বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলায় তিনতলা বিশিষ্ট চৌধুরী মার্কেটের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। পুরনো এই মার্কেটটি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন’র (কুসিক) ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় রয়েছে। কুসিক কর্তৃপক্ষ মার্কেটটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য তিনদফা নোটিশ দিলেও এটি ভাঙ্গা হচ্ছে না। মার্কেটের ভেতরে সরকারি অফিস, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, মসজিদ ও এতিমখানাসহ অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অন্তত পাঁচ শতাধিক লোক মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে অবস্থান করছে।
জানা যায়, কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলার চৌধুরী মার্কেটটি প্রায় সাড়ে সাত বছর আগে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে এটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিয়ে মালিকপক্ষকে নোটিশ দেন তৎকালীন কুমিল্লা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী মো. আরিফ। এই নোটিশ-এর পর মালিকপক্ষ মার্কেটটি ভেঙ্গে বহুতল বিশিষ্ট মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে নকশা অনুমোদনের কাজে পা বাড়ান। কিন্তু বিভিন্ন কারণে প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হয়। এরপর ২০১০ সালে মার্কেট ভেঙ্গে ফেলার জন্য পৌর মেয়র মনিরুল হক সাক্কু স্বাক্ষরিত নোটিশ আসে মালিকপক্ষের কাছে। সবশেষ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন মেয়র মনিরুল হক মার্কেটটি ভাঙ্গার জন্য আবার নোটিশ করেন। মালিকপক্ষ প্রতিটি নোটিশের জবাব দিয়ে মার্কেটটি ভাঙ্গার উদ্যোগ নিলেও বাধার মুখে পড়েন। ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েই দোকানদারসহ অন্যান্য ব্যবসায়িরা মার্কেটে অবস্থান করছেন।
কুমিল্লাসহ দেশের বেশ ক’টি জেলায় কয়েকদিন আগে যে ভূকম্পন অনুভূত হয়েছিল সেই ভূমিকম্পের ঝাঁকুনিতে চৌধুরীর মার্কেটের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিলে সেখানে অবস্থানরত লোকদের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। তার আগেও কয়েকদফা ভূমিকম্পে মার্কেটটি কেঁপে ওঠলেও সেখানকার দোকানদার ও অন্যান্য ব্যবসায়িরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ওই তিনতলা ভবনটিতে অবস্থান করছেন। মার্কেটের তিনতলার সব ছাদের পলেস্তরা খসে পড়েছে। বেশিরভাগ জায়গায় ছাদের, ভিমের রড় দেখা দিয়েছে। মসজিদ, এতিমখানার চারিদিকে ফাটল আর ফাটল। সবমিলে এক ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে চৌধুরী মার্কেট। এটির নিচতলায় কম্পিউটার, ছাপাখানা, দ্বিতীয় তলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস, বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যক্তিগত অফিস, একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এবং তৃতীয় মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানা রয়েছে। প্রায় ৩৯টির মতো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ এতিমখানার ৫৫জন শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট ভবনটিতে পাঁচ শতাধিক লোক ব্যবসায়িক ও চাকরিজনিত কারণে অবস্থান করছেন।
মার্কেটের মালিকপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিয়েও নানা কারণে সামনে এগুতে পারছেন না। এমনি অবস্থায় যেকোন সময় চৌধুরী মার্কেট ধসে পড়ে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন মার্কেটের আশপাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজন। চৌধুরী মার্কেট সংলগ্ন আশপাশের ব্যবসায়ি ও আবাসিক বাসিন্দারা অবিলম্বে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটটি ভেঙ্গে ফেলার জোর দাবী জানিয়েছেন। স্থানীয় লোকজন জানান, চৌধুরী মার্কেটের ব্যবসায়িরা মালিকপক্ষের সঙ্গে উদ্যোগি হলেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ সহজ হতো। তাতে করে মার্কেটে অবস্থানরত প্রায় পাঁচ শতাধিক লোক মৃত্যুর ঝুঁকি থেকেও বেঁচে যাবে। আর মার্কেটের বর্তমান ব্যবসায়িরাও নতুন করে সবকিছু শুরু করার সুযোগ পাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।