মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বে ক্রমেই বেড়ে চলেছে চীনের প্রভাব। তাতেই উদ্বিগ্ন আমেরিকা। এদিকে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ঘটে যাওয়া গালওয়ান সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ভারত-চীন সম্পর্কও তলানিতে। তাই দেরি না করে ভারতের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চাইছে মার্কিন সেনা বলে জানিয়েছে পেন্টাগন।
গতকাল, বৃহস্পতিবার ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স স্ট্র্যাটেজি ২০২২’ বা জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল নীতি প্রকাশ করে আমেরিকা। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রকাশিত এই নীতিতে চীনকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এবং ‘ড্রাগন’কে রুখতে ভারতেই ভরসা রেখেছে ওয়াশিংটন। ওই নথিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, “প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়িয়ে তোলা হবে।
এভাবে আগ্রাসী চীনকে রুখে দিয়ে ভারত মহাসাগরে মুক্তবাণিজ্য ও নৌচালনার স্বাধীনতা বজায় রাখা হবে।” নথিতে আরও বলা হয়েছে, “আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে চীন। নিজের স্বার্থ আদায়ে তারা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক পরিকাঠামোয় যেভাবে বদল আনার চেষ্টা করছে তা উদ্বেগের।”
বলে রাখা ভাল, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর গোটা বিশ্বেই মার্কিন আধিপত্য বিস্তার লাভ করে। কিন্তু এবার ‘আঙ্কেল স্যাম’-কে টেক্কা দিচ্ছে কমিউনিস্ট চীন। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের মাধ্যমে পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে এশিয়া, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকায় প্রভাব বিস্তার করছে বেইজিং। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম বড় জলপথের উপর নিয়মন্ত্রণ স্থাপন করতে দক্ষিণ-চীন সাগরের প্রায় গোটাটাই নিজের বলে দাবি করছে চীন। সেখানে বেশ কয়েকটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে মিসাইল সিস্টেম ও বিমানঘাঁটি তৈরি করেছে লালফৌজ।
উল্লেখ্য, চীনের প্রভাব বিস্তার নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। বহুদিন আগেই চীনের পরিকল্পনা স্পষ্ট করে ২০১৩ সালে, ‘অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট’-এর ‘দ্য স্ট্র্যাটেজিস্ট’ পত্রিকায় লিখেছিলেন চীন-বিশেষজ্ঞ ইতিহাসবিদ এবং ‘অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’-র ভিজিটিং ফেলো জিওফ ওয়েড। চীনা ভাষার সংবাদ সংস্থা ‘ঝংগুও শিনওয়েং শি’-তে প্রকাশিত সেই ছকের উল্লেখ করে জিওফ ওয়েড তার নিবন্ধে (“চায়না’জ সিক্স ওয়ারর্স ইন দ্য নেক্সট ফিফটি ইয়ার্স”) লিখেছিলেন, আগামী ৫০ বছরের মধ্যে চীন ছ’টি যুদ্ধ লড়তে প্রস্তুত হচ্ছে, যা বিশ্বে তাদের কর্তৃত্ব কায়েমের পাশাপাশি ‘হাইপার ন্যাশনালিস্ট’ চরিত্রও প্রতিষ্ঠা করবে।
চীনের সেই ছয় যুদ্ধের প্রথমটি তাইওয়ান দখল। ‘ঝংগুও শিনওয়েং শি’-র ছক অনুযায়ী ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে চীন ওই লক্ষ্যপূরণে আগ্রহী। দ্বিতীয়ত, দক্ষিণ-চীন সাগরের যে-দ্বীপগুলোয় নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েমের জন্য চীন বদ্ধপরিকর, পরের পাঁচ বছরে, অর্থাৎ ২০৩০-এর মধ্যে তা তারা হাসিল করতে চায়। তৃতীয় যুদ্ধ, অরুণাচল প্রদেশ দখলের লক্ষ্যে। ভারতের এই অঙ্গরাজ্য তাদের চোখে ‘দক্ষিণ তিব্বত’। নিয়মিত ভারতকে তারা তা মনেও করিয়ে দেয়। এই অসমাপ্ত কাজ তারা সারতে চায় ২০৩৫ থেকে ২০৪০ সালের মধ্যে।
চতুর্থ লক্ষ্য হল, ২০৪০-’৪৫-এর মধ্যে পূর্ব চীন সাগরে ডিয়াওইউডাও ও রিউকিউ অর্থাৎ, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জ ‘পুনরুদ্ধার’। পঞ্চম যুদ্ধের লক্ষ্য, ২০৫০-এর মধ্যে বহির্মঙ্গোলিয়া দখল। আর এই সমস্ত লড়াইয়ে রাশিয়ার সঙ্গে জোট বাঁধার পরিকল্পনা রয়েছে চীনের। এমন পরিস্থিতিতে স্বভাবিকভাবেই ভারতকে পাশে চাইছে আমেরিকা। সূত্র: টাইমস নাউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।