Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন বছরের প্রারম্ভে স্বপ্নের শীতলক্ষ্যা সেতুর কাজ শুরু

| প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ দিয়ে শীতলক্ষ্যা সেতুর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হবে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শীতলক্ষ্যা সেতু প্রকল্পের পরিচালক ইকবাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের ব্যাপার সকল কিছু চূড়ান্ত করা হয় এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকল্পের ঠিকাদারের সাথে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটি আলোচনায় বসে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যাদেশ প্রদান করবেন। ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত: নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর সেতু নির্মাণের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান। গত ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল তিনি মারা গেলে তার শূন্য আসনে উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদ সদস্য হয়ে আসে তার ছোট ভাই সেলিম ওসমান। সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের পর সেলিম ওসমান নাসিম ওসমানের অসম্পন্ন থাকা স্বপ্নকে বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে আসছিলেন। ফল প্রসূত ২০১৫ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় উপস্থিত জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা শীতলক্ষ্যা সেতুটি মরহুম নাসিম ওসমানের নামে নামকরণের দাবি করে ছিলেন।
জানা গেছে, বৈদেশিক অর্থায়ন না পাওয়া, প্রকল্প পরিচালক বদলি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা ও রেলওয়ের জমি না পাওয়ার কারণে ৭ বছরে নারায়ণগঞ্জবাসীর বহুল প্রত্যাশিত শীতলক্ষ্যায় তৃতীয় সেতু প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছিল মাত্র ২১ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের প্রচেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জবাসীর স্বপ্নের এ সেতুর জট খুলেছে। পাওয়া গেছে সৌদি উন্নয়ন তহবিলের (এসএফডি) ৩৩২ কোটি টাকা ঋণ। এখন ২০২০ সালের আগেই সেতুটি নির্মিত হবে।
শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম প্রান্তে সৈয়দপুর ও পূর্ব প্রান্তে মদনগঞ্জ সংযোগ করে চারলেন বিশিষ্ট সেতু নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সৌদি আরবের আর্থিক অনুদানে নির্মিত সেতুটি ১ হাজার ২৯০ মিটার দীর্ঘ। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। তবে ২০২০ সালের আগেই শীতলক্ষ্যা নদীর উপরে তৃতীয় সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। যেহেতু এসএফডি ঋণ পাওয়া গেছে এখন আর সেতুটি নির্মাণে কোনো বাধা নেই বলে জানা গেছে।
প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এসএফডির ফান্ড না পাওয়ার কারণেই প্রকল্পের কাজ বিলম্ব হয়েছে। রেলওয়ের জমি পেতেও বিলম্ব হয়েছিল। এখন সব কিছুর অবসান হয়েছে। আমরা আশা করছি ২০২০ সালের মধেই সেতুটি নির্মাণ করতে পারব। আমাদের সামনে আর কোনো বাধা নেই। রেলওয়ে জমি সংশ্লিষ্ট ডিসি অফিসকে বুঝিয়ে দিয়েছে।’
অন্যদিকে সওজ সূত্র জানায়, সাত বছরে মোট ছয় বার প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন করা হয়েছে। ২০১১ সালে সাইদুল হককে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এর পর পর্যায়ক্রমে ছয়বার প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন করা হয়।
যাদের কর্মকাল সর্বোচ্চ ১ বছর ৮ মাস ১০ দিন এবং সর্বনিম্ন ৩ মাস ছয় দিন। এভাবে ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদলি কাম্য নয় বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পের অগ্রগতির বদলে মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যেই সাত বছর অতিক্রম করেছে।
সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি নভেম্বর ২০১০ সালে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৭৭ কোটি ৬২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। তৃতীয় সেতুটি ২০১৩ সালে নির্মাণ করার কথা ছিল। অথচ সাত বছরে প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২১ শতাংশ। এর পরে সেতুটি নির্মাণের সময় বৃদ্ধি করা হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। একই সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩৯ কোটি ৬৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। তৃতীয়ধাপে ব্যয় ব্যতিরেকে আবারও ছয় বছর সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সেতুটি নির্মাণে ৩২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুসহ অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণের কথা ছিল। এ কাজের দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ করে ঠিকাদার নির্বাচনের জন্য উন্নয়ন সহযোগী সৌদি উন্নয়ন তহবিলের (এসএফডি) সম্মতি নেয়া হয় ২০১৬ সালে। অথচ এখন নতুন করে এসএফডির সঙ্গে সম্পন্ন ঋণচুক্তির মেয়াদ ২০১৮ সাল পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নতুন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ