Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লা সীমান্তপথে মুড়িমুড়কির মতো আসছে মাদক ও চোরাচালানি পণ্য

জব্দ ৯৮ কোটি টাকার পণ্য : গ্রেফতার সাড়ে তিন হাজার

| প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লার কয়েকটি সীমান্তপথে প্রতিদিন মুড়িমুড়কির মতো আসছে বিভিন্ন ধরনের মাদক ও চোরাচালানি পণ্য। চোরাচালান ব্যবসায়ীরা নিত্যনতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ ব্যবসা। র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও বনবিভাগ অভিযান চালিয়ে গত এগার মাসে প্রায় ৯৮ কোটি টাকার মাদক ও চোরাচালানি পণ্য জব্দ করেছে। ওইসময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে সাড়ে তিন হাজার পাচারকারীসহ মাদক ও চোরাচালানি ব্যবসায়ী। অভিযানে সাফল্য এলেও সীমান্ত পথে মাদক ও চোরাচালানি পণ্য আসা বন্ধ হচ্ছে না। প্রতিদিনই পরিববর্তিত হচ্ছে মাদক ও চোরাচালানি পণ্য আনার কৌশল।
কুমিল্লার অন্তত পাঁচটি উপজেলার সীমান্ত জুড়ে রয়েছে ভারতের অবস্থান। কুমিল্লায় দু’শতাধিক চোরাকারবারি সীমান্ত এলাকায় ২০টিরও বেশি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করছে চোরাচালান ব্যবসা। গডফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকেই চোরাচালান ব্যবসার দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে তাদের সহকর্মীদের। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনেকেই চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন এমন তথ্যও রয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাছে। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। কুমিল্লার পাঁচ  উপজেলার ৭৪ কিলোমিটার সীমান্ত পথে ভারত থেকে শাড়ি, থানকাপড়, থ্রীপিস, প্যান্ট, শার্ট, স্যুয়েটার, শাল, চাদর, মসলা, গুড়োদুধ, বিস্কুট, কসমেটিকস, মটরসাইকেল পার্টস ও মোটর সাইকেল, গাড়ীর যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক্সসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কুমিল্লায় ঢুকছে। বিশেষ করে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল, আশাবাড়ি, নয়নপুর, বুড়িচং উপজেলার চড়ানল, বারেশ্বর, সংকুচাইল, রাজাপুর, আদর্শ সদর উপজেলার বিবির বাজার, বৌয়ারা, গোলাবাড়ি, শাহাপুর, শিবের বাজার, সদর দক্ষিন উপজেলার একবালিয়া, তালপট্টি, সুবর্ণপুর, চৌয়ারা, যশপুর, বৌয়ারা, শ্রীপুর, কনেশতলা, দড়িবটগ্রাম, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গোমারবাড়ি, আমানগন্ডা, ছফুয়া, জগন্নাথদিঘি, গোলপাশা, বসন্তপুর, সাতবাড়িয়া, কাইচ্ছুটি ও পদুয়া সীমান্ত পথ ব্যবহৃত হচ্ছে মাদক ও চোরাচালানি পণ্য আনার কাজে।
পণ্যসামগ্রী ছাড়াও ওইসব সীমান্ত পথে প্রতিনিয়ন আসছে ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, মদ, বিয়ারসহ বিভিন্ন রকমের মাদক দ্রব্য। মুড়ি-মুড়কির মতো মাদক আসছে কুমিল্লায়। ঠেকানো যাচ্ছে না মাদকের ভয়াবহ বিস্তার। বাড়ছে মাদকসেবির সংখ্যা। প্রতিদিন ২০/২৫ লাখ টাকার মাদক বেচাকেনা হয় এই কুমিল্লায়। উল্লেখিত সংস্থার সর্তক নজরদারি এবং অব্যাহত অভিযানের মধ্যেও মাদকের বিষাক্ত ছোবল তছনছ করে দিচ্ছে কুমিল্লার তরুণ-যুবসমাজকে। আবার চোরাইপথে মূল্যবান কাঠও আসছে কুমিল্লায়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও বনবিভাগ মাদক ও চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৯৭ কোটি ৮৭ লাখ সাড়ে ২৭ হাজার টাকার মাদক ও চোরাচালানি পণ্য জব্দ করেছে। এ সময় ৩ হাজার ৫৫৬জন পাচারকারীসহ মাদক ও চোরাচালানি ব্যবসায়িকে গ্রেফতার করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ