পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নগরীতে পাঁচ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াতকে খুনের পর লাশ ছয় টুকরো করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার ঘটনায় গ্রেফতার প্রধান আসামি আবির আলীর (১৯) বাবা-মা ও ছোট বোনকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় এখন আসামির পুরো পরিবারই মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এর হেফাজতে। গতকাল মঙ্গলবার ওই তিনজনকে নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলার বাসা থেকে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করে সাতদিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) মনোজ কুমার দে জানান, আদালত তিনজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তবে বোন কিশোরী হওয়ায় তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গ্রেফতার তিনজন হলেন- আবির আলীর বাবা আজহারুল ইসলাম, মা মোছাম্মৎ আলো বেগম এবং তার ১৫ বছর বয়সী ছোট বোন আখি আক্তার। পিবিআই পরিদর্শক মনোজ কুমার দে জানান, শুনানি শেষে আবিরের বাবা ও মাকে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলিউল্লাহ। অন্যদিকে আবিরের বোনকে তিনদিন ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রেখে সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক সিরাজউল্লাহ কুতুবী।
আইও বলেন, রিমান্ডে আবিরকে জিজ্ঞাসাবাদে আয়াত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এরপর আমাদের সন্দেহ, এ বিষয়ে আবিরের বাবা-মা, বোনের কাছে আরও তথ্য থাকতে পারে। যেসব তথ্য আবিরের কাছ থেকে পাওয়া গেছে সেগুলো তার বাবা, মা ও বোনের সঙ্গে ক্রসচেক করা হবে। শিশু আয়াতকে অপহরণ করে প্রথমে আবির আলীর বাবা আজহারুল ইসলামের বাসায় নিয়ে হত্যা করা হয়। পরে সেখান থেকে ব্যাগে ভরে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার বা আলো বেগমের পকেট গেটের বাসায়। সেখানে বাথরুমে লাশ ছয় টুকরো করে সাগরে ফেলা হয়।
গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে নগরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সোহেল রানার মেয়ে আয়াত নিখোঁজ হন। ১০ দিন পর ২৪ নভেম্বর পিবিআই আবির আলীকে গ্রেফতারের পর জানতে পারে, আয়াতকে শ্বাসরোধে খুন করে লাশ কেটে ছয় টুকরো করে আবির। এরপর সেগুলো সাগরে ভাসিয়ে দেয়।
আবিরকে নিয়ে গত শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত কয়েক দফায় পিবিআই টিম তার বর্ণনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলগুলোতে গিয়ে লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্য আরও যাচাই এবং আনুষাঙ্গিক আলামত সংগ্রহে পিবিআই তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে। প্রথম দফায় গত শনিবার আবিরকে দুইদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। সোমবার দ্বিতীয় দফায় আরও সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আবির আলী স্বীকার করেছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আয়াতকে অপহরণের পরিকল্পনা করে তাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া আজহারুলের ছেলে আবির আলী। পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ঠ আবিরকে আয়াত ‘চাচ্চু’ বলে সম্বোধন করতো। ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসার সামনে থেকে আয়াতকে কোলে নিয়ে আবির ঢুকে যায় তার বাবার বাসায়, যেখানে তখন কেউ ছিল না। সেখানে ১৫ মিনিটের মধ্যে শ্বাসরোধ করে আয়াতকে খুন করে আবির।
এরপর লাশ ব্যাগে ভরে নিয়ে যায় নগরীর আকমল আলী সড়কের পকেটগেট বাজার এলাকায় তার মা আলো বেগমের বাসায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিকে মা-বাবার মধ্যে বিচ্ছেদের পর আবির মায়ের বাসায় থাকত। তবে জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা যে এলাকায়, সেই বাবার বাসায়ও তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। আবির আলী স্বীকার করেছে ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে সে অপহরণ, খুন এবং লাশগুমের ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে আবির। এরপর সাড়ে আট হাজার টাকা বেতনে চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি কারখানায় এক বছর চাকরি করে সে। সিসিটিভির একটি ফুটেজে ভারী ব্যাগ নিয়ে বাসা থেকে বের হওয়ার ছবি দেখেই পিবিআই তাকে পাকড়াও করে। পরে সে খুনের কথা স্বীকার করে। তার কাছ থেকে এখন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায়ের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।