বিশেষ সংবাদদাতা : নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ কতটা সফল হবে- সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বিএনপি নেতাদের মনোভাব পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সালিশ মানি, তালগাছটা আমার’- এই যদি বিএনপির নীতি হয়, তাহলে আজকের সংলাপ সফল হবে না।
গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গভবনে ওই সংলাপ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা আজকে প্রেসিডেন্টের কাছে যাচ্ছে সংলাপের জন্য। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিএনপি যদি গণভবনে যেত, তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস ভিন্ন হতে পারত।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, আমরা মহামান্য প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাই, অভিনন্দন জানাই, মহামান্য প্রেসিডেন্ট বিএনপিকে ডেকেছেন নির্বাচনী সংলাপের জন্য। তবে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিএনপির সংলাপের ‘অভিজ্ঞতা’ সুখকর নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান যখন তাদের ডেকেছিলেন, তখন তারা গিয়েছিলেন, কিন্তু তখনও তাদের মনমত হয়নি।
আজ বিএনপি যদি মনে করে, ‘সালিশ মানি, তালগাছটা আমার’ তাহলে সংলাপ সফল হবে না। বিএনপি নেতাদের ‘বাস্তবসম্মত মনোভাব’ নিয়ে আলোচনায় যেতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে মনে হয়, মহামান্য প্রেসিডেন্ট আমাদের অভিভাবক, তিনি অনেক উদার প্রকৃতির মানুষ। তিনি তার দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করবেন।
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, দলটি এখন কি চায়, তা তারা নিজেরাও জানে না। বিএনপি কি গণতন্ত্র চায়? তারা যখন বিরোধী দলে ছিলেন জাতীয় সংসদ ১৬৯ দিন সক্রিয় থাকলেও বিএনপি এসেছিল ৪৫ দিন, আর বেগম জিয়া এসেছিলেন ৫ দিন। যারা সংসদে ঠিকমতো উপস্থিত হয় না, তারা কি আসলে গণতন্ত্র চায়? তারা আসলে চায় ক্ষমতা। কিন্তু পেছন দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাদের মানসিকতা, তাদের জনসমর্থন সংকুচিত হবে।
এর আগে মঞ্চে এসে ওবায়দুল কাদের তার আগের বক্তাদের সমালোচনা করেন। আপনারা সবাই বক্তব্যে ‘টাইটেল’ দিতে দিতে সময় শেষ করে ফেলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যের কথা কারও মাথায় নেই। সবাই বলে, মেধাবী সাবেক ছাত্রনেতা। আমার চেয়ে মেধাবী ছাত্রনেতা নেই! এইসব টাইটেল বন্ধ করুন। ৪৯ থেকে অথবা ৭৫ থেকে শুরু করা গতানুগতিক বক্তব্য দেওয়ার ‘ট্রাডিশন’ থেকে আমাদের বের হতে হবে। এই সকল গতানুগতিক ভাষণ বর্জন করতে হবে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও মতিউর রহমান মতি, নারীবিষয়ক সম্পাদিকা উম্মে রাজিয়া কাজল, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু ও সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন।