Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জাদেজ ঘূর্ণিতে কুপোকাত ইংল্যান্ড

| প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ২০১৬ সালটি দু’হাত ভরে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে। বিশেষকরে টেস্টে শেষটা হয়েছে সোনায় মোড়ানো। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে ঘরের মাঠে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জয়ে উৎসবে মাতার সাথে সাথে গতকাল নিজেকে আরেকটু উচ্চতায় নিয়ে গেলেন অধিনায়ক কোহলি। তার অধিনে এবছর খেলা ১২টি টেস্টের একটিতেও হারেনি ভারত! ৯ জয়ের বিপরীতে আছে কেবল ৩টি ড্র। এর আগে বছরে একটি টেস্টেও না হারা ইতিহাস আছে ভারতের। তবে তা আজ চলে গেছে বিস্মৃতির পথে- সেই ১৯৫৫, ১৯৬১, ১৯৭১, ১৯৮৬, ১৯৯৩ এবং ২০০৯ সালে।
ভারতে টেস্ট মানেই তো রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মুড়িমুড়কির মতো উইকেট তুলে নেওয়া। সে অশ্বিনই কিনা ম্যাচের পঞ্চম দিনে একটা উইকেটও পাচ্ছেন না, সেটাও আবার নিজের মাঠ চেন্নাইয়ে! কিন্তু সেটাও ভারতের ম্যাচ জয়ে বাঁধা হতে পারল না। রবীন্দ্র জাদেজা আছেন না! জাদেজার স্পিন-বিষে শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ড। সিরিজের শেষ টেস্টে ইনিংস ও ৭৫ রানে হেরেছে সফরকারীরা।
চেন্নাই টেস্টের শেষ দিনের সকাল দেখে বোঝা যায়নি কী নাটকীয়তা অপেক্ষা করছে শেষ বেলায়। রবিন্দ্র জাদেজার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, ইংলিশদের কিছু বাজে শটে পঞ্চম ও শেষ টেস্টে দারুণ এক জয় পেয়েছে ভারত। মুম্বাইয়ের পর চেন্নাইয়েও প্রথম ইনিংসে বড় স্কোর করেও ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে ইংল্যান্ড। এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে অ্যালেস্টার কুকদের বিব্রতকর হারটি ইনিংস ও ৭৫ রানের। এই জয়ে ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বিরাট কোহলির দল।
হারের দায়টা চাইলে মঈন আলীর ঘাড়েও ফেলতে পারেন ইংল্যান্ডের সমর্থক দল। চা-বিরতির আগের ধাক্কাটি মাত্র সামলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। শেষ সেশনের ৮ ওভারও প্রায় শেষ হতে চলল। হাতে ৬ উইকেট নিয়ে দিনের বাকি সময়টা আরামসে কাটিয়ে দিতে পারত তারা। কিন্তু জাদেজার ওভারের দ্বিতীয় বলটি কেন যেন স্টেডিয়াম ছাড়া করতে চাইলেন মঈন। কিছুই হলো না, বলটি মিড অনই পার হয়নি। জমা পড়ল অশ্বিনের হাতে।
ইংল্যান্ডের রান তখন ১৯২। এরপরই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল ইংলিশ ইনিংস। ১৫ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ২০৭ রানেই অলআউট ইংল্যান্ড। ভারতের প্রথম ইনিংসের স্কোর ছুঁতেই আরও ৭৫ রান দরকার ছিল অ্যালিস্টার কুকদের।
ইংল্যান্ডের এমন সর্বনাশের পুরো কৃতিত্বটা জাদেজার। পঞ্চম দিনেও পিচে বোলাররা কোনো সাহায্য পাচ্ছিলেন না। অশ্বিনের মতো বোলার যেখানে উইকেটের জন্য হাপিত্যেশ করছেন, সেখানে ইংলিশ টপ অর্ডারকে একলাই ধসিয়ে দিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম ৬ উইকেটের ৫টিই নিয়েছেন তিনি। আবার উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া জস বাটলার যখন বাকিদের নিয়ে দিন শেষ করার অপেক্ষায়, তখন ৪ বলের মধ্যে শেষ ২ উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে এনে দিয়েছেন সিরিজে টানা চতুর্থ জয়। প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটের পর, দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট- প্রথমবারের মতো ম্যাচে ১০ উইকেটও পেয়ে গেলেন জাদেজা।
দলকে টেস্টে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ এনে দিতে ত্রিশতক করা করুন নায়ার পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া কোহলি হয়েছেন সিরিজ সেরা।

২০১৬ সালে টেস্ট দলগুলো
দল ম্যাচ জয় হার ড্র
ভারত ১২ ৯ ০ ৩
বাংলাদেশ ২ ১ ১ ০
দ.আফ্রিকা ৮ ৪ ২ ২
শ্রীলঙ্কা ৮ ৫ ২ ১
উইন্ডিজ ৮ ১ ৪ ৩
জিম্বাবুয়ে ৪ ০ ৪ ০
অস্ট্রেলিয়া ১০ ৪ ৫ ১
নিউজিল্যান্ড ১১ ৪ ৬ ১
পাকিস্তান ১০ ৪ ৬ ০
ইংল্যান্ড ১৭ ৬ ৮ ৩

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড : ৪৭৭ ও ৮৮ ওভারে ২০৭ (কুক ৪৯, জেনিংস ৫৪, রুট ৬, মইন ৪৪, বেয়ারস্টো ১, স্টোকস ২৩, বাটলার ৬*, রশিদ ২, ব্রড ১; শর্মা ১/১৭, অশ্বিন ০/৫৬, জাদেজা ৭/৪৮, যাদব ১/৩৬, মিশ্র ১/৩০)
ভারত ১ম ইনিংস : ১৯০.৪ ওভারে ৭৫৯/৭ ডিক্লে.
ফল : ভারত ইনিংস ও ৭৫ রানে জয়ী
সিরিজ : ৫ ম্যাচের সিরিজ ৪-০ ব্যবধানে জয়ী ভারত
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : করুন নায়ার
ম্যান অব দ্য সিরিজ : বিরাট কোহলি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ