Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে আগুন লাগায় সেনাবাহিনী : এইচআরডব্লিউ

| প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়িতে দেশটির সেনাবাহিনী আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত ছবি বিশ্লেষণ করে তারা এ দাবি জানায়। এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, রোহিঙ্গা গ্রাম ওয়া পেইকের স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে তারা দেখতে পেয়েছে, গ্রামটি যখন জ্বলছিল, তখন আশপাশে সেনাবাহিনীর ট্রাক যাতায়াত করছিল। মানবাধিকার সংগঠনটির দাবি, ছবিতে প্রমাণিত হয়েছে, আগুন দেয়ার সময় সেনাবাহিনী সেখানেই উপস্থিত ছিল। এইচআরডব্লিউ-র এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস্ বলছেন, এটা বিশ্বাস করা কঠিন, সেনা সদস্যদের চোখের সামনে ওয়া পেইকের ৩০০ বাড়ি এক মাস ধরে জঙ্গিদের দেওয়া আগুনে পুড়েছে, আর তারা তা বসে বসে দেখেছে। তিনি আরও বলেন, স্যাটেলাইটের এই ছবির পর মিয়ানমারের সরকারি কর্মকর্তারা ধরা পড়ে গেছেন, তাদের ক্রমাগত অস্বীকৃতি যে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে, সেটা এখন তাদের স্বীকার করা উচিৎ।
চলতি বছরের অক্টোবরে রাখাইন রাজ্যে শুরু হওয়া জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়ায় সেনা অভিযানের পর অন্তত ২৭ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো রোহিঙ্গাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার পেছনে সেনাবাহিনীর হাত থাকার প্রমাণ হাজির করে দাবি উত্থাপন করেছে এইচআরডব্লিউ। কিন্তু মিয়ানমার সরকার প্রতিবারই ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে। এইচআরডব্লিউর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ ঠেই বলেছেন, রাখাইন রাজ্যের ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে, সুতরাং এখন তারা কোনও মন্তব্য করবেন না। সরকারি একটি তদন্ত দল পাঁচদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা গ্রামগুলো সফর করেছে। জানুয়ারির শেষ দিকে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১২ সালে রাখাইনে জাতিগত দাঙ্গায় শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হওয়ার গত কয়েক বছর সেখানে তেমন উত্তেজনা দেখা যায়নি। চলতি বছরের ৯ অক্টোবর বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ এলাকায় সন্ত্রাসীদের সমন্বিত হামলায় নয় পুলিশ সদস্য নিহত হয়। দুই দিনের মাথায় ১১ অক্টোবর মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরও ১২ জনের মৃত্যুর কথা জানায়। তারা দাবি করে, প্রায় ৩০০ মানুষ পিস্তল এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে সৈন্যদের উপর আক্রমণ করলে সেনাবাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে। পরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানায়, রাখাইনে সহিংসতায় অন্তত ৮৬ জন নিহত হয়েছেন। রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমার সরকার। সেখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা মনে করে রোহিঙ্গা মুসলমানরা বাংলাদেশ থেকে সেখানে গেছে। গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার পরও এই বাস্তবতার বদল ঘটেনি। বরং নির্বাচনের আগে-পরে ফাঁস হয়েছে সু চির মুসলিমবিদ্বেষের নানা দিক। নির্বাচনে তিনি মুসলমানদের প্রার্থী করেননি। রোহিঙ্গা পরিচয়টিও অস্বীকার করেন সু চি। বিবিসি, ওয়েবসাইট।



 

Show all comments
  • মেরাজ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১:৪৫ এএম says : 0
    সবাই খালি লিপ সার্ভিস দিচ্ছে........................
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ