বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : বসবাসের অনুপযোগী, বিদ্যুৎ, হাট-বাজার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকা, বরাদ্দের সময় যাচাই-বাছাইয়ে ত্রæটিসহ নানা অসুবিধার কারণে অনেক পরিবারই আশ্রয়ন প্রকল্প ছেড়েছে। শুধু খুলনা জেলাতেই ইউনিট খালি রয়েছে অন্তত ৬০০। এছাড়া খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ব্যারাক ত্যাগকারী পরিবারের কাছে ঋণ পাওনা রয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। সঠিক তদারকি ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারের আশ্রয়ন প্রকল্পে সরকারের এ উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।
খুলনা বিভাগীয় সমবায় কার্যালয় সূত্র জানায়, সরকার হত-দরিদ্র ও ভূমিহীন-ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের জন্য ২০০২ সালে আশ্রয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করে। এ প্রকল্পে বিভাগের ১০ জেলায় মোট প্রকল্প রয়েছে ১৪৭টি। যার মধ্যে ব্যারাক ত্যাগ করেছে প্রায় ৪ হাজার পরিবার। এখানে পুনর্বাসিত পরিবারের সংখ্যা ১১ হাজার ৮৪২টি। এসব পরিবারের মধ্যে ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে ১৭ কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার টাকা। চলমান কার্যক্রমে ঋণ আদায় করা হয়েছে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯১৩ টাকা। তবে নানাবিধ অসুবিধার কারণে চলে যাওয়া পরিবারের মধ্যে সরকারের আসল টাকা পাওনা রয়েছে এক কোটি ৪২ লাখ ১ হাজার ৫৩৪ টাকা।
বর্তমানে আশ্রয়ন প্রকল্পের নামে তিনটি প্রকল্পই চালু রয়েছে। এগুলো হল- আশ্রয়ন, আশ্রয়ন(ফেইজ-২) ও আশ্রয়ন-২। এদিকে প্রকল্পের আওতায় খুলনার ৮ উপজেলার ৪১টি গ্রামে এ প্রকল্পে ৩৬৬টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ওইসব ব্যারাকে ২ হাজার ৭৯৩টি ইউনিটে ছিন্নমূল ও হত-দরিদ্র পরিবারদের পুনর্বাসন করা হয়। এরমধ্যে ডুমুরিয়ায় ৪৬০টি, বটিয়াঘাটায় ৮০টি, দাকোপে ৯৭টি, তেরখাদায় ৫৩২টি, পাইকগাছায় এক হাজার ২৪৯টি, কয়রায় ৬০টি, দিঘলিয়ায় ১৩৫টি ও রূপসা উপজেলায় ১৮০টি ইউনিটে পুনর্বাসন হয়। তবে এরমধ্যে দাকোপ উপজেলার ৩টি, তেরখাদায় ১৮৩টি, বটিয়াঘাটার ১৪০টি, কয়রা ২৫০টি, দিঘলিয়ায় ১৫টি এবং পাইকগাছায় ১১টি মোট ৬০২টি ইউনিট খালি হয়ে যায়। এসব ইউনিটের বাসিন্দারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বসবাসকারীরা বলছেন, বসবাসের ঘরগুলো জরাজীর্ণ, মেইনটেন্যান্সের ব্যবস্থা না থাকায় টিনের তৈরী ঘরগুলো ভেঙে যাচ্ছে, খাবার পানির সংকট, প্রকল্প এলাকার আশপাশে কোন হাট-বাজার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ না থাকা, নিরাপত্তার অভাব, বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকাসহ নানাকারণে বসবাসরতরা এখান থেকে চলে যাচ্ছে।
বিভাগীয় সমবায় কার্যালয়ের যুগ্ম-নিবন্ধক অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, ব্যারাকগুলোতে কিছু সমস্যা রয়েছে। যেগুলো মেইনটেন্যান্স করা হয় আবার নষ্ট হয় এভাবেই চলে। সরকারের পক্ষ থেকে পুনর্বাসিত পরিবারগুলোকে ঋণ দেয়া হয় স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য। সে ঋণ থেকে ১২ শতাংশ লভ্যাংশের মধ্যে ৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জ, ৩ শতাংশ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে, ৩ শতাংশ সমিতির কোষাগার ও ২ শতাংশ ঋণ আদায়কারিকে দেয়ার নিয়ম। সার্ভিস চার্জ বাদ দিয়ে যে বরাদ্দ তা’ মেনটেন্যান্সের জন্য অপ্রতুল। যে কারণে কিছুদিন বাদে ঘরবাড়ী নষ্ট বা ভেঙে গেলে অনেক পরিবার চলে যায়। যে কারণে ব্যারাক ত্যাগকারি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।