Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নেতিবাচক সংবাদ প্রচারে সতর্ক থাকতে হবে Ñঢাবি ভিসি

| প্রকাশের সময় : ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক : মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে যুদ্ধ, জঙ্গিবাদসহ সবই নির্মূল করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন হয় শিক্ষার। এই শিক্ষা শুধু শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা নয়, এই শিক্ষা সমাজ, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও পারিবারিক শিক্ষা। তরুণ প্রজন্মকে এই শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। জঙ্গিবাদকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা মোকাবেলায় গণমাধ্যমকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, হতাশা মানুষকে অন্যায়ের দিকে ধাবিত করে। আর নেতিবাচক সংবাদ হতাশা তৈরি করে। তাই গণমাধ্যমকে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনে সতর্ক হতে হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত মঙ্গলবার জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশই হোক বিজয়ের অঙ্গীকার শ্লোগানে জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষে এ সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে ‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম, ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াদুল করিম, সাবেক সভাপতি এম এম জসীম প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির দপ্তর সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নয়ন।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, শুধু আর্থিক অসচ্ছলতা নয়, হতাশ তরুণদের খুব সহজে জঙ্গিবাদে যুক্ত করা সম্ভব। তরুণটি কোন পরিবারের সেটা মুখ্য নয়, মুখ্য হলো সে তার সামনে কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছে কিনা। তাদের সামনে কোন রোল মডেল আছে কিনা। যাকে তারা আদর্শ জ্ঞান করে অনুসরণ করতে পারে।
তিনি বলেন, জঙ্গি সমস্যার কারণে উন্নয়নের মহাসড়কে হাঁটি-হাঁটি-পা করে এগুনো বাংলাদেশ বর্তমানে এক গভীর সংকটে পতিত হয়েছে। জঙ্গিবাদ দমন করা না গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বা এসডিজি অর্জন সম্ভব হবে না। এ জন্য জঙ্গি প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য দরকার। তিনি বলেন, একক ভাবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সম্ভব নয়। এই লড়াইয়ে জিততে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও বিতর্ক প্রতিযোগিতার মতো সহশিক্ষা কার্যক্রম জোরদার এবং পরিবার, রাষ্ট্র, সমাজ ও রাজনীতিতে বহুত্ববাদী চেতনার উন্মেষ ঘটানোসহ করাসহ দশটি প্রস্তাব তুলে ধরনে।
অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, আমরা একটি ভোগবাদী সমাজে প্রবেশ করেছি। এর ফলে ছেলে মেয়েরা তাদের আবদার বাড়িয়ে যাচ্ছে। আবদার পূরণ না হলে, তারা হতাশ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে এক সময়ে তারা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে। মিডিয়াকে এই ধরনের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশে অত্যন্ত সচেতন হতে হবে। এসময় তিনি পরিবারকে সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখারও পরামর্শ দেন।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, বিষণœতার কারণেই তরুণদের সন্ত্রাসবাদে যুক্ত করা সহজ হচ্ছে। আর এর মূল কারণ হচ্ছে আর্থিক স্বল্পতা, চাকরি স্বল্পতা, পারিবারিক কলহ ও যথাযথ শিক্ষার অভাব। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের কারণে আজ পর্যন্ত যত মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে তাদের বেশির ভাগই মুসলমান। যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, এই সন্ত্রাসবাদ ধর্মের নয়, মতের ভিন্নতার।
সন্ত্রাসবাদের লড়াইয়ে সবাইকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় মিডিয়ার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লাইভ সম্প্রচারে মিডিয়াকে আরো বেশী সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, বাঙ্গালির শিল্প সংস্কৃতির চর্চা সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে পারে। সন্ত্রাসবাদ আমাদের অস্তিত্বজনিত সমস্যা নয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে এটাকে সমূলে নির্মূল করা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সংবাদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ