Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইরানে পুলিশের বিরুদ্ধে যৌন হামলার অভিযোগে নতুন করে উত্তেজনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২২, ৬:৫৯ পিএম

চলমান হিজাব বিরোধী প্রতিবাদের মধ্যেই ইরানে দাঙ্গাবিরোধী পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভরত এক তরুণীর উপরে যৌন হামলার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এ ঘটনার জন্য 'ন্যায় বিচার' দাবি করছেন ও দেশটির পুলিশ প্রধানের পদত্যাগ দাবি করছেন।

সামাজিক মাধ্যমের অনেক টুল ব্লক করে রাখা সত্ত্বেও ইরানের নাগরিকরা অনেকেই বিক্ষোভের খুবই প্রভাবশালী ছবি ব্যাপকভাবে শেয়ার করে যাচ্ছেন। দেশটিতে এবার কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় আন্দোলন দেখা যাচ্ছে। মূলত নিরাপত্তা হেফাজতে ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই সেখানে বিক্ষোভ দানা বাঁধে এবং পরে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কর্মকর্তারা দাবি করেছেন ওই তরুণী মারা গেছেন সেরিব্রাল হাইপক্সিয়া থেকে একাধিক অঙ্গ বিকল হয়ে যাবার কারণে।

যদিও তার পরিবার বলছে দেশটির নৈতিকতা পুলিশের মারধরের কারণে মাহসা আমিনির মৃত্যু হয়েছে। এরপর ইরানের ভেতরে ও বাইরে অনেকে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সবশেষ যে ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে সেটি ঘটেছে বুধবার তেহরানের আর্জেন্টিনা স্কয়ারে। এতে দেখা যাচ্ছে হেলমেটসহ সুরক্ষা সামগ্রী পরিহিত একদল পুলিশ প্রধান সড়কেই একজন নারীকে ঘিরে আছে।

এর মধ্যে একজন তার গলা চেপে ধরেন এবং তাকে অন্তত দু ডজন পুলিশের ভিড়ের মধ্যে নিয়ে যান, যাদের অনেকে মোটরসাইকেলে বসা ছিলো। যখন ওই নারীকে একটি বাইকের দিকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছিলো তখন আরেকজন কর্মকর্তা পেছন দিক থেকে তার দিকে এগিয়ে আসেন এবং তার হাতের গোড়ায় চেপে ধরেন। ওই নারী যখন পড়ে যান মাটিতে তখন আরও কর্মকর্তারা তাকে ঘিরে ধরেন।

এ সময় একটি ক্যামেরায় তোলা ভিডিওতে একটি নারী কণ্ঠকে বলতে শোনা যায় "ওরা তার চুল ধরে টানছে"। সেখানে অন্য যানবাহনের চালকেরা তখন একযোগে হর্ন বাজাতে শুরু করেন যা এবারের বিক্ষোভে সারাদেশে প্রতিবাদের একটি ভাষা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই নারীর মাথায় হিজাব বা স্কার্ফ ছিলো না। এক পর্যায়ে তাকে দাঁড়াতে দেখা যায় ও পরে তিনি দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

ভিডিওতে আগের নারীর কণ্ঠেই আবার শোনা যায়, ‘ওর দিকে তাকাও (নিরাপত্তা কর্মকর্তা), সে হাসছে।’ বিবিসি পার্সিয়ান সার্ভিস ওই ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেছে। তেহরান পুলিশের মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশের বিবৃতিতে অবশ্য ঘটনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। তবে তারা বলেছে, "শত্রুরা মানসিক যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করছে জনমনে উদ্বেগ তৈরি করতে ও সহিংসতাকে উস্কে দেয়ার জন্য"।

ঘটনা হলো বিষয়টি ঘটেছে প্রকাশ্যে যা মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি করেছে যে তাহলে পুলিশ রুদ্ধদ্বার কক্ষে কি করে। "তোমরা কি নারীদের হয়রানি এখন কারাগার থেকে প্রকাশ্যে রাস্তায় নিয়ে এসেছো তোমাদের অশ্লীলতা, কামুকতা ও নোংরামি দিয়ে আমাদের মুখ বন্ধ করতে?"- আতেফেহ নামে একজন লিখেছেন সামাজিক মাধ্যমে।

অনেক বছর ধরেই বন্দীদের সাথে যৌন ও মানসিক হয়রানিসহ নানা অসদাচরণের অভিযোগ আছে ইরানে। অনেক ইরানি লিখেছেন তেহরানের এ ঘটনা তাদের বিক্ষোভে যেতে আরও দৃঢ় করেছে। সূত্র: বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উত্তেজনা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ