Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছোট হয়েও বড় কাজ! কম্পন থেকে বেঁচে জমানো অর্থ ত্রাণসাহায্যে দিল তুরস্কের নাবালক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৯:১৯ পিএম

ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে নিজে প্রাণে বেঁচে ফিরেছে। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেই হয়ত ৯ বছরের শিশু বুঝতে পেরেছে, জীবনের মূল্য কতখানি। আর বাড়ি ফিরে নিজের জমানো অর্থের সবটাই সে দিয়ে দিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলার ত্রাণ তহবিলে! সেইসঙ্গে একটি মন ভাল করা চিঠিও লিখেছে তুরস্কের ওই শিশু। যা দেখে আপ্লুত নেটদুনিয়া। এমনকী উদ্ধারকারী দলও ছোট ছেলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

আলপার্সলান এফি দেমির। তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমের দুজসা প্রদেশের বাসিন্দা। গত নভেম্বরে যখন ৫.৯ মাত্রার কম্পনে কেঁপে উঠেছিল দেশটি, সেসময় সে একটি তাঁবুতে ঘুমিয়েছিল। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল ষোল আনা। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যায় দেমির। মা-বাবার সঙ্গে শুরু করে নতুন জীবন। আর তারপর থেকেই দেমির নিজের মতো করে বুঝে গিয়েছিল, ভূমিকম্প কতটা বিপদের। কত কী এলোমেলো হয়ে যেতে পারে।

এবার আরও বেশি মাত্রার ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে তুরস্ক। ৬ ফুট সরে গিয়েছে নিজের অবস্থান থেকে। এখনও পর্যন্ত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গোটা দেশই পুনর্গঠনের সময় এসেছে। তা শুনেই দেমির ভেঙে ফেলেছিল নিজের পিগি ব্যাংক। এত বছর ধরে যে অর্থ সে জমিয়েছে, তার পুরোটাই তুরস্কের ত্রাণসাহায্যে দিয়েছে। দেমির তার মায়ের সঙ্গে তুর্কিশ রেড ক্রেসেন্টের দুজসা বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিল। সেখানেই সমস্ত অর্থ তুলে দিয়েছে।

সঙ্গে একটি নোট। তাতে লেখা – ‘দুজসায় যখন ভূমিকম্প হয়েছিল, আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। এরপর এই ভূমিকম্পের কথা শুনেও আমার একইরকম ভয় লেগেছিল। দেখলাম, আমার বয়সি কত ছেলেমেয়ের আর বড়রা কত কষ্ট পাচ্ছে। তখনই ঠিক করলাম, আমার পিগি ব্যাংকের সব অর্থ আমি দিয়ে দেব, যাতে ওরা ভালভাবে থাকতে পারে। ওই টাকায় আমি হয়ত চকোলেট কিনতাম, কিন্তু সেটা বড় নয়। ছোটরা শীতে কষ্ট পাবে, খাবার পাবে না – তা তো হতে পারে না। আমার কিছু জামা আর খেলনাও ওদের জন্য পাঠাব।’

গত রোববার মাঝরাতে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে তুরস্ক ও সিরিয়ার এখন অনেকটা সময় লাগবে। তার চেয়েও বেশি লাগবে অর্থ, ত্রাণ সাহায্য আর সকলের সহমর্মিতা। গোটা বিশ্বই তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর বড়দের মতোই বিপর্যস্ত মানুষজনকে উদ্ধার করতে নিজের পকেট শূন্য করে সমস্তটাই উজাড় করে দিয়েছে। ৯ বছরের ছোট্ট ছেলের এই ভূমিকায় ধন্য ধন্য করছে নেটিজেনরা। সূত্র: এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ