পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুলনায় যত্রতত্র নদী ও খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় বোরো মৌসুমের শুরুতেই সেচ সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। একদিকে ডিজেলের মূল্য দ্বিগুন করেছে সরকার, বেড়েছে সব ধরণের কৃষি উপকরণের দাম, অন্যদিকে পানির উৎস সঙ্কুচিত হয়ে পড়ায় কৃষকেরা বোরো আবাদে নেমে বিপাকে পড়েছে। কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক পানির উৎস পুকুল খাল বিল সব শুঁকিয়ে গেছে। মাঠ ঘাট ফেঁটে চৌচির হয়ে পড়েছে। এ বছর পানির অভাবে হালচাষ ও চারা রোপণ করতে পারছেন না তারা। এ অবস্থায় বোরো আবাদ কতটা লাভজনক হবে, তা নিয়ে তারা শঙ্কায় রয়েছেন।
খুলনার রূপসা, পাইকগাছা, তেরখাদাসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, পানি ছাড়াই এক প্রকার শুষ্ক জমিতে হালচাষ করছেন কৃষক। ফলে পানির অভাবে জমিতে পর্যাপ্ত কাদা তৈরি হচ্ছে না। এর ফলে বীজতলা তৈরিতে বিঘেœর সৃষ্টি হচ্ছে। আবার কোন ভাবে বীজতলা তৈরি করা হলেও, চারা রোপণ সম্ভব হচ্ছে না পর্যাপ্ত পানির অভাবে। কৃষকরা সেচযন্ত্র চালালেও ডিজেলের অত্যাধিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই খুব অল্প সময় জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হচ্ছে। অন্যদিকে, নদী ও খালে প্রভাবশালীরা বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় পানি নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। রাতে কুয়াশা ও শিশির মাঠ কিছুটা ভেজালেও বোরো বীজতলায় কোল্ড ইনজ্যুরির আশঙ্কা রয়ে যাচ্ছে। ফলে বীজতলাকে বড় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হচ্ছে।
তেরখাদা উপজেলার বারসাত গ্রামের কৃষক নওয়াব আলী বিশ্বাস বলেন, তার ২৩ বিঘা জমির পাশের খাল শুঁকিয়ে গেছে। সেখান থেকে পানি নেয়ার সুযোগ নেই। কিছুদূরে পানির আরেকটি উৎস আছে। কিন্তু সেখানে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। পানির জন্য জমিতে বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না। রূপসা উপজেলার সামন্তসেনা গ্রামের কৃষক আজিজুল হক ও নারায়ন জানান, গতবার পৌষ মাস পর্যন্ত জমিতে পানি ছিল। কিন্তু এবার অগ্রহায়ণের শেষভাগেই জমির পানি নেমে গেছে। প্রতিবার এই সময়ে পুকুর ডোবাতে পানি থাকে। এবার নেই। ডিজেলের দাম প্রায় দ্বিগুন। সেচ দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া শ্যালো বা ডিপ টিউবওয়েলেও পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। সব মিলিয়ে আমরা খুব সমস্যায় আছি।
এদিকে, ডিজেলের সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েছে সব ধরণের কৃষি উপকরণের দাম। কৃষকরাও বোরো আবাদের ভরা মৌসুমে এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও বিপাকে রয়েছেন। পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কৃষক আশরাফুল আলম জানান, শুধু সেচ দিয়ে বোরো আবাদ হয় না।
এর জন্য বীজ, সার, কীটনাশক প্রয়োজন হয়। সব কিছুর দাম বেড়েছে। আগে যদি এক বিঘা জমিতে ৪ হাজার টাকা খরচ হতো, এখন খরচ হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। খরচ পুষিয়ে লাভ করা দূরহ হয়ে পড়েছে। একই ইউনিয়নের গড়ইখালি ইউনিয়নের কৃষক প্রদীপ লাল জানান, আগে ‘ জন ’ (মজুরীর বিনিময়ে কাজ করতে নেয়া ব্যক্তি) নিতে হলে সারাদিনে একেকজনকে দিতে হত ৩ থেকে ৪শ’ টাকা। এখন ৬শ’ টাকার নিচে কেউ কাজ করতে চায় না। জিনিষপত্রের দাম বেড়েছে। আমরা কৃষকেরা খুব দূরবস্থায় রয়েছি। গত বছরের বোরো ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন ডুমুরিয়া উপজেলার খামারবাটি গ্রামের কৃষক প্রশান্ত মÐল। তিনি বলেন, ‘১২ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। মাঠে ধানও মোটামুটি ভালো হয়েছিল। কিন্তু সে বার করোনার কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। ধান কাটতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। গেলবার ধান চাষের খরচা তুলতে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। সব ক্ষতি পোষাতে এ বছর আবারও বীজতলা তৈরি করে বোরো আবাদ করেছি। ঠিকমত সেচ পেলে ভাল আবাদ হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, খুলনার উপ পরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এখনও সেচ সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেনি। সেচ সমস্যায় কৃষকদের সম্ভব সব ধরণের সহায়তা দেবে কৃষি বিভাগ। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় কৃষকদের খোঁজ খবর রাখছেন। জেলায় প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।