বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি)’র খুলনা বিভাগীয় বিভিন্ন পদবীর ২ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার হুজি-বি'র সক্রিয় সদস্যরা হলেন- আব্দুল কুদ্দুস (৫৭), ও মো. সিরাজুল ইসলাম ওরফে সালাউদ্দিন (৩৫)। রোববার রাতে রাজধানীর মালিবাগে গোপন বৈঠকের সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব বলছে, কুদ্দুসের নামে ২০০৭ সালে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় একটি হরকাতুল জিহাদ সংশ্লিষ্ট জঙ্গি মামলা হয় এবং আদালত ওই মামলায় যাবজ্জীবন দেন। সে ২০০৭ সাল থেকে ১০ বছর ২ মাস সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে জেল হাজত থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি)’র সাংগঠনিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুল কুদ্দুস হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি)’র যশোর জেলার আঞ্চলিক ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। পাশাপাশি সে যশোর জেলার শেকহাটি এলাকায় ‘ওবায় বিন কাব’ মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার নামে ২০০৭ সালে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় একটি হরকাতুল জিহাদ সংশ্লিষ্ট জঙ্গি মামলা হয় এবং আদালত কর্তৃক উক্ত মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, কুদ্দুস ২০০৭ সাল থেকে ১০ বছর ২ মাস সাজা ভোগ করে ২০১৮ সালে জেল হাজত থেকে মুক্তি পেয়ে পুনরায় হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি)’র সাংগঠনিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়ে দল পূণঃগঠনে যশোর, মাগুরা এবং নড়াইল জেলার বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসায় নিয়মিত হালাখা (গোপন বৈঠক) করতে থাকে। উক্ত হালাখা গুলোতে ঢাকা থেকে উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করত। হালাখার স্থানসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল যশোর সীমা টেক্সটাইলের মসজিদ, যশোর নরের মহাসড়কের বেইলি ব্রিজের ডান পাশের ছোট মসজিদ, যশোর নিউমার্কেট এলাকার মারকাজ মসজিদ।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, ২০২২ সাল নাগাদ সে মোটামুটি ভাবে অত্র এলাকায় একটি শক্তিশালী হুজি-বি ইউনিট গঠন করতে সক্ষম হয়। কুদ্দুস মাদ্রাসার যুবদের মনে সমাজ বিদ্বেষী মনোভাব ছড়িয়ে দিত এবং প্রচলিত কলুষিত সমাজের বিরুদ্ধে জঙ্গী তৎপরতা চালানোর মাধ্যমে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করার কথা বলে তাদের মগজ ধোলাইয়ের মাধ্যমে হুজি-বি’তে অংশগ্রহণ করাত।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার সিরাজুল ইসলাম ২০০১ সালে যশোর কোল্ডস্টোরেজের নাইটগার্ড হিসেবে চাকরি করত। সে চাকরী থাকা অবস্থায় ২০০১ সালে উক্ত কোল্ডস্টোরেজের নাইট গার্ডের তৎকালীন প্রধান মাধ্যমে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি) সংগঠনে যোগদান করে। সে যশোর জেলার প্রধান হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজি-বি)’র রিক্রুটার এবং অর্থনৈতিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল।
এছাড়াও বিদেশী বিভিন্ন জঙ্গী সংগঠনের সাথে যোগসাজসে হুজি-বি’র অভ্যন্তরীন ব্যয়ভার বহনের অর্থ যোগানের ব্যবস্থাও সে করত বলে জানায়। সে ছদ্মবেশে রং মিস্ত্রির কাজ করে এবং হুজি-বি’র সাংগঠনিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল গোয়েন্দা নজরদারী চালায়। ২০১০ সালে তার নামে একটি বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। উক্ত মামলায় যশোর কোতয়ালী থানা কর্তৃক ২০১১ সালে গ্রেপ্তার হয় এবং ২০১২ জামিনে মুক্ত হয়ে মামলাটি আর কোন শুনানিতে হাজির হয়নি। তখন থেকেই সে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় পলাতক অবস্থায় আত্মগোপনে থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে থাকে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারের প্রকৃত নাম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম হলেও আত্মগোপনে থাকাকালীন সে সালাউদ্দিন ওরফে রিয়াজুল ইসলাম ওরফে বিশ্বাস ওরফে আমির ওরফে আব্দুল্লাহ প্রভৃতি ছদ্মনাম ব্যবহার করত।
র্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ২০২২ সাল থেকে জঙ্গী আব্দুল কুদ্দুস এবং সিরাজুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকা আরও বেশ কয়েক জন শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গী সদস্যরা মিলে একটি বড় ধরনের জঙ্গী হামলার পরিকল্পনা করে আসছিল। সেই পরিকল্পনাকে সফল করার জন্য ইতোমধ্যে তারা বেশ তৎপরতা চালাতে শুরু করে এবং নিয়মিত হালাখার মাধ্যমে তাদের কর্ম পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ, কার্যপদ্ধতি এবং কর্মী সংগ্রহের কাজ ব্যপকভাবে বেগবান করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং নাশকতামূলক এই জঙ্গী গ্রুপটির কার্যক্রমের সন্ধান পায়। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া, যশোর এবং মাগুরা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের করে। সোর্সের দেয়া তথ্য, গোয়েন্দা নজরদারি এবং ডিজিটাল সার্ভেইলেন্স এর মাধ্যমে মালিবাগ এলাকা থেকে গোপন বৈঠকে মিলিত হওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।