Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কেন এত ভয়াবহ হলো তুরস্কের ভূমিকম্প?

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ২:৪২ পিএম

সোমবার ভোরে সিরিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে আঘাত হানা একটি বড় ধরণের ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে। তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর আরো বেশ কয়েকটি আফটারশক বা ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন অনুভূতি হয়েছে। এর মধ্যে একটি কম্পন ছিল মূল ভূমিকম্পের মতোই শক্তিশালী।

এটি একটি বড় ধরণের ভূমিকম্প ছিল। যার মাত্রা ছিল ৭.৮, যেটি ‘উল্লেখযোগ্য’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। ফল্ট লাইন বরাবর প্রায় ১০০ কিলোমিটার ধরে এটি আঘাত হেনেছে এবং এর কারণে ভবনগুলোতে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশনের প্রধান অধ্যাপক জোয়ানা ফাউর ওয়াকার বলেছেন, ‘যে কোনো বছরের তুলনায় সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প। গত ১০ বছরের মধ্যে মাত্র দুটি ভূমিকম্প এ মাত্রার ছিল, আর এর আগের ১০ বছরে মাত্র চারটি ভূমিকম্প এ মাত্রার ছিল।’

তবে শুধু কম্পনের শক্তির কারণেই এতো বেশি ধ্বংসযজ্ঞ হয়নি। এই ঘটনাটি ঘটেছে ভোরের দিকে, যখন মানুষ ঘরের ভেতরে ঘুমাচ্ছিল। ভবনের দৃঢ়তাও একটি বিষয়। পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভলকানো এন্ড রিস্ক কমিউনিকেশন বিভাগের রিডার ড. কারমেন সোলানা বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত দক্ষিণ তুরস্ক এবং বিশেষ করে সিরিয়ায় অবকাঠামোগুলো খুব একটা ভূমিকম্প প্রতিরোধী নয়। তাই জীবন বাঁচানো এখন নির্ভর করবে উদ্ধার তৎপরতার উপর। জীবিতদের উদ্ধারে পরবর্তী ২৪ ঘন্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৪৮ ঘণ্টা পর জীবিত মানুষের সংখ্যা অনেক কমে যায়।’

এটি এমন একটি অঞ্চল যেখানে গত দুইশো বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে কোনও বড় ভূমিকম্প হয়নি বা কোনও সতর্কতা সংকেতও ছিল না। তাই প্রায়ই ভূমিকম্প মোকাবেলা করে এমন অঞ্চলের তুলনায় এখানকার প্রস্তুতির মাত্রা বেশ কম হবে।

ভূমিকম্পের কারণ কী?

পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ আলাদা বিট দিয়ে গঠিত, যাকে প্লেট বলা হয়, যা একে অপরের পাশাপাশি অবস্থান করে। এই প্লেটগুলি প্রায়শই নড়াচড়া করার চেষ্টা করে। কিন্তু পাশে থাকা অন্য আরেকটি প্লেটের সাথে ঘর্ষণের মাধ্যমে এই নড়াচড়া প্রতিরোধ করা হয়। তবে চাপ বেশি বেড়ে গেলে কখনো কখনো একটি প্লেট হঠাৎ করে ঝাঁকুনি দেয়ায় ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগ সরে যায়। এবার এরাবিয়ান প্লেটটি উত্তর দিকে সরে যায় এবং উত্তর দিকে সরে যাওয়া আনাতোলিয়ান প্লেটে গিয়ে ধাক্কা দেয়। প্লেটগুলোর এ ধরণের ঘর্ষণের কারণে অনেক ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছে।

এর কারণে ১৮২২ সালের ১৩ই অগাস্ট ৭.৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল যা সোমবার হয়ে যাওয়া ভূমিকম্পের তুলনায় বেশ কম। তা সত্ত্বেও, উনিশ শতকের ভূমিকম্পের ফলে এলাকার শহরগুলির প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল, শুধু আলেপ্পো শহরেই সাত হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। ক্ষতিকর আফটারশক প্রায় এক বছর ধরে চলতে থাকে। বর্তমান ভূমিকম্পের পরে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি আফটারশক হয়েছে এবং বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে, এটি এ অঞ্চলে এর আগে হওয়া ভূমিকম্পের মতোই হবে। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ