নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা নিশ্চিত করার হাতছানি ছিল খুলনার সামনে। তবে ম্যাচটি ড্র হওয়ায় সে সুযোগ হাতছাড়া হলো রাজ্জাকের দলের। প্রথম স্তরে ওঠার সুসংবাদ পেতে পারত রংপুরও। তবে দুর্দান্ত ডাবল সেঞ্চুরির পরও জয় পেয়েও সেই সুসংবাদ পেতে অপেক্ষা বাড়লো নাসিররা। এতকিছুর পরও শেষ দিনে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে চিটাগাংয়ে। জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যেন ঢেউ লেগেছিল মেলবোর্নের। পাকিস্তানের বিপেক্ষ এদিন রোমাঞ্চ ছড়ানো এক টেস্ট জিতেছে যে কৌশলে অস্ট্রেলিয়া, সেই একই রণদীক্ষা নিয়ে নিশ্চিত ড্র হওয়া ম্যাচ জিতে নিয়েছে রাজশাহী।
৮৫ রানে এগিয়ে থেকে চট্টগ্রাম তাদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে। তৃতীয় দিন শেষে তিন উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২২৯। আগের দিনে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তাসামুল (৫৯*) ও ইয়াসির আলী (৭৮*) গতকাল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। ১০৪ ও অপরাজিত ১০০ রানের দু’টি দারুণ ইনিংস খেলেন ২৫ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটসম্যান তাসামুল। শতকটি পাওয়ার পথে অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে ইয়াসির আলীর সঙ্গে ২০৩ রানের জুটি গড়েন এই তরুণ। তার আগে বাংলাদেশের সাত ব্যাটসম্যান জাতীয় ক্রিকেট লিগে করেছেন জোড়া শতক। ২০০১-০২ মৌসুমে ময়মসিংহে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবেই দুই ইনিংসে শতক করেছিলেন মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। বর্তমান প্রধান নির্বাচক ২১০ রানের পর করেছিলেন ১১০। ২০১২-১৩ মৌসুমে বগুড়ায় ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ১৯২ ও অপরাজিত ১১৩ রান করেছিলেন তামীম ইকবাল। ১০৭ ও অপরাজিত ১১৫ রান করেছিলেন তিনি। সর্বশেষ এই কৃতিত্ব ছিল মার্শাল আইয়্যুবের। গত মৌসুমে মিরপুরে খুলনার বিপক্ষে।
এমন মাইলফলকের পর আরো রোমাঞ্চ অপেক্ষা করছিল অনেক ইতিহাসের সাক্ষি এই ভেন্যুটিÑ কে জানত! ৩৮৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রাজশাহী শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে। দুই ওপেনার ১৪৩ রানের জুটি গড়েন। মাইশুকুর রহমান ৮১ ও মিজানুর রহমান ৮০ রান করে আউট হয়েছেন। এরপর তৃতীয় উইকেটে বড় জুটি গড়ে ম্যাচ জেতান জুনায়েদ ও ফরহাদ। আগের ম্যাচে ৬২ রানের ইনিংস খেলা জুনায়েদ এদিন খেলেন অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংস। ৯৭ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে তিনি তার ইনিংস সাজিয়েছেন। ফরহাদ ছিলেন আরও বেশি বিধ্বংসী। ৭৭ বলে ৯ চার ও ৫ ছয়ে ১১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
এদিকে মুহাম্মদ শরীফের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চতুর্থ ইনিংসে খুলনাকে তিনশ’ ছাড়ানো লক্ষ্য দেয় ঢাকা। ম্যাচের শেষ সেশনে ওই লক্ষ্য তাড়ার কোনো চেষ্টাই করেনি আব্দুর রাজ্জাকের দল। তাই নিষ্প্রাণ ড্র হয়েছে জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডের এই ম্যাচ।
৩০৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২৬ ওভারে ৯২ রান করে খুলনা। দিনের শেষ ঘণ্টায় খেলা গড়াতেই ড্র মেনে নেন দুই অধিনায়ক।
ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ৫২ ওভারে ২৩৬ রানের কঠিন লক্ষ্যে দলকে পথে রেখেছিলেন আল আমিন জুনিয়র। আবু হায়দার এই তরুণ ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেয়ার পর আর জয়ের চেষ্টায় যায়নি বরিশাল। দ্বিশতক করে নিজেকে মেলে ধরা নাসির হোসেনের ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে রংপুর। সিলেটকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫০ রানে বেধে রাখা নাঈম ইসলামের দলের জয়টি ১০ উইকেটের। জাতীয় ক্রিকেট পঞ্চম রাউন্ডে শেষ দিন ২৫ রানের লক্ষ্য পায় রংপুর। ২.৩ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তাতে সহজেই পৌঁছে যায় দলটি। ১০ বলে চারটি চারে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন সায়মন আহমেদ। লিটন দাস অপরাজিত ৪ রানে।
পঞ্চম রাউন্ড শেষে পয়েন্ট টেবিল
স ং ক্ষি প্ত স্কো র
চট্টগ্রাম-রাজশাহী
চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস : ৩১৫। রাজশাহী প্রথম ইনিংস : ২৩০। চট্টগ্রাম দ্বিতীয় ইনিংস : ৯৬.৪ ওভারে ২৯৯/৩ (পিনাক ২৩, নাফিস ৬, জসিম ৫৭, তাসামুল ১০০*, ইয়াসির ১০৫*; সাকলাইন ২/১০২, মুক্তার ৭/২৯)। রাজশাহী দ্বিতীয় ইনিংস : ৬৫.২ ওভারে ৩৮৭/২ (মাইশুকুর ৮১, মিজানুর ৮০, জুনায়েদ ১০৪*, ফরহাদ ১১৩*; ইফতেখার ১/৭৯, মুজিবুর ১/৭৯)। ফল : রাজশাহী ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : জুনায়েদ সিদ্দিকী (রাজশাহী)।
ঢাকা-খুলনা
ঢাকা প্রথম ইনিংস : ৩৬৬। খুলনা ১ম ইনিংস : ৩৪২। ঢাকা দ্বিতীয় ইনিংস : ৮২.৩ ওভারে ২৭৮/৮ ডিক্লে. (সাইফ ২৬, জয়রাজ ১৫, রকিবুল ২৩, তাইবুর ২৫, জাহিদ ১৯, নাদিফ ৫৩, শরীফ ৮৬; আল আমিন ৪/৬৯, রাজ্জাক ২/৯৩, বিশ্বনাথ ১/৫৩)। খুলনা দ্বিতীয় ইনিংস : ২৬ ওভারে ৯২/৩ (মেহেদী ১০, হাসান ৫৫, এনামুল ১৪, ইফতেখার ১০*; নাজমুল ২/৩২, তাইবুর ১/২১)। ফল : ড্র। ম্যাচ সেরা : রকিবুল হাসান (ঢাকা)।
ঢাকা মেট্রো-বরিশাল
ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস : ২৯২। বরিশাল প্রথম ইনিংস : ২৮০। ঢাকা মেট্রো দ্বিতীয় ইনিংস : ৭০.১ ওভারে ২২৩ (মারুফ ১২, মার্শাল ৫৪, মেহরাব জুনি. ৩৯, আশরাফুল ২৪, সৈকত ৩৩, সানি ১৯; তৌহিদ ১/২৮, সালমান ১/৪৫, মনির ৩/৬৮, শাওন ১/২৪, সোহাগ ৩/৫৩)। বরিশাল দ্বিতীয় ইনিংস : ৩৭ ওভারে ১৭১/৬ (শাহিন ২৭, মাহমুদ ৩১, আল আমিন জুনিয়র ৬৯, সোহাগ ২৬; হায়দার ৩/৫১, সানি ২/৫৩)। ফল : ড্র। ম্যাচ সেরা : আল আমিন জুনি. (বরিশাল)।
সিলেট-রংপুর
সিলেট প্রথম ইনিংস : ২৭২। রংপুর প্রথম ইনিংস: ১১৯ ওভারে ৩৯৮/৯ ডিক্লে.। সিলেট দ্বিতীয় ইনিংস : ৫৮.৪ ওভারে ১৫০ (ইমতিয়াজ ২৪, কাপালী ৩৫, জাকের ২৬, ফেরদৌস ৩০, সাদিকুর (আহত অনুপস্থিত); সাদ্দাম ১/৩৬, সাজেদুল ৩/৩৪, শুভ ১/১১, আলাউদ্দিন ২/১৪)। রংপুর দ্বিতীয় ইনিংস : ২.৩ ওভারে ২৬/০ (সায়মন ২১*, লিটন ৪*; কাপালী ০/১৯, ইমতিয়াজ ০/৬)।
ফল : রংপুর ১০ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : নাসির হোসেন (রংপুর)।
পঞ্চম রাউন্ড শেষে পয়েন্ট তালিকা
প্রথম স্তর
দল ম্যাচ জয় হার ড্র পয়েন্ট
খুলনা ৫ ১ ০ ৪ ৪৪
ঢাকা ৫ ১ ০ ৪ ৩৭
বরিশাল ৫ ০ ১ ৪ ৩২
ঢাকা মেট্রো ৫ ০ ১ ৪ ২৬
দ্বিতীয় স্তর
রংপুর ৫ ৩ ০ ২ ৬২
রাজশাহী ৫ ৩ ০ ২ ৫৯
চিটাগাং ৫ ০ ৩ ২ ২৭
সিলেট ৫ ০ ৩ ২ ২৫
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।