Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সোলেদারের নিয়ন্ত্রণ হারানোর কথা স্বীকার করলো ইউক্রেইন

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৯:২৬ এএম

পূর্ব ইউক্রেইনের দনবাস অঞ্চলের সোলেদার শহর থেকে পিছু হটার কথা স্বীকার করে নিয়েছে ইউক্রেইন। গত সপ্তাহে রুশ বাহিনী লবনখনির এই শহরটির দখল নেওয়ার দাবি করলেও ওই সময় ইউক্রেইন বলেছিল, সেখানে তাদের বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

ইউক্রেইনের যেসব অঞ্চলে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে সোলেদার তার অন্যতম।
সোলেদারের এই জয় রাশিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ইউক্রেইনে লড়াইরত রুশ সেনাদের মনোবল চাঙ্গা করতে। কারণ, গত কয়েকমাস ধরে সেখানে কেবল পরাজয়ই দেখছিল রুশ বাহিনী।

তাছাড়া, সোলেদার ও বাখমুত শহরের দখল নিতে পারলে সেটি হবে ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পথে রাশিয়ার জন্য বড় ধরনের অগ্রগতি। সোলেদার ও এর বিশাল লবন খনিগুলোর দখল রাশিয়ার জন্য সামরিক ও বাণিজ্যিকভাবেও মূল্যবান হবে।
যদিও ইউক্রেইনের সেনারা সোলেদারে তাদের পিছু হটাকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা বিবিসিকে বলেন, পরিকল্পিত পাল্টা আক্রমণের আগে তাদের এই পিছু হটে যাওয়া ‘নিয়ন্ত্রিত এবং যুদ্ধ কৌশলের অংশ’।
বিবিসি জানায়, সোলেদার ও প্রতিবেশী শহর বাখমুতে বন্দুক ও কামানের তুমুল লড়াই চলেছে। শহর দুটির ধূসর ও খসখসে মাঠ জুড়ে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের লড়াইয়ের চিহ্ন ছড়িয়ে আছে।

ইউক্রেইনের সেনাদের একটি ইউনিটের কমান্ডার আন্দ্রিয় বলেন, ‘‘এটা (রুশ বাহিনীর অবস্থান) খুব কাছে, এক কিলোমিটারের মধ্যে।”
সেখানে আসলে কী হচ্ছে সেটা নিশ্চিত হওয়া প্রায় অসম্ভব বলে জানিয়েছে বিবিসি। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ার শব্দ, মাথার উপর আওয়াজ, কামান ও রকেটের গোলা বিস্ফোরণের ক্রামগত শব্দ বলে দিচ্ছে রুশ বাহিনী খুব কাছেই অবস্থান করছে।
ইউক্রেইনের ৪৬তম এয়ার অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক প্রেস কর্মকর্তা বিবিসির প্রতিনিধিদের সঙ্গে সোলেদারের কাছে যুদ্ধ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে বলেন, ‘‘যুদ্ধক্ষেত্র ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে, আগে থেকে অবস্থান অনুমান করা যাচ্ছে না। কখনো কখনো এক দিনে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যুদ্ধ চলছে।”

সোলেদার শহরের ভেতর ও চারপাশ ঘিরে যে লড়াই চলছে তা ইউক্রেইনে এখন পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের অন্যতম। মূলত রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদের গোষ্ঠী ওয়াগনার গ্রুপ সেখানে লড়াই করছে এবং তাদের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা পাহাড়ি শহরটির নিয়ন্ত্রণ পেতে চলেছে।

এদিকে, সোলেদার শহর হতছাড়া হওয়ার কারণ হিসেবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউক্রেইনীয় সেনা অভিযোগ করে বলেছেন, বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে সমন্বয়ের ত্রুটির কারণে তারা সোলেদারে হেরে গেছে।
একই সঙ্গে তারা এটাও স্বীকার করেছে, রাশিয়া এখন সোলেদারের চেয়েও বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ শহর বাখমুতের দখল পেতে অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।

যদিও সোলেদারের কাছের গ্রামগুলোতে যুদ্ধরত ইউক্রেইনের কয়েকটি ইউনিট এখনো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা রুশ বাহিনী থেকে মাত্র কয়েকশ’ মিটার দূরে অবস্থান করছে।

আন্দ্রিয় বলেন, ‘‘এটি একটি নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি। আমি আমার কমান্ডারের প্রতি বিশ্বাস রাখছি। কখনও কখনও এক পা পিছিয়ে যাওয়া সত্যিই ভালো.... তারপর একটি পাল্টা আক্রমণ করে শত্রুকে গুঁড়িয়ে দেওয়া যাবে।” সূত্র : বিবিসি



 

Show all comments
  • Khondaker Shahjahan ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:৪৬ পিএম says : 0
    এরপর বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ হারালে ইউক্রেন এর জন্য মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Khondaker Shahjahan ২০ জানুয়ারি, ২০২৩, ৪:৩২ পিএম says : 0
    বাখমুতের দখল হারালে ইউক্রেন বাহিনীর বিপর্যয় তরান্বিত হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ