মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সুইডেন এক উগ্র ডানপন্থী রাজনীতিবিদকে সমাবেশে কোরআন পোড়ানোর অনুমতি দেওয়ার পর সুইডেনের দ‚তাবাস বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে মুসলিম বিশ্ব। সুইডিশ-ড্যানিশ রাজনীতিবিদ রাসমুস পালুদান শনিবার সুইডিশ রাজধানীতে তুরস্কের দ‚তাবাসের সামনে ইসলামিক পবিত্র গ্রন্থের একটি অনুলিপিতে আগুন ধরিয়ে দেন। কয়েকদির আগে স্টকহোমে তুর্কি দ‚তাবাসের সামনে সুইডিশ রাজনীতিবিদ পালুদানকে শনিবার বিক্ষোভের অনুমতি দেয় সুইডেন। আর সেখানেই বিক্ষোভের নামে কোরআন অবমাননা করেন উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা রাসমুস পালুদান। সুইডেনের এমন পদক্ষেপে ক্ষোভে ফুঁসছে মুসলিম বিশ্ব। দেশে দেশে চলছে সুইডেনবিরোধী বিক্ষোভ। ইন্দোনেশিয়া এবং তুরস্ক উভয়েই শীঘ্রই তাদের সুইডিশ রাষ্ট্রদ‚তদের ডেকে পাঠায়।
তারপর থেকে পাকিস্তনি সহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে, আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুইডিশ সরকারকে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার এবং এই ধরনের জঘন্য ও উস্কানিম‚লক ইসলাম-বিরোধী ও মুসলিম-বিরোধী কাজ বন্ধ করার আহŸান জানিয়েছে। ইয়েমেনের সানায় স্টকহোমে কোরান পোড়ানোর প্রতিবাদে গতকাল হাজার হাজার জনতা প্রতিআদ করে। সোমবার বাগদাদে সুইডিশ দ‚তাবাসের বাইরে কয়েক ডজনের সমাবেশে একজন ইরাকি পুলিশ এবং সাতজন বিক্ষোভকারী আহত হন। বিক্ষোভকারীদের একটি সাইনবোর্ডে লেখা ছিল, ‹আমরা বাগদাদে সুইডিশ দ‚তাবাস বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।› ফিলিস্তিনে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পালুদানের কর্মকাÐের প্রতিবাদে সুইডিশ পতাকা পুড়িয়ে দিয়েছে এবং কোরআনের কপি তুলে ধরে।
ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুইডেনকে ন্যাটো সদস্যপদ পেতে সমর্থন না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে তুরস্ক। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে রেসেপ তায়েব এরদোয়ান বলেছেন যে, ন্যাটো জোটের সদস্যপদ পেতে সুইডেনকে কোনো ধরনের সমর্থন দেবে না তুরস্ক। তিনি আরও বলেন, ‘ন্যাটো সদস্যপদের জন্য আমাদের সমর্থন পাওয়ার আশা করা উচিত হবে না সুইডেনের। যারা আমাদের দ‚তাবাসের সামনে অসম্মানজনক কাজ করেছে, তারা কোনো ধরনের সহায়তা পাবে না। কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার অধিকার কারও নেই।’ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বলেছেন যে, কোরআন পোড়ানোর ঘটনাটি ন্যাটোর ঐক্যকে নষ্ট করার জন্য একটি ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা হতে পারে। নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেছেন যে, বিদ্বেষপ‚র্ণ এবং ঘৃণ্য›কাজটি তুরস্ক এবং সুইডেনের মধ্যে দ‚রত্ব স্থাপনের একটি উস্কানিদায়ক অভিপ্রায়ের কাজ।
দুই প্রতিবেশী দেশ সুইডেন ও ফিনল্যান্ড এতোদিন একযোগে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছিল। কিন্তু স্টকহোমে প্রথমে কুর্দিদের বিক্ষোভে এরদোয়ানের কুশপুতুল পোড়ানো এবং পরে গত শনিবার তুরস্ক দ‚তাবাসের কাছে কোরআন পোড়ানোর পর পরিস্থিতি বদলে গেছে। এর আগে, আঙ্কারায় সুইডেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর প‚র্ব নির্ধারিত সফর বাতিল করে তুরস্ক। দেশটি বলে যে, বৈঠকটি এর তাৎপর্য ও গূরুত্ব হারিয়েছে। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে আবেদন করে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড। সেসময় তুরস্ক বিরোধিতা করলেও, আলোচনার মাধ্যমে সে সংকট নিরসনের পথ তৈরি হয়। তবে সাম্প্রতিক ইসলাম বিদ্বেষী বিক্ষোভের জেরে ন্যাটো জোটে সুইডেনের সদস্যপদ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কারণ, নিয়ম হলো, প্রতিটি সদস্য দেশ সমর্থন করলে তবেই নতুন কোনো দেশ ন্যাটোর সদস্য হতে পারে। ফলে এরদোগান মত না বদলালে সুইডেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়া কঠিন।
এখন, সুইডেনকে ছাড়াই ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ফিনল্যান্ড। এক বিবৃতিতে ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেক্কা হাভিস্তো বলেছেন, ‘আমরা এখনো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। আমাদের দেখতে হবে, সুইডেনের আবেদন দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকে যাচ্ছে কি না।’ তিনি বলেছেন যে, যৌথ আবেদনপত্র এখনো তাদের কাছে প্রথম বিকল্প। কিন্তু সুইডেনের আবেদনপত্র দীর্ঘ সময়ের জন্য আটকে গেলে তারা অন্য বিকল্পের কথা ভাববেন। এদিকে, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলস্টর্ম জানিয়েছেন, তারা ফিনল্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ফিনল্যান্ড কী চায়, তা তারা বোঝার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতে ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ন্যাটোর সদস্য হতে না পারলে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের নিরাপত্তার প্রশ্ন আবার সামনে আসবে। এর জন্য ওই বিক্ষোভই দায়ী থাকবে।
এরআগে, পালুদান বলেছিলেন, ‘ইসলাম ও মুসলমান হল শত্রæ। সবচেয়ে ভালো হবে যদি এই পৃথিবীতে একজন মুসলমানও না থাকে। তাহলে আমরা আমাদের চ‚ড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।› পালুদান, যিনি ইতিমধ্যেই বর্ণবাদী আচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, গত বছর সুইডেনে দাঙ্গার উসকানি দিয়েছিলেন যখন তিনি মুসলিম পবিত্র রমজান মাসে দেশটিতে সফরে গিয়েছিলেন এবং প্রকাশ্যে কোরাআন পুড়িয়ে দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে পালুদানের নেতৃত্বে একটি সমাবেশে সুইডেনের সেই দাঙ্গায় ৪০ জন আহত হয়েছিল, যা পুলিশের কাছ থেকে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়ে পাল্টা-বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষ ঘটিয়েছিল। সূত্র: ডেইলি মেইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।