মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দীর্ঘদিনের সামরিক শাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন ঘটনা সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার বিষয়ে একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরছে। মিয়ানমার বিষয়ক কিছু পর্যবেক্ষক মনে করেন, ক্ষমতার বিস্তার ঘটাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংকট সৃষ্টি করছে দেশটির সেনাবাহিনী
ইনকিলাব ডেস্ক : বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা চলছে। একই সঙ্গে চীন সীমান্তে সরকারি সেনাবাহিনীর সঙ্গে জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এতে কিছু আভাস ফুটে উঠেছে। তা হলো অং সান সুচি এমন সংকট মোকাবিলা করছেন যাতে মনে করা যেতে পারে সেনাবাহিনী সামরিক অভ্যুত্থান ঘটাতে পারে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ও অন্যরা রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া অং সান সুচির ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির মধ্যে পীড়ন দেখা দিয়েছে। প্রাণঘাতী নয় এমন চারটি বোমা হামলা হয়েছে ইয়াঙ্গুনে। এর সঙ্গে সার্বিক অর্থনৈতিক আন্ডার-পারফরমেন্স সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার বিষয়ে একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরছে। মিয়ানমার বিষয়ক কিছু পর্যবেক্ষক অনেক দিন ধরে মনে করেন যে, ক্ষমতার বিস্তার ঘটাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সংকট সৃষ্টি করছে সেখানকার সেনাবাহিনী। এর মধ্যে সেখানকার কমান্ডার ইন চিফ মিন অং হ্লাইং নভেম্বরে জরুরি অবস্থার সাংবিধানিক বিধানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। সেনাবাহিনী বা তাতমাদা কি অং সান সুচির সরকারকে উৎখাতের মনোবাসনা নিয়েছে কিনা সে বিষয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ২৮ নভেম্বর এই আশঙ্কা আবার জোরালো হয়েছে। ওইদিন সাবেক ক্ষমতাসীন ও সেনাবাহিনী সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ও অন্য ১২টি ছোট দল মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টকে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনডিএসসি) বৈঠক আহ্বান করার দাবি জানায়। এনডিএসসিতে রয়েছে সেনাবাহিনীর আধিপত্য। কারণ, এতে সদস্য রয়েছেন ১১ জন। তার মধ্যে ৬ জনই বর্তমানে সক্রিয় ও দায়িত্বশীল জেনারেল। তাদের রয়েছে কোনো প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দেয়ার অধিকার। ১১ সদস্যের মধ্যে তাদের ভোটই হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ। এর ফলে রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মধ্যেই ওই রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হতে পারে। তবে গত এপ্রিলে অং সান সুচির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্ট হতিন কাইওয়া এ কমিটির কোনো বৈঠক আহ্বান করেননি। তা সত্ত্বেও নিরাপত্তা বিষয়ে ইউএসডিপি ও অন্যদের বিবৃতিকে দেখা যেতে পারে মিয়ানমারকে সামরিক নিয়ন্ত্রণে ফেরার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে। সেনাবাহিনী ও তার মিত্ররা এনএলডিকে ক্ষমতায় এসে তাদের অবস্থানকে ধরে রাখতে সাংবিধানিক সংশোধনীর সুবিধার মাধ্যমে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এটা তার ব্যত্যয়। ২০০৮ সালের সংবিধানের মূল কিছু বিধানের বিষয়ে জন-অসন্তোষ ছিল। তা সত্ত্বেও কমান্ডার ইন চিফ গত ৬ বছর ধরে যেসব বিবৃতি দিয়েছেন তা দেখা হয় এক ধরনের আত্মত্যাগ হিসেবে। তিনি সংবিধানের বৈধতা ও তা টেকসই দেখতে চান। কিন্তু সামরিক শাসনে ফিরে গেলে তা হবে তার দৃষ্টিভঙ্গির উল্টোটা। সংবিধানের অধীনে প্রেসিডেন্ট যদি নিশ্চিত হন যে, সেনাবাহিনী যাদের শত্রু বলে চিহ্নিত করেছে সেই সশস্ত্র গ্রুপগুলোর হামলার মতো সময়ে বেসামরিক সরকারের অধীনে যদি স্থানীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানো না যায় তাহলে প্রেসিডেন্ট ওই অবস্থায় আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। তিনি সরকার-সেনাবাহিনীর যৌথ প্রশাসন চালাতে পারবেন অথবা ক্লিয়ারেন্স অপারেশন চালানোর পরিবর্তে ওইসব এলাকায় সেনা প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। স্থানীয় পর্যায়ে জরুরি অবস্থার অধীনে সেনাবাহিনীর কর্মকা- সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছতার বিষয়টি আইনগতভাবে তদারক করতে পারবেন জাতীয় পর্যায়ে, ইউনিয়ন ও পার্লামেন্ট পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। কিন্তু এমনটা হবে না সন্ত্রাসবিরোধী ক্লিয়ারেন্স অভিযানের ক্ষেত্রে। এমনটাই ঘটছে মিয়ানমারের পশ্চিমা ও উত্তরাঞ্চলে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে সম্প্রতি শান ও কাচিন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে লড়াই তীব্র হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষায় এনএলডির ঘাটতি রয়েছে পদক্ষেপ নেয়ায়।
এতেই সম্ভাব্য সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা জোরালো হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের নীরবতাকে দেখা হচ্ছে হতবুদ্ধি হিসেবে। দেশের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলের লড়াইয়ের কারণ ও এর পরিণতি সম্পর্কে তাতমাদা যে দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে নিরাপত্তা ইস্যুতে সরকারের বিবৃতিও পুরোটাই সেই একই রকম। এশিয়ান রিভিউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।