংঘ

| প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে গত অক্টোবরে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনার পর থেকে নিপীড়নের মুখে অন্তত ৯২ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন জাতিসংঘ কর্মকর্তারা। মানবিক কর্মসূচির সমন্বয় বিষয়ক জাতিসংঘ কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) দেওয়া তথ্য উল্লেখ করে একথা বলেন জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক। এক প্রাত্যহিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত ওই মানুষদের মধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া প্রায় ৬৯ হাজার মানুষও আছে। রাখাইনের মংডু শহরের উত্তরে যেখানে নিরাপত্তা অভিযান চলছে সেখানে জাতিসংঘের হিসাবমতে, ২৩ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলেও জানান মুখপাত্র দুজারিক। বাস্তুচুত মানুষদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা মুসলিম। তবে অন্যান্য সম্প্রদায়েরও কিছু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, মিয়ানমারের গোলযোগপূর্ণ রাখাইন রাজ্যের অসহায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রীবাহী জাহাজ পাঠিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক। রোহিঙ্গাদের দুর্দশাকে মালয়েশিয়া সরকার আমলে নেবে এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কাজেরও ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ত্রাণবাহী জাহাজটি বিরূপ পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, মিয়ানমার জাহাজটিকে রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটওয়ে অভিমুখে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। খবরে আরো বলা হয়, মালয়েশিয়ার মুসলিম সংগঠনগুলোর পাশাপাশি দেশীয় এবং বিদেশি ত্রাণ সংগঠনগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণবাহী জাহাজের আয়োজন করেছে। এটি মিয়ানমারের সর্ববহৎ শহর এবং ইয়াঙ্গুন বন্দরের দিকে রওনা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারিতে জাহাজটি ইয়াঙ্গুনে ভিড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ফ্লোটিল্লা থেকে খাবার ও ওষুধসহ অন্যান্য প্রায় ৫০০ টন প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এরপর জাহাজটি তিনদিনের যাত্রায় টেকনাফ বন্দরের দিকে রওনা হবে। মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়ন নিয়ে প্রকাশ্যেই কড়া সমালোচনা করে এসেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নজিব রাজাক। মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সহিংসতার বেশিরভাগ খবরই অতিরঞ্জিত বলে মন্তব্য করেছে সরকার। তাছাড়া, রাখাইন রাজ্যে সংঘাতও ওই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে সরকার অভিহিত করেছে। তবে ত্রাণ মিশনের প্রধান আব্দুল আজিজ আব্দুল বলেছেন, মিয়ানমার তাদেরকে রাখাইন রাজ্যের রাজধানীতে যেতে দেবে এবং ত্রাণ বিতরণ করার সুযোগ দেবে বলেই তারা আন্তরিকভাবে আশা করছেন। গত বছর ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের পুলিশ ফাঁড়িতে হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চরম নিপীড়ন শুরু করেছে সেনাবাহিনী। শ’ শ’ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণ করা হয়েছে বহু নারীকে। জীবন বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। মালয়েশিয়া বর্তমানে নিবন্ধিত ১ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭৪ শরণার্থীর দেখভাল করছে। সরকারি হিসাবে, এদের মধ্যে ৫৫ হাজার ৫৬৫ জনই রোহিঙ্গা মুসলিম। মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে কাজ দেওয়ার প্রকল্প ১ মার্চ থেকে শুরু হবে। এর আওতায় ৩০০ রোহিঙ্গাকে কৃষি ও উৎপাদন খাতগুলোতে কাজ দেওয়া হবে। রয়টার্স, বিবিসি, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ