মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট গ্রহণ শুরু। গতকাল সোমবার প্রায় ৩২ কোটি জনগণের ৫৩৮ জন প্রতিনিধি অথবা ইলেকটোরাল কলেজের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন। তাদের ভোটেই চূড়ান্ত হবে কে হবেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। ক্যাম্পেইনের শুরু থেকেই একের পর এক প্রশ্নের মুখোমুখি ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন জনগণের প্রায় ৩০ লাখ ভোটে এগিয়ে থাকলেও ইলেকটোরাল কলেজের ভোট পেয়েছেন মাত্র ২৩২টি।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল ভোট। নিয়ম অনুযায়ী ট্রাম্পই হতে যাচ্ছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু ট্রাম্পের মন্ত্রিসভায় বিতর্কিত লোকদের মনোনয়ন এবং মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের অভিযোগে পরিস্থিতি কিছুটা বদলে যাওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। কংগ্রেসের অধিবেশনে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ফল উপস্থাপন করা হবে। সেক্ষেত্রে মাত্র ৩৮ জন ইলেকটর যদি হিলারির পক্ষে ভোট দেন তবে তার ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৭০। এতে উল্টে যাবে সব হিসাব-নিকাশ। ডেমোক্র্যাট নেতা হিলারিই হয়ে যেতে পারেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনের ফল পরিবর্তন হলে ১৪০ বছরের মধ্যে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মুখোমুখি হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ভোটের সর্বশেষ ফল পেতে অপেক্ষা করতে হবে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত।
উল্লেখ্য, ৮ নভেম্বর ১৩ কোটি ৬০ লাখের বেশি আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সব রাজ্যের ফল শেষে ট্রাম্পের তুলনায় হিলারি ক্লিনটন প্রায় ৩০ লাখ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। ‘উইনার টেক অল’ (বিজয়ী দল রাজ্যের সবকটি ইলেক্টোরাল ভোটের অধিকারী হবেন) রীতি অনুযায়ী দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে অল্প ব্যবধানে জিতে রিপাবলিকান দল ইলেক্টোরাল ভোটে বাজিমাত করেছে। প্রাপ্ত ফল অনুযায়ী ট্রাম্প ৩০৬টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন। আর হিলারি ২৩২। ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রয়োজন ২৭০টি। সেই হিসাবে অতীতের ধারাবাহিকতা অনুযায়ী ট্রাম্পই প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। আগামী ৩ জানুয়ারি কংগ্রেসের অধিবেশনে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের ফলাফল উপস্থাপন করা হবে।
অপর এক খবরে জানা যায়, রিপাবলিকান দলের ৩৮ জন ইলেক্টর যদি দলের সঙ্গে বেইমানি করে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে ভোট দেন, তবে নজিরবিহীন ইতিহাস তৈরি হবে। তবে এটার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। কারণ দলের বিশ্বস্ত লোকেরাই ইলেক্টর হিসেবে মনোনীত হন। আর একসঙ্গে এতজন ইলেক্টরের বেইমানি করার আশা দুরূহ।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা হিলারি ক্লিনটন কাউকেই পছন্দ না করে বিদ্রোহ করতে পারেন রিপাবলিকান ইলেক্টররা। এক্ষেত্রে তারা তৃতীয় কোনো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন অথবা ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন। এক্ষেত্রে ২৯টি রাজ্যে বিদ্রোহী ইলেক্টরদের জন্য জরিমানাসহ বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তবে সেসব পরোয়া না করে সত্যিই যদি এমন ঘটনা ঘটে আর হিলারি বা ট্রাম্প কেউই প্রয়োজনীয় ২৭০ ইলেক্টোরাল ভোট না পান, সেক্ষেত্রে কি ঘটবে? এমন অচলাবস্থা কাটাতে নিয়মানুযায়ী কয়েকটা ধাপে অগ্রসর হতে হবে। এক্ষেত্রে মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস বা প্রতিনিধি পরিষদ প্রেসিডেন্ট ও সিনেট ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে। প্রথমত, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ সদস্যরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাজ্যের প্রতিনিধি একটি করে ভোট দিতে পারবেন। যিনি কমপক্ষে ২৬ রাজ্যের প্রতিনিধির ভোট জিততে পারবেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। দ্বিতীয়ত, এই ভোটেও কোনো প্রার্থী যদি প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, তবে আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বার বার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। শেষপর্যন্ত একই রকম অচলাবস্থা থাকলে সিনেট নির্বাচিত নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্যদিকে সিনেটের মাধ্যমে নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে ১০০ সিনেট সদস্যের মধ্যে ৫১ জনের সমর্থন লাগবে। যদি এক্ষেত্রে ৫০-৫০ পরিস্থিতি হয়, তবে আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বার বার ভোটগ্রহণ হবে। তাতেও সমাধান না হলে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট একটি সিদ্ধান্তের ভোট দিয়ে নতুন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন। বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।