Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জিজ্ঞাসার জবাব

প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। মোহাম্মদ লাবিবুল বারী ওসাইদ, উত্তরা, ঢাকা।
জিজ্ঞাসা : মহান আল্লাহপাকের অস্তিত্ব বা জাত সম্পর্কে চিন্তা করা ঠিক কিনা, জানতে চাই?
জবাব : রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা কর, তাঁর জাত সম্পর্কে চিন্তা কর না। তার কারণ তাতে বুদ্ধি বিভ্রান্ত হয়ে যায়। কিছু লোক নিজেদের সামনে পাার্থিব স¤্রাটের গৌরব দেখতে পায়। স¤্রাট উচ্চ সিংহাসনে উপবিষ্ট থাকেন আর তার সম্মুখে সাধারণ লোকগণ করজোড়ে দ-ায়মান থাকে। আল্লাহর সম্বন্ধে তাদের দৃষ্টিও তদ্রƒপ, যদি মানুষের ন্যায় মক্ষিকারও বুদ্ধি থাকত সেও মনে করত যে, আমাদের কর্তা আল্লাহর পালক আছে। তাঁর হস্তপদ এবং ওড়ার শক্তি আছে। তা না থাকলে আমাদের সৃষ্টিকর্তার ত্রুটি আছে। যখন আমার এসব বস্তু আছে, আমার সৃষ্টিকর্তার কি এসব না থেকে পারে? অথচ সে আমার সৃষ্টিকর্তা। অনেক জীবের বুদ্ধি এরূপ বুদ্ধির নিকটবর্তী। মানুষ নিশ্চয়ই অধিক অজ্ঞ, অত্যাচারী এবং অকৃতজ্ঞ। এ জন্যই আল্লাহতায়ালা তাঁর কোনো নবীর প্রতি অহী অবতীর্ণ করেছিলেন যে, “আমার দাসগণের সামনে আমার স্বভাব খুলে বল না। কেননা তা শুনে তারা অবিশ্বাস করতে পারে। তারা যেরূপ বুঝে তাদের সাথে তদ্রƒপ কথা কল।” আল্লাহর অস্তিত্ব ও সত্তার সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করা যখন নিষিদ্ধ তখন তার বিষয়ে চিন্তা করাও উচিত নয়।
সুন্নাত : আল্লাহর সৃষ্টিজগতের বিস্ময়কর ব্যাপার চিন্তা করা উচিত। অর্থাৎ আল্লাহর কারুকার্য ক্ষমতা, বিচিত্র কার্যাবলী ও সৃষ্টি নৈপুণ্য সম্বন্ধে চিন্তা করা দাকার। তা-ই তাঁর গৌরব, প্রতাপ, পবিত্রতা ও মহত্ত্ব প্রদর্শন করবে এবং তাতে তাঁর পূর্ণ জ্ঞান ও হেকমত দেখা যাবে। তাঁর গুণাবলির প্রভাব থেকেই তাঁর গুণাবলির দিকে লক্ষ্য করতে হবে। (কেননা আমরা তাঁর স্বভাবের দিকে লক্ষ্য তরতে পারি না)। যেরূপ সূর্যের জ্যোতিতে দুনিয়া উদ্ভাসিত হয়ে উঠলে তখন তার দিকে লক্ষ্য করতে পারি না। চন্দ্রের বিমল জ্যোৎ¯œা এবং তারকারাজির আলোর তুলনায় আমরা সূর্যের জ্যোতির প্রখরতা উপলব্ধি করতে পারি, কেননা দুনিয়ার আলো সূর্যের জ্যোতিরই প্রতিচ্ছায়া। ফলের প্রতি দৃষ্টিপাতই ফলের আধারের দিকে পথ দেখিয়ে দেয়। তদ্রƒপ দুনিয়া ও তার মধ্যে যা আছে তার অস্তিত্ব আল্লাহর শক্তির ফল এবং অস্তিত্বের নূরের একটি ঝলক মাত্র। সেই নূরের অনস্তিত্বের ন্যায় ভীষণ অন্ধকার আর নেই। তাঁর নূরের অস্তিত্বের ন্যায় আর কোনো নূর বা আলো তত প্রকাশ্য নয়। প্রত্যেক জিনিসের অস্তিত্ব তাঁর নূরেরই ফল। কেননা সব জিনিসের জীবন ও প্রতিপালন তাঁরই ওপর ন্যস্ত। যেরূপ সূর্যের জ্যোতি কোনো বস্তুর আলোকে রক্ষা করে, তদ্রƒপ আল্লাহ নিজেই নিজেকে রক্ষা করেন। সূর্যের একটি অংশে গ্রহণ হলে, যদি তুমি একটি সলিলপূর্ণ পেয়ালার মধ্যে সূর্যকে দেখ, তার মধ্যে সূর্যের প্রতিবিম্ব দেখতে পাবে এবং তাতে দৃষ্টিপাত করা সম্ভব হবে। সুতরাং সূর্যের জ্যোতি আংশিক বন্ধ করার জন্য সলিলের মাধ্যমে তা করতে হয়। তদ্রƒপ তাঁর কারুকার্যের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার গুণ বা স্বভাব দেখা যায়। তাঁর অস্তিত্বের জ্যোতিতে আমরা তখন বিভ্রান্ত হয়ে যাই না। তাঁর কার্যাবলির মাধ্যমে আমরা দূরে সরে যাই না। এটাই হুজুরেপাক (সা.)-এর বাণীর গুরুত্ব। আল্লাহর সৃষ্টিতত্ত্ব সম্বন্ধে চিন্তা কর, আল্লাহর অস্তিত্ব সম্বন্ধে চিন্তা কর না।
উত্তর দিচ্ছেন : মোহাম্মদ খায়রুল বাশার মানিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিজ্ঞাসার জবাব

১৭ নভেম্বর, ২০১৬
১০ নভেম্বর, ২০১৬
৩ নভেম্বর, ২০১৬
২৭ অক্টোবর, ২০১৬
২০ অক্টোবর, ২০১৬
৬ অক্টোবর, ২০১৬
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
২৫ আগস্ট, ২০১৬
১৮ আগস্ট, ২০১৬
১১ আগস্ট, ২০১৬
৪ আগস্ট, ২০১৬
২৮ জুলাই, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ