মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতীয় বহুজাতিক কোম্পানি আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দরপতন তৃতীয় সপ্তাহে গড়াল। সোমবারও এ কোম্পানি শেয়ারবাজারে ৫০ হাজার কোটি রুপি হারিয়েছে। আদানির জালিয়াতি তদন্ত এবং এ গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ করেছেন বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। এ সময় বহু বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। এদিকে, আদানির সাথে সম্পর্ক নিয়ে গতকাল ভারতের সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদির তীব্র সমালোচনা করেছেন ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী।
সোমবার কংগ্রেস পার্টির শত শত সদস্য গতকাল সারাদেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বীমা কোম্পানি লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বেশ কয়েকটি অফিসের বাইরে প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হন। দিল্লির বিখ্যাত যন্তর মন্তরে স্টেট ব্যাংকের লোগোসহ একটি স্যুটকেস পুড়িয়ে দেন তারা। সেখানে প্রতিবাদকারীরা গৌতম আদানির বিরুদ্ধে সেøাগান দেন। কেউ কেউ ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে গেলে পুলিশ তাদের আটক করে। বিরোধী সদস্যদের হট্টগোলের মধ্যে ভারতের সংসদের উভয় কক্ষ এদিন টানা তৃতীয় দিনের মতো স্থগিত করতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শর্ট-সেলার হিনডেনবার্গ রিসার্চ গত ২৪ জানুয়ারি আদানির জালিয়াতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে শেয়ারবাজার খোলা ছিল ৮ দিন। প্রতিদিনই আদানির শেয়ারের দাম বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কমেছে।
গতকালও আদানি গোষ্ঠীর ফ্ল্যাগশিপ কোম্পানি আদানি শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমেছে। আট ট্রেডিং সেশনে আদানি গোষ্ঠীর সম্মিলিত বাজার মূলধন ৯.৫৮ ট্রিলিয়ন রুপি কমেছে। গৌতম আদানির ব্যক্তিগত সম্পদও অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। কিছুদিন আগে তিনি বিশ্বের তিন নম্বর শীর্ষ ধনী থাকলেও এখন ২০ এর নিচে নেমে গেছেন। তার সম্পদ ১২৭ বিলিয়ন ডলার থেকে নেমেছে ৬০ বিলিয়নের নিচে।
এদিকে, সদ্য কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ শেষ করেছেন রাহুল গান্ধী। দক্ষিণ ভারতের কন্যাকুমারীকা থেকে শুরু করে কাশ্মীর পর্যন্ত করেছেন পদযাত্রা। আর তার প্রশ্ন, তিনি যেখানে যেখানে গিয়েছেন, সকলেই তাকে গৌতম আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন করেন। সেই কথা প্রসঙ্গে সংসদে নিজের ভাষণে গৌতম আদানি ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাহুল। ধনকুবের গৌতম আদানির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ক নিয়ে এদিন সংসদে কার্যত বিজেপির দিকে গোলা ছোঁড়েন রাহুল।
লোকসভায় রাহুল বলেন, ‘তামিলনাড়ু, কেরলা থেকে হিমাচল প্রদেশ, আমরা সব জায়গায় শুনেছি একটাই নাম আদানি। সারা দেশে শুধু আদানি.. আদানি.. আদানি। মানুষ জিজ্ঞাসা করেছেন, আদানি যে ব্যবসায় প্রবেশ করেন, তাতেই সাফল্য, কখনও ব্যর্থ হন না।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গৌতম আদানির সম্পর্ক নিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘সম্পর্ক শুরু হয়েছিল অনেক বছর আগে, যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। একজন মানুষ কাঁদে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মোদির সঙ্গে, অত্যন্ত অনুগত প্রধানমন্ত্রীর, সাহায্য যুগিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে রিসারজেন্ট গুজরাটের আইডিয়ায়। আসল ম্যাজিক তো শুরু হল যখন প্রধানমন্ত্রী হয়ে মোদি ২০১৪ সালে এলেন দিল্লিতে।’
রাহুলের টার্গেটে এদিন ছিল মোদি সরকার। তিনি অভিযোগ তোলেন, আদানিকে সুবিধা পাইয়ে দিতে সরকার নিয়মের পরিবর্তন করেছে। উল্লেখ্য, যে সংস্থার বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে কোনও অভিজ্ঞতা নেই কাজের তাদের আগে বিমানবন্দরের উন্নয়নের কাজ দেয়া হত না। সেই প্রসঙ্গে রাহুল বলছেন, ‘এই নিয়ম পাল্টেছে, আর আদানিকে ছয়টি বিমানবন্দর দেয়া হয়েছে। এরপর ভারতের সবচেয়ে বেশি লাভযোগ্য বিমানবন্দর মুম্বাই বিমানবন্দর জিভিকের থেকে ছিনিয়ে আদানিকে দিয়েছে ভারত সরকার, সিবিআই, ইডিকে ব্যবহার করে।’ সূত্র : টিওআই, ইকোনমিক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।