মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনা মহামারি বিষয়ে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিপর্যয়কর আচরণের কারণে সম্ভবত তিনি পুনর্র্নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। তবুও অতি আশ্চর্যের কথা এই যে, তিনি শতাব্দীর বিরল স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক সঙ্কটে দায়ীত্বজ্ঞানহীন কার্যকলাপ করা সত্তে¡ও আমেরিকান ইতিহাসের যে কোনো দায়িত্বরত প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বিজয়ী করা রাজ্যগুলোতেও কেন ট্রাম্পের সাথে ভোটের এতটা কম ফারাক, তার ৩টি কারণ উল্লেখ করেছেন বিশ্লেষকরা: ট্রাম্পের জাতিবিদ্বেষের মন্ত্র, যা সঠিক ভোটগুলোর পরিসংখ্যানকে অস্পষ্ট করেছে; করোনাপূর্ব অর্থনৈতিক শক্তি এবং বেপরোয়া চলাফেরা করে মহামারির সত্য অস্বীকার করার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ব্যাপক সাফল্য।
সমর্থকদের সত্য নির্ভর তথ্যের উৎস থেকে দূরে রাখার জন্য এবং জাতিগত বিদ্বেষ উস্কে দেয়ার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার একটি বিশেষ স্বভাব রয়েছে ট্রাম্পের। এ বিস্ময়কর কৌশলটি রিপাবলিকানদের পক্ষে কাজ করেছে, এমনকি যদিও ট্রাম্প নিজে শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হতে পারেননি। যাইহোক, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কর কাটা, অর্থনীতির বিপুল ঘাটতি ও ঋণ পরিচালনা করা এবং করের হার বৃদ্ধি না করার নিরলস প্রচারণা কয়েক মিলিয়ন আমেরিকানের জন্য ইতিবাচক হিসেবে কাজ করেছিল। এখানেই ডেমোক্র্যাটদের ভোট খানিকটা দমে গেছে।
এ ধরনের রিপাবলিকান বার্তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ডেমোক্র্যাটদের বাধ্যতামূলকভাবে একটি প্রতিযোগিতামূলক কৌশল উপস্থাপন করা দরকার ছিল। ডেমোক্র্যাটরা সরকার চালালে সংগ্রামী শ্রমিক এবং ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কী পেতে পারে, তা কখনই স্পষ্ট হয়নি। রিপাবলিকান ব্যর্থতার গভীরে পৌঁছানো এবং তা তুলে ধরার জন্য ভাইরাসটিকে সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং মোকাবেলায় অন্যান্য দেশগুলি কী করেছে, তা নিয়ে ট্রাম্প সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার প্রয়োজন ছিল ডমোক্র্যাটদের এবং আমেরিকাকে নিরাপদে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনাতে তাদের নমুনা পরীক্ষার জন্য অপারেশ র্যাপ স্পিড এবং পি.পি.ই. এর মতো কিছু করার প্রতিশ্রুতিও দেয়া দরকার ছিল তাদের।
সম্ভ্রান্তদের এবং পরিষেবা কর্মীদের মুদির টাকার জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে বাধ্য করাটা রিপাবলিকানদের অভাবনীয় নিষ্ঠুরতা ছিল। তবুও করোনার বিরুদ্ধে তাদের বেপরোয়া প্রচারণা লাখ লাখ আমেরিকানদের বুঝিয়েছে যে, ঝুঁকিটি খুব কম ছিল এবং ডেমোক্র্যাটরা খামাখাই তাদের কর্মক্ষেত্র ও স্কুল বন্ধ রেখেছিল, ফলে তারা অর্থশূন্য হয়ে গেছে এবং ডেমোক্র্যাটদের বুঝতে হতো যে, পূর্ববর্তী নির্বাচনে ট্রাম্প কীভাবে জাতি বিদ্বেষের অস্ত্র প্রয়োগ করে তার দলকে বাঁচিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্টের অসাদাচরণকে কাটিয়ে ওঠার জন্য রিপাবলিকানদেরও একটি উপায় দরকার ছিল, তাই তারা ব্যালটে তাদের আনুগত্য পুনরায় নিশ্চিত করেছেন।
ডেমোক্র্যাটদের বিজয় রিপাবলিকান ব্যর্থতার বিরুদ্ধে নির্বিচারে সমালোচনা সিনেটে সহজে সংখ্যাগরিষ্ঠ এনে দেবে। তবে, এর থেকে উন্নত কিছু ঘটবে না। যতক্ষণ না মন বিষিয়ে দেয়া জাতিবিদ্বেষের মন্ত্রটি নষ্ট না করে দেয়া হবে, ততক্ষণ সবকিছু তীব্রভাবে বিতর্কিত হয়ে উঠতে থাকবে এবং এমনকি অত্যন্ত মারাত্মক ব্যর্থতাও শাস্তির নাগালের বাইরে চলে যেতে থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।