পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগ দল হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। বর্তমান সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এ সরকার পুলিশ, আমলাদের ওপর ভর করেছে। গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণ অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ জেগে উঠেছে। জনগণ এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের কাছ থেকে মুক্তি চায়। দুইবার জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে এ সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবীরা এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। এ সরকারকে পদত্যাগ করতেই হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন হতে হবে। সরকার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এটি করতে দেওয়া হবে না।
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে পূর্বঘোষণা অনুযায়ি গতকাল ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় শহরে গণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো। রাজধানীতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ১১টায়। তবে সকাল ৯টার মধ্যে ওই এলাকায় জড়ো হতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে রাজধানী ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনের দিকে আসতে থাকেন তারা। সকাল ১০টার মধ্যে নয়াপল্টনকে কেন্দ্র করে একদিকে নাইটিঙ্গেল মোড় অন্যদিকে ফকিরাপুল বাজার পর্যন্ত গণ অবস্থানের বিস্তৃতি ছাড়িয়ে যায়। নেতাকর্মীরা এই দীর্ঘ সড়কে পলিথিন, পেপার, কাগজ বিছিয়ে বসে পড়েন। তাদের কারো কারো হাতে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবির পোস্টার ছিল। ছিল তাদের মুক্তির দাবি সম্বলিত ফেস্টুনও। নেতা-কর্মীদের মাথা ছিলো লাল-সবুজ-হলুদ-নীল টুপি যা এই অবস্থান কর্মসূচিকে ভিন্ন রুপ দেয়। নেতা-কর্মীরা ‘হটাও হাসিনা, বাঁচাও দেশ, খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ’ ‘বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে’ ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ ‘জ্বালাও জ্বালাও আগুন জ্বালাও, শেখ হাসিনার গদিতে আগুন জ্বালাও’ ‘এই মুহুর্তে দরকার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ ‘মুক্তি মুক্তি মুক্তি চাই, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’, ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে পুরো এলাকা সরব করে রাখে।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিও। এক সময় নয়াপল্টন সড়কের এক পাশ পূর্ণ হয়ে নেতাকর্মীদের ভিড় সড়কের অপরপ্রান্তেও ছড়িয়ে পড়ে। মূল সড়কের পাশাপাশি আশপাশের প্রতিটি অলি-গলিতেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নিয়ে গণ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই নয়াপল্টন-নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল এলাকা লোকারণ্য হয়ে গেলে বেলা ১১টার পরিবর্তে সকাল সাড়ে ১০টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে গণ অবস্থান কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে বিএনপি। এর পর একে একে পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, জেলা ঢাকা মহানগর ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সাড়ে চার ঘণ্টার এই কর্মসূচির ফাঁকে ফাঁকে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাস শিল্পীরা দলীয় এবং দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করে।
১০ দফা দাবিতে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে এটি তার দ্বিতীয় কর্মসূচি। গত ২৪ ডিসেম্বর ৯ বিভাগীয় শহরে এবং ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় যুগপৎ আন্দোলনে প্রথম কর্মসূচি গণমিছিল করে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো।
যুগপৎ আন্দোলনের নয়া পল্টনের এই কর্মসূচির একই সময়ে গণতন্ত্র মঞ্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য প্রেসক্লাবের পূর্ব প্রান্তে, গণফোরাম আরামবাগে ইডেন কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, ১২ দলীয় জোট বিজয় নগরে পানি ট্যাংকের কাছে, সমমনা জাতীয়তাবাদী জোট পুরানা পল্টনে এবং এলডিপি কাওরান বাজারে এফডিসির কাছে নিজেদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি করে। কর্মসূচি উপলক্ষে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
গণ অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার পতন আন্দোলনে জনগণকে জেগে উঠার ডাক দিয়ে বলেন, আপনারা জেগে উঠেছেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। এখন আমাদেরকে আরো বেশি করে জেগে উঠতে হবে। আমরা আজকে সেই প্রস্তুতি নেই, আসুন আমরা জেগে উঠি। ১৯৭১ সালে যে স্বাধীনতার স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, এই স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করবার জন্য আসুন আমরা আজকে একটা নতুন বাংলাদেশ, একটা সত্যিকার অর্থেই জনগণের বাংলাদেশ, সত্যিকার অর্থেই একটা কল্যাণমূলক বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য, আমাদের সন্তানদের একটা সুন্দর ভবিষ্যত তৈরি করবার জন্য, তাদেরকে স্বপ্ন দেখানোর জন্য আমরা সবাই জেগে উঠি। জেগে উঠে আমরা বাধ্য করি এই স্বৈরশাসকের দুঃশাসনের তখতে তাউসকে সরিয়ে সেখানে একটা জনগণের সরকার, জনগণের পার্লামেন্ট গঠন করি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশের বিশিষ্ট নাগরিকেরা এগিয়ে আসতে শুরু করেছেন, তারা আজকে এই যে, অন্যায় হচ্ছে তার বিরুদ্ধে ৬০ জন দেশের বরণ্যে নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। আমি তাদেরকে এজন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই, কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের মিডিয়া-গণমাধ্যমে সকল কর্মী ভাইদেরকে তারা জনগণের আন্দোলনের খবর প্রচার করে জনগণকে জাগিয়ে তুলছেন। ধন্যবাদ জানাতে চাই, দেশের সকল মানুষকে যারা আজকে আমাদেরকে এই গণ-আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছেন।
আওয়ামী লীগ গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে: বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচয় দেয়। আমরা জানি যে, তারা অত্যন্ত পুরনো পরিচিত দল। কিন্তু এখন তারা সম্পূর্ণভাবে তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে, গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেজন্য তাকে এখন পুলিশ, আমলাদের ওপর নির্ভর করে তাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা জোর করে দখল করে রাখতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। তারা এই সরকারকে সরিয়ে, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য এবং মানুষের ভোটের অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য একমত হয়েছে। ১০ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে তারা এই আন্দোলনকে সফল করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৭ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। আমরা খুব পরিস্কার করে বলেছি, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচন করতে হবে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করে দিয়েছে, তারা রাষ্ট্রকে ধবংস করে দিয়েছে। সেজন্য আমরা বলেছি, রাষ্ট্রকে সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রের সংস্কারের বিভিন্ন বিষয় যেমন- প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, তাদের মেয়াদ দুই বার নির্ধারণ করাসহ বিভিন্ন সংস্কারের দিকগুলো তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
ওয়াসার এমডি তাকসিম প্রসঙ্গে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, এই সরকারের একজন অত্যন্ত আশ্রিত, শুনা যায় তিনি নাকী শীর্ষ নেতাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, ওয়াসার এমডি তাসকিম (তাকসিম আহমেদ খান)। তিনি আমেরিকাতে নাকী ১৪টা বাড়ি কিনেছেন। একটা বাড়ি নাকী ৫১৫ কোটি টাকা। আপনারা ভাবুন যে, কোন দেশে আমরা বাস করছি। দেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা, স্বায়েত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সরকারের কাছ থেকে বেতন নেন, সে আজকে শত শত কোটি টাকা, হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিদেশে বাড়ি বানাচ্ছেন। আর আজকে মানিলন্ডারিংয়ের জন্য ছোট-খাটো মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়। আর তারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়ে এই দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে ধবংস করেছে । প্রত্যেকটি ব্যাংক থেকে টাকা লুট করে তারা (ক্ষমতাসীনরা) বিদেশে পাচার করছে। সমস্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা নিয়ন্ত্রণ করে এখানে একটা লুটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। এই সরকারের লক্ষ্য একটা- তারা অন্যায়ভাবে বেআইনিভাবে জনগণের সমস্ত অধিকারকে হরণ করে, গণতান্ত্রিক অধিকারকে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা কী সেটা হতে দেবো? এখানে আমরা একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে দেবো না? ফরিদপুর ও ময়মনসিংহের গণঅবস্থানের কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকারি দলের হামলার ঘটনার নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব। একই সঙ্গে কারাগারে আটক বিএনপির আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম মোশাররফ হোসেন, খন্দকার আবু আশফাক, আবুল হোসেন, সেলিম রেজা হাবিব, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাবসহ বন্দি নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি জানান তিনি।
বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হয়েছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর এই নয়াপল্টনে মকবুলের লাশ পড়ে ছিল। সরকারের লেলিয়ে দেওয়া পুলিশ বাহিনীর গুলিতে শত শত কর্মী আহত হন। বহু নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের ছয় শতাধিক কর্মীকে অমানবিকভাবে রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি ইঙ্গিত করে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা টোকা দিয়ে নয়, ধাক্কা দিয়ে নয়, একটা সঠিক সাচ্চা ভালো নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই। আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল-মিটিংয়ের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন করে এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই। আমরা কোনো রকম উচ্ছৃঙ্খল-বিশৃঙ্খলতায় বিশ্বাস করি না।
তিনি বলেন, সরকারকে বলব, দয়া করে কোনো উস্কানি দেবেন না। যদি কোনো উস্কানি দেন এর ফলে কিন্তু ভালো হবে না। সুতরাং সাবধান হয়ে যান। বিএনপির ১০ দফা দাবি মেনে নেন এবং যদি ১০ দফা দাবি মেনে নিয়ে আপনারা নির্বাচন করেন, ভোট পান, ক্ষমতায় থাকতে আর অসুবিধা নেই। কিন্তু জোর করে আর ক্ষমতায় থাকার দিন শেষ। জোর করে আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না ইনশাল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা জানি, এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকলে এই ১০ দফা মানবে না। তাই আমাদের সামনে একটিই চ্যালেঞ্জ এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। আগামী দিনে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে এই সরকার শুধু বাংলাদেশের জনগণের কাছে নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও ধিকৃত, তারা সরকারকে দেখতে চায় না।
ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আফরোজা খানম রীতা, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, শিরিন সুলতানা, রকিবুল ইসলাম বকুল, মীর নেওয়াজ আলী, সাইফুল আলম নিরব, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, মজিবুর রহমান, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমূখ বক্তব্য দেন।
অঙ্গসংগঠনের মধ্যে মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, মহানগর বিএনপির নবী উল্লাহ নবী, যুব দলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, রাজিব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, তাঁতী দলের কাজী মুনীরুজ্জামান মুনীর, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, উলামা দলের মাওলনা আবুল হোসেন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কাদের গনি চৌধুরী, জিয়া পরিষদের আব্দুল কুদ্দুস, ড্যাবের আবদুস সালাম, এ্যাবের রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমূখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এই কর্মসূচিতে বিএনপির মনিরুল হক চৌধুরী, আসাদুজ্জামান রিপন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুম আহমেদ তালুকদার, আশরাফ উদ্দিন উজ্জ্বল, ডা. রফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ডা. দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন, রেহানা আক্তার রানু, শাম্মী আখতার, কাজী আবুল বাশার, মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, শ্রমিক দলের কাজী আমীর খসরু, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, যুবদলের মাহাবুবুল হাসান ভূইয়া পিংকু, আকরামুল হাসান মিন্টু প্রমূখ নেতারা ছিলেন।
১৬ জানুয়ারি বিক্ষোভ সমাবেশ: গণ অবস্থান কর্মসূচি থেকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেয়া অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও জোট। যুগপৎভাবে আগামী ১৬ জানুয়ারি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে এসব রাজনৈতিক দল। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, সরকার অন্যায়ভাবে গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। জনগণ আর পারছে না। ১৬ জানুয়ারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রসহ জেলা, উপজেলা, মহানগর, পৌরসভায় সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।
ইউট্যাবের সংহতি প্রকাশ: ১০ দফা দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির গণঅবস্থানে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে হোটেল ভিক্টোরির সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিএনপি আয়োজিত গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে অংশগ্রহণ করেন ইউট্যাবের নেতারা। ইউট্যাবের মহাসচিব প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খানের নেতৃত্বে এসময় প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, প্রফেসর ড. আব্দুর রশিদ, প্রফেসর ড. শামসুল আলম সেলিম, প্রফেসর ড. কামরুল আহসান, প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, প্রফেসর গোলাম রব্বানী, প্রফেসর ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীমসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
বিইআরসি ঘেরাও করবে গণতন্ত্র মঞ্চ: যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক বন্দি মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদী গণঅবস্থান করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে এবং ইমরান ইমনের পরিচালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের নূরুল হক নূর ও মুহম্মদ রাশেদ খানসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে আগামী ১৬ জানুয়ারি কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সামনে অবস্থান এবং বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
১৫ সংগঠনের গণঅবস্থান: বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে গণঅবস্থান করেছে ‘সমমনা গণতান্ত্রিক জোট’র নেতারা। জোটের সমন্বয়ক মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচিতে জিয়া নাগরিক সংসদের মাইনুদ্দিন মজুমদার, ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের আজিজুল হাই সোহাগ, শহীদ জিয়া আইনজীবী পরিষদেও আবু ইউসুফ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দলের ওমর ফারুক, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সংবিধান সংরক্ষণ পরিষদের আতিকুর রহমান, গণতন্ত্র রক্ষা মঞ্চ’র মো. মনোয়ার হোসেন বেগ, জাতীয়তাবাদী চালক দলের মো. সাজাহান, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা-৭১’র আনসার রহমান সিকদার, ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশের কাদের সিদ্দিকী, মুভমেন্ট ফর ডেমোক্রেসির রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের বাহাদুর আহম্মেদ পিন্টু, দেশরক্ষা মানুষ বাঁচাও আন্দোলনে আজিজা সুলতানা, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদে মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট: যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর বিজয়নগরে আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে ফুটপাতে গণঅবস্থান করেছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় শুরু হওয়া গণঅবস্থান শেষ হয় দুপুর ২ টায়। নেতাকর্মীরা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে গণঅবস্থানে জমায়েত হন। জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য দেন জাগপার বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এসএম শাহাদাত, ডিএল’র সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, ফরিদ উদ্দিন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, শাহ আহমেদ বাদল, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের কমরেড নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী ও ইঞ্জিনিয়ার আবদুল বারিক, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমুসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা ১৬ জানুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল করবে বলে জানান।
১২ দলীয় জোটের গণঅবস্থান: গতকাল বুধবার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিজয়নগর পানির ট্যাংকি সংলগ্ন রাস্তায় গণঅবস্থান করেছে ১২ দলীয় জোট। জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন বেগবান করার জন্য রাজপথে সবাইকে নেমে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান। এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির কারি মোহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার ইকবাল হোসেন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আব্দুল করিম ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম সহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
আরামবাগে গণফোরাম: এদিকে মতিঝিলের আরামবাগে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে গণফোরাম। এসময় বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু, অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, সুব্রত চৌধুরী, মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের,বীর মুক্তিযোদ্ধা খান সিদ্দিকুর রহমান, আইয়ুব খান ফারুক, মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, মতিউর রহমান খোকন প্রমুখ। এসম বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেপ্তার এবং কারাবন্দি নেতাদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান মোস্তফা মোহসীন মন্টু। গণফোরাম অবিলম্বে সরকারের দু:শাসন হটাতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে তিনি জানান।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।