Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনার ঘরেই থাকলো শিরোপা

| প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাকিরা যেখানে শেষ দিনের লড়াইয় তাকিয়ে নিজেদের অবনমন আর উন্নয়নের দিকে, ঠিক তার এক দিন আগেই শিরোপা উৎসব করেছে খুলনা বিভাগ। ঢাকা মেট্রোকে গুঁড়িয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছে আব্দুর রাজ্জাকের দল। তিন দিনেই তাদের কাছে হেরে দ্বিতীয় স্তরে নেমে গেছে তারকায় ঠাঁসা মোহাম্মদ আশরাফুল, ইলিয়াস সানি ও মার্শাল আইয়্যুবদের ঢাকা মেট্রো। এনামুল হকের পর তুষার ইমরানের টানা তৃতীয় শতকে ৫ উইকেটে ৪২৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। আল আমিন হোসেনের দারুণ বোলিংয়ে ১১০ রানে গুটিয়ে যাওয়া মেট্রো হারে ৩৯৮ রানে। ৫০৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৩৯ ওভারে গুটিয়ে যায় মার্শালদের দ্বিতীয় ইনিংস। এই নিয়ে ঢাকা ও রাজশাহীর সমান পঞ্চম বারেরমত শিরোপা উল্লাসে মাতলো খুলনা।
ড্র করলেই টানা দ্বিতীয় শিরেপার হাতছানি ছিলো খুলনার। সেদিকে না গিয়ে ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শিরেপাধারীদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি মেট্রো। দলের পাঁচ ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কে গেলেও তাদের কেউ নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ২৯ রান আসে অধিনায়ক মার্শালের ব্যাট থেকে। ২০ রানে অপরাজিত থাকেন জাবিদ হোসেন। ৪১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার আল আমিন। অধিনায়ক রাজ্জাক ৩ উইকেট নেন ৪২ রানে।
এর আগে ৩ উইকেটে ২৭২ রান নিয়ে খেলা শুরু করে খুলনা। টানা তৃতীয় শতক পাওয়া তুষার ফিরেন ১৩৮ রান করে। তার ১৬৯ বলের ইনিংসটি গড়া ১৪টি চার ও তিনটি ছক্কায়। ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৮০ ওভার বল করাতে ৮ বোলার ব্যবহার করেন মার্শাল। তাদের কেউই একটির বেশি উইকেট পাননি। প্রথম ইনিংসে অর্ধশতক ও দ্বিতীয় ইনিংসে শতক করা এনামুল হক এবং ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়া আল আমিন জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
এদিকে, ফলোঅনে পড়া বরিশালকে দ্বিতীয় ইনিংসে পথ দেখিয়েছেন শাহরিয়ার নাফীস। তার শতকে ম্যাচ বাঁচাতে লড়ছে প্রথম স্তরে টিকে যাওয়া দলটি। জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বরিশালের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৯ রান। আল আমিন জুনিয়র ৩২ ও সোহাগ গাজী ১৬ রানে ব্যাট করছেন। ঢাকাকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে আরও ১৪০ রান চাই দলটির। ছয় রাউন্ড শেষে খুলনার পয়েন্ট হলো ৫৮। শেষ রাউন্ডে সিলেটে বরিশালকে হারালে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ঢাকা বিভাগের পয়েন্ট হবে ৫৪। ২৯ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে থাকা ঢাকা মেট্রো দ্বিতীয় স্তরে নিচে গেছে। বরিশালের ষষ্ঠ ম্যাচ এখনও শেষ হয়নি। তবে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে থাকায় প্রথম স্তরে টিকে গেছে দলটি।
দ্বিতীয় স্তরে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে দিনের শুরু আর শেষে কুয়াশার দাপট, মাঝখানে যে ৬৩ ওভার খেলা হল তাতে আলো ঝলমলে এক ইনিংস খেলেছেন মাইশুকুর রহমান। তার ষষ্ঠ শতকে রংপুরের বিপক্ষে লড়ছে রাজশাহী। জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১৩ রান। মাইশুকুর ১৪৯ ও অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম ৪১ রানে ব্যাট করছেন। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে ১০৪ রানের জুটি গড়েছেন এই দুই জনে। ২০০ বলে খেলা মাইশুকুরের দারুণ ইনিংসটি ১৫টি চার ও ২টি ছক্কায় গড়া।
মাত্র এক রানের জন্য শতক পাননি চট্টগ্রামের নাফিস ইকবাল। তার হতাশার দিনে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অষ্টমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়েছেন সিলেটের তরুণ পেসার আবু জায়েদ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিলেটের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৩৬ রান। চট্টগ্রামকে ফলোঅন না করিয়ে দিনের শেষ সেশনে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করে অতিথিরা। এরই মধ্যে ৩৭১ রানে এগিয়ে গেছে তারা। ৬৬ বলে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৮ রান করেন রুমান আহমেদ। জাকির হাসান ২৮ ও প্রথম ইনিংসে দ্বিশতক করা অলক কাপালী ২০ রান করে ফিরেন। নাসুম আহমেদ ১ রানে ব্যাট করছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (৩য় দিন শেষে)
খুলনা-ঢাকা মেট্রো
খুলনা ১ম ইনিংস : ২০৭। ঢাকা ১ম ইনিংস : ৩৬ ওভারে ১২২। খুলনা ২য় ইনিংস : ৮০ ওভারে ৪২৩/৫ ডিক্লে. (মেহেদী ১৫, হাসান ৫৫, এনামুল ১২২, তুষার ১৩৮, মিঠুন ৫০*, জিয়া ১৭, নাহিদুল ১৩*; মেহরাব জুনি. ১/৪৫, সানি ১/৫৯, হায়দার ১/৬০, ডলার ১/৬৮)। ঢাকা মেট্রো ২য় ইনিংস : ৩৯ ওভারে ১১০ (শামসুর ১৩, মেহরাব জুনি. ১৩, মার্শাল ২৯, জাবিদ ২০*, ডলার ১৩; আল আমিন ৬/৪১, রাজ্জাক ৩/৪২, আশিক ১/১৬)।
ফল : খুলনা ৩৯৮ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আল আমিন হোসেন ও এনামুল হক।
ঢাকা-বরিশাল
ঢাকা ১ম ইনিংস : ৫৮৮/৬ ডিক্লে.। বরিশাল ১ম ইনিংস : ৩৯.৫ ওভারে ১৮৯ (আল আমিন জুনি. ৩৪, সোহাগ ২৫, মনির ২৩, সালমান ৪৭, মইন ১৮, তৌহিদ ৯*; শাহাদাত ৪/৫৩, মোশাররফ ৩/৪৬, শরীফ ২/৪২, নাজমুল ১/৩৩)। বরিশাল ২য় ইনিংস : ৭০ ওভারে ২৫৯/৪ (শাহরিয়ার ১০৪, শাহিন ২৪, মাহমুদ ৪৫, জাকারিয়া ২৮, আল আমিন জুনি. ৩২ ব্যাটিং, সোহাগ ১৬ ব্যাটিং; মোশাররফ ২/৫১, নাজমুল ২/৬৬)
সিলেট-চট্টগ্রাম
সিলেট ১ম ইনিংস : ৫৫৫/৭ ডিক্লে। চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস : ১০০.৫ ওভারে ৩২০ (নাফিস ৯৯, ইয়াসির ৬০, শুক্কুর ১৯, সাইফুদ্দিন ৫৯, নাঈম ১৪, ইফতেখার ৪২*; জায়েদ ৫/৬৩, ফেরদৌস ৩/১০১, শাহানুর ১/৫৯, নাসুম ১/৬২)। সিলেট ২য় ইনিংস : ২১.৫ ওভারে ১৩৬/৫ (ইমতিয়াজ ১৫, রুমান ৬৮, জাকির ২৮, কাপালী ২০, নাসুম ১*; ইফতেখার ২/৩৪, কামরুল ১/২১, সাজ্জাদুল ১/২২, সাইফুদ্দিন ১/২৪)
রাজশাহী-রংপুর
রাজশাহী ১ম ইনিংস : ১৯১। রংপুর ১ম ইনিংস : ৩৫১। রাজশাহী ২য় ইনিংস : ৭২ ওভারে ৩১৩/৩ (মাইশুকুর ১৪৯*, জুনায়েদ ৬৮, ফরহাদ ২৮, জহুরুল ৪১*; মাহমুদুল ১/১৪, নাসির ১/৪৩, সাজেদুল ১/৪৯)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুলনা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ