Inqilab Logo

রোববার ১৩ অক্টােবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

জিজ্ঞাসার জবাব

প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ সাফওয়ান, শাহাপুর, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা : রিজিক কিসে বাড়ে? জানতে চাই।
জবাব : রিজিক শুধু আল্লাহর ইচ্ছায় বাড়ে।
রিজিকের মালিক হলেন রাজ্জাক। আল্লাহর একটি সিফাতি নাম হলো ‘রাজ্জাকু’ অর্থাৎ রিজিকদাতা। আল্লাহতা’আলা তাঁর বান্দাদের রিজিকদাতা হিসেবে কোরআনে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। রিজিক শুধুমাত্র আল্লাহর ইচ্ছাতে বাড়ে-কমে। মানুষ শুধু রিজিক তালাসের চেষ্টা করতে পারে। রিযিক তালাসের বাহিরে মানুষ কিছুই করতে পারে না। এবং পারবেও না। রিজিক তালাসের উপর আল্লাহতা’আলা অনুগ্রহ বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে দেন। এখানে কাহারো কোনো হাত নেই। কেউ কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ পাক যাকে চান তাকে অপরিমিত জীবিকা দান করেন।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ২১২)। বৈধ পন্থায় ধনসম্পদ উপার্জনে কোনো বাধা নেই। এছাড়া ধনসম্পদ উপার্জনের ক্ষেত্রে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ পাক তোমাদের যে বৈধ ও পবিত্র রিজিক দান করেছেন তোমরা তা খাও।’ (সূরা মায়েদা, আয়াত : ৮৮)। রিজিক তালাসের পূর্বে রিজিকের পবিত্রতা সম্পর্কে অর্থাৎ হালাল-হারাম জেনে খাওয়া উত্তম। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি সহজে অনুমেয় হবে। যেমন সুদ-ঘুষের মধ্যে রিজিক তালাস করা এবং মাস শেষে চাকরির বেতনের মাধ্যমে রিজিক তালাস করা। আবার ভাত-মাছও খাবার এবং মদও কিন্তু খাবার। দুটি বিষয়ের মধ্যে আকাশ- পাতাল ব্যবধান।
আল্লাহই সকল সৃষ্ট জীবের রিজিকের ব্যবস্থা করেন। রিজিকের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আল্লাহ নিজেই নিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘জমিনের উপর বিচরণশীল এমন কোনো জাতি নেই, যার জীবিকা (পৌঁছানোর দায়িত্ব) আল্লাহর উপর নেই।’ (সূরা হুদ, আয়াত : ৬)। অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহতাআলা যার জীবনোপকরণের প্রশস্ততা দিতে চান তাই করেন, আবার যাকে তিনি চান জীবিকা সংকীর্ণ করে দেন।’ (সূরা রা-দ, আয়াত : ২৬)। রিজিক পেয়ে নেয়ামতের শুকরিয়া প্রকাশ করলে আল্লাহ নেয়ামতের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা (আমার অনুগ্রহের) কৃতজ্ঞতা আদায় করো তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের জন্যে (এ অনুগ্রহ) আরো বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা (একে) অস্বীকার করো (তাহলে জেনে রেখো), আমার শাস্তি বড়ই কঠিন।’ (সূরা ইব্রাহিম, আয়াত : ৭)। রিজিক সংকীর্ণ হয়ে গেলে রিজিক বৃদ্ধির জন্য আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতে হবে। রিজিক অনুসন্ধানের সময় আল্লাহর অনুগ্রহ কামনা করতে হবে। মনের মধ্যে সবসময় এরূপ ধারণা পোষণ করতে হবে যে, আমাদের কাজ-কর্ম রিজিক সংগ্রহের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র উপলক্ষ মাত্র। ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা তোমাদের কোনো রকম রিজিকের প্রভু নয়। অতত্রব, তোমরা একমাত্র আল্লাহর কাছে রিজিক চাও।’ (সূরা আনকাবুত, আয়াত : ১৭)। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে রিজিক কমিয়ে দেয়ার মধ্যেও বহুবিধ কল্যাণ নিহিত রয়েছে। বান্দার ভালো- মন্দ সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে আল্লাহতা’আলা সম্পূর্ণরূপে অবগত রয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি আল্লাহ পাক তাঁর (সব) বান্দাদের রিজিকে প্রাচুর্য দিতেন তাহলে তারা নিঃসন্দেহে যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করতো, (তাই) তিনি পরিমাণ মতো যাকে (যতটুকু) চান তার জন্যে (ততটুকু রিজিকই) অবতীর্ণ করেন; অবশ্য তিনি নিজের বান্দাদের (প্রয়োজন) সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ অবহিত রয়েছেন, তিনি (তাদের প্রয়োজনের দিকেও) নজর রাখেন।’ (সূরা শুরা, আয়াত : ২৭)। আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তিনি তোমাদের জীবিকা সরবরাহ বন্ধ করে দেন, তাহলে (এখানে) এমন (দ্বিতীয়) আর কে আছে যে তোমাদের (পুনরায়) রিজিক সরবরাহ করতে পারে।’ (সূরা মূলক, আয়াত : ২১)। সুতরাং রিজিকের তালাসের বিষয়ে আমাদেরকে আল্লাহর উপর নির্ভর করতে হবে। তাঁর কাছে বিনীতভাবে সাহায্য চাইতে হবে। তাহলে তিনি আমাদের রিজিকের উপর খায়ের বরকত দান করবেন।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিজ্ঞাসার জবাব

১৭ নভেম্বর, ২০১৬
১০ নভেম্বর, ২০১৬
৩ নভেম্বর, ২০১৬
২৭ অক্টোবর, ২০১৬
২০ অক্টোবর, ২০১৬
৬ অক্টোবর, ২০১৬
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
২৫ আগস্ট, ২০১৬
১৮ আগস্ট, ২০১৬
১১ আগস্ট, ২০১৬
৪ আগস্ট, ২০১৬
২৮ জুলাই, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ