Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে ইউটিউব তারকাকে খুন করলেন বাবা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১১:৫৭ এএম

তিবা আল-আলীর বয়স ২২ বছর। ইরাকের দিওয়ানিয়া প্রদেশের এই বাসিন্দা ছিলেন জনপ্রিয় একজন ইউটিউব তারকা। তবে তিবার পরিবার তার জীবনযাপন পছন্দ করত না। পরিবার মনে করত, এই মেয়ের কারণেই তাদের সম্মানহানি হচ্ছে। তাই পরিবারের সম্মান রক্ষার নামে তাকে হত্যা (অনার কিলিং) করা হয়েছে।
ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাদ মান গত ৩১ জানুয়ারি তিবাকে হত্যা করা হয়। তিবাকে হত্যা করেছেন তার বাবা।
ইরাকের নাগরিক হলেও তিবা বসবাস করতেন তুরস্কে। সম্প্রতি তিনি ইরাকে এসেছিলেন। এর মধ্যেই পরিবারের সঙ্গে তিবার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ শুরু হয়। পুলিশের পক্ষ থেকেও মধ্যস্থতা করে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি। অবশেষে তিবার বাবা তাকে হত্যা করেন। খুনের ঘটনার আগে তিবা ও তার বাবার মধ্যে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড প্রকাশ হয়েছে। যদিও অডিও রেকর্ডে তিবা ও তার বাবা কথা বলছিলেন কি না তা প্রমাণিত নয়। তবে ওই কথোপকথনে তিবার বাবার কথা শুনে মনে হয়, মেয়ে তুরস্কে একা থাকবেন, এটা নিয়ে তিনি খুশি নন। এ জন্য আপত্তি জানাচ্ছেন তিনি।
সাদ মান বলেন, ‘এক দিন আগেই পুলিশ তিবাদের বাড়িতে গিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করেছিল। পরদিন একটি খবর শুনেই আমরা চমকে যাই। জানা যায়, তিবাকে তার বাবা হত্যা করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। ’ তবে বিরোধ কী নিয়ে ছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
ইউটিউবে অনেক মানুষ তিবাকে অনুসরণ করতেন। তিবা তার ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ভিডিও পোস্ট করতেন। বেশির ভাগ ভিডিও ছিল তিবার দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে। মাঝেমধ্যে তিবার সঙ্গে ভিডিওতে একজনকে দেখা যেত, যিনি তিবার বাগদত্তা ছিলেন বলে জানায় তাঁর পরিবার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র এএফপিকে নিশ্চিত করেছে, তিবার সঙ্গে তার পরিবারের এ বিরোধে কয়েক বছরের পুরোনো, ২০১৫ সালের।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ২০১৭ সালে পরিবারের সঙ্গে তুরস্কে যান তিবা। সেখানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছুদিন থাকার পর দেশে ফেরার সময় পরিবারের সঙ্গে ফিরতে আপত্তি জানান তিনি। পরিবর্তে তিবা তুরস্কে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিষয়টি নিয়ে বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বিরোধেও জড়ান।
তিবার মৃত্যুর জেরে ইরাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দেশটির মানুষ বাবার হাতে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছেন। সাধারণ ইরাকি ছাড়া দেশটির রাজনীতিক ও মানবাধিকারকর্মীরা প্রতিবাদে সোচ্চার। আজ রোববার রাজধানী বাগদাদে বিক্ষোভ আহ্বান করা হয়েছে।
তিবার মৃত্যুর ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। ইরাকের মানবাধিকার সংস্থা দ্য ইরাকি অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস তিবার মৃত্যুতে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে।
এদিকে লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তিবার মৃত্যুর এ ঘটনাকে ‘ভয়ংকর’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরাক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ