পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলনে প্রবেশ করা নিয়ে এমপি বাহার ও সীমা সমর্থকদের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রতক্ষ্যদর্শীরা। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। গতকাল শনিবার বেলা ১২টার দিকে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রথম ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এদিন সকাল ১১টায় কুমিল্লা টাউন হল মাঠে ওই সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের।
এদিকে, আ.লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় হেলমেট পড়া কয়েকজন যুবক দৈনিক সমকালের ফটোসাংবাদিক এন কে রিপনের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া দৈনিক প্রথম আলোর স্থানীয় চিত্র সাংবাদিক এম সাদেক আহত হয়েছেন। তার গলায় গুলি লেগেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এম সাদেক জানান, দলটির দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের গোলাগুলি চলাকালে ছোরা গুলিতে আহত হন তিনি।
এমপি সীমা অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার রাতেও দলের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। নেতারা যেভাবে পরামর্শ দিয়েছেন সেইভাবে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে সম্মেলনে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু গেটে যেতেই বলা হয় ৮ জন ঢুকতে পারবে, তাই ফিরে এসেছি। তিনি বলেন, আমি মিছিলের সামনে ছিলাম, পেছন থেকে প্রথমে ককটেল চার্জ করা হয়েছে। সব তো পুলিশ দেখেছে। কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ হানিফ সরকার বলেন, আ.লীগের উভয় পক্ষের কর্মীরা কিছু ককটেল চার্জ করেছে। আমরা পরিস্থিতি শান্ত করেছি। বড় ধরনের কিছু ঘটেনি।
দলের নেতাকর্মীরা জানান, কুমিল্লার আ.লীগ নেতা আফজল খানের সঙ্গে দীর্ঘদিন রাজনৈতিক বিরোধ চলেছে মহানগর আ.লীগের সভাপতি ও কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের। আফজল খানের মৃত্যুর পর তার মেয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আ.লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা সীমা এখন ওই পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গতকাল শনিবারের সম্মেলনে প্রয়াত আফজল খানের অনুসারীদের উপেক্ষিত করার অভিযোগ করেছেন তারা। তবে বাহারের অনুসারীরা তা নাকচ করে দিয়েছেন। এ অবস্থায় আফজল খানের অনুসারীরা দাওয়াত না পেলেও সম্মেলনে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলের নেতাকর্মীরা জানায়, সম্মেলনে আ.লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য চলাকালে আঞ্জুম সুলতানা সীমার নেতৃত্বে আফজল অনুসারীরা টাউন হল মাঠে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় এমপি বাহারের অনুসারীরা তাদেরকে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় অন্তত দশটি ককটেল বিস্ফোরণ ও বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। পরে পুলিশের সদস্যরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
এমপি সীমার সঙ্গে সম্মেলনে প্রবেশের সময় বাঁধাপ্রাপ্ত হন মহানগর আ.লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নুর-উর-রহমান মাহমুদ তানিম, মহানগর আ.লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ইসলাম শিকদার, প্রয়াত আফজল খানেন ছেলে আ.লীগ নেতা ও কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরানসহ বেশ কয়েকজন নেতা।
মহানগর আ.লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নুর-উর-রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, ৫ নভেম্বরের সম্মেলনের বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। সম্মেলনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি সভায় আমাদের কাউকে রাখা হয়নি। এরপরও আমরা সম্মেলনে গিয়েছি। টাউন হল গেটে তারা (বাহার গ্রুপ) আমাদেরকে প্রবেশ করতে না দিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়। আমরা চাইলে গেট ভেঙে প্রবেশ করতে পারতাম। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদেরকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন বিশৃঙ্খলা না করতে। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা ফিরে আসছিলাম। তখন পেছন থেকে তারা আমাদের কর্মীদের ওপর আক্রমণ করে। এ ঘটনায় আমাদের কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে এমপি বাহারের অনুসারী সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক ও মহানগর আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, আমরা এখন সম্মেলনস্থলে। আমাদের লোকজন কোনো গুলি ছোড়া বা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়নি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা সোয়া ১১টায় এমপি বাহাউদ্দিনের সভাপতিত্বে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয়। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. আবদুস সবুর, কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।