Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারাচ্ছেন শত শত সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:২৭ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক টেক কোম্পানি ফেসবুকের মেটা, গুগলের আলফাবেট, মাইক্রোসফট গত কয়েক মাসের মধ্যে কয়েক হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। কর্মী ছাঁটাই থেকে বাদ যায়নি অ্যামাজন ও ম্যাকডোনাল্ড’সের মতো কোম্পানিও।
এবার যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধাক্কা আসছে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর। মার্কিন প্রভাবশালী মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ভক্স মিডিয়া নিজেদের ৭ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে গত শুক্রবার। ভক্স মিডিয়ার মালিকানায় রয়েছে ভক্স অ্যান্ড দ্য ভার্জ ওয়েবসাইট, নিউইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিন এবং এর অনলাইন সংস্করণ।
ভক্স মিডিয়ার আগে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে সিএনএন, এনবিসি, এমএসএনবিসি, বাজফিড এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যম। অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা চিন্তা করেই মিডিয়া হাউজগুলো এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
শুক্রবার কর্মীদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় ভক্স মিডিয়ার সিইও জিম ব্যাংকঅফ বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আমাদের ব্যবসা ও ইন্ডাস্ট্রির ওপর প্রভাব ফেলায় ৭ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি আমরা।’
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বার্তা দেওয়ার মাত্র ১৫ মিনিট পর ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভক্স মিডিয়ায় বর্তমানে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৯০০ জন। ৭ শতাংশ ছাঁটাই মানে হলো ১৩০ জন চাকরি হারিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো অভিজ্ঞরাও এ থেকে বাদ যাননি। পুরস্কার বিজয়ী ও ভক্স মিডিয়ার হয়ে ৯ বছর কাজ করা সাংবাদিক মেগান ম্যাককরনকেও ছাঁটাই করা হয়েছে।
মেগান বর্তমানে ৩৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। যখন তিনি এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত থাকার কথা তখন দুশ্চিন্তায় সময় কাটাতে হচ্ছে। তবে ভক্স মিডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছাঁটাইকৃতদের আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
কানেক্টিকাটের কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কমিউনিকেশনের ডিন ক্রিস রাস বলেছেন, টেক কোম্পানি যেভাবে কর্মী ছাঁটাই করেছে মিডিয়ার ছাঁটাই ওইরকম নাটকীয় না। তবে গুগল ও মাইক্রোসফট ছাঁটাইয়ের যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি আসলে বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে যাওয়ারই ফল। মূলত অনিশ্চিত অর্থনীতির কারণে এমনটি হয়েছে।
ক্রিস রাস আরও বলেছেন, ‘বেশিরভাগ মিডিয়া ভেবেছিল তাদের ধারণা অনুযায়ী পরিসর বেড়েছে এবং তারা শ্রোতা, পাঠক অথবা দর্শক একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবে। কিন্তু এটি হয়নি। আর অর্থনীতির যে পরিস্থিতি তাতে এটি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।’
আরেকটি বিষয় হলো— ২০০৮ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগজনকহারে কমেছে সংবাদকর্মীর সংখ্যা। এ সময়ের মধ্যে সাংবাদিকের সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার থেকে ৮৫ হাজারে নেমে যায়। ২০২১ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। সংস্থাটি জানায়, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
মার্কিন সাংবাদিক সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা, পূর্ব এক বিবৃতিতে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছে, ‘সাংবাদিকতা দীর্ঘদিন চাপে রয়েছে। আর কিছু কোম্পানি মনে করছে, খরচ কমানোর এটিই এখন ভালো সময়— যা সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতার দুটিরই ক্ষতি করছে।’
সংগঠনটি জানিয়েছে, এনবিসি এবং এমএসএসনবিসি অন্তত ৭৫ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এছাড়া ওয়াশিংটন পোস্টের সিইও জানান, ২ হাজার ৫০০ কর্মীর মধ্যে ১ ডিজিট (১০ শতাংশের নিচে) কর্মী ছাঁটাই করবেন তারা।
গত ডিসেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের রোববারের বিশেষ ওয়াশিংটন পোস্ট ম্যাগাজিন ছাপানো বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন তাদের ৪ হাজার কর্মীর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ছাঁটাই করেছে। সূত্র: এএফপি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ