মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার ক্যাপিটাল খ্যাত কানসাসের উইচিটা শহরে রৌদ্রোজ্জ্বল ঝকঝকে আকাশ। কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে তীব্র বেগে ছুটে চলছে জেট ট্রাক, বিকট আওয়াজ তুলে আকাশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে যাচ্ছে নানা আকার আকৃতির বোমারু বিমান। এ যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহড়া!
দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারও বিমান মেলায় মানুষের অভাবনীয় উপস্থিতি বেশ উৎসাহব্যাঞ্জক বলে মনে করছেন আয়োজকেরা। প্রতি বছরের মতো এ বছর নিউজার্সির আটলান্টিক সিটি, সান দিয়েগো সিটি, উইচিটা, উইসকনসিন, কলোরাডো স্প্রিং, টেক্সাসসহ যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫টি শহরে জমকালো এয়ার শোর মেলা বসে।
গ্রীষ্মের শেষে হেমন্তের শুরুতে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) কানসাস অঙ্গরাজ্যের উইচিটা শহরের ম্যাক-কোনেল এয়ারফোর্স বেইজে শয়ে শয়ে মানুষের ঢল নামে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী আয়োজিত দুদিন ব্যাপী ওপেন হাউস অ্যান্ড এয়ার শো শুরু হয়েছে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর)। প্রায় ৫০টি স্ট্যাটিক ডিসপ্লেসহ এক ডজন আকাশ ছোঁয়া এরিয়াল অ্যাক্টের সমন্বিত বর্ণিল বিমান মেলা।
রোববার তখন বেলা ১১ টা। উইচিটার আকাশে কালো মেঘের ভেতর থেকে বেরিয়ে নানা ভঙ্গিতে আকাশে উড়ছিল ১৯৪২ সালে তৈরি রঙিন ছোট্ট বিমানটি। রানওয়েতে উড্ডয়নের অপেক্ষায় প্রস্তুত ছিল থান্ডার বার্ডস। আর গ্রাউন্ডে শোভা পাচ্ছে সাদা ধবধবে বোয়িং ৭৪৭-ড্রিম লিফটার বিমান। দ্রুত আকাশ থেকে নেমে নাকের ডগায় মোতায়েন করা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করে শত্রুকে ঘায়েল করে।
এ অভিনব বিমানটি দেখে মেলায় আসা এক ছোট্ট শিশুর প্রশ্ন- এ পুরো বিমানটি কি একটি অস্ত্র? হ্যাঁ, পুরো বিমানটি অস্ত্রে সজ্জিত। একজন যোদ্ধা-পাইলট দিয়ে এটি পরিচালিত হয়। এলবি-২ স্পিরিট বোমারু বিমান। যেটি ঘণ্টায় ৬২৮ মাইল বেগে ছুটতে পারে। যুদ্ধের সময় কৌশলগত বিমান হিসেবে এটি সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে উড়ে যায়। এ বিমানটি যুদ্ধের সময় আকাশে সবার আগে সদা প্রস্তুত থাকে।
যুদ্ধের দামামায় বা বিপৎসংকুল পরিবেশে নিরাপদে দাপিয়ে বেড়াতে আকাশপথে এক বিমান থেকে অন্য বিমানে রিফুয়েলিংয়ের জন্য বিমানের সারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে কেসি-৪৬ রেফিয়েলিং ট্যাংকার। যা আকাশে নতুন সংযোজন।
হেমন্তের শুভ্র আকাশের নীলিমায় লাল-সাদা থান্ডার বার্ডসের ওড়াউড়ি নতুন প্রজন্মকে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখায়। কানসাসের উইচিটা শহরে ওপেন হাউস অ্যান্ড এয়ার শো শনিবার শুরু হলেও মেল জমে ওঠে মূলত রোববার। মেলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে সারিবদ্ধভাবে রাখা নানা যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধকালে ব্যবহৃত কার্গো বিমানসহ অর্ধশত বিমান। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শৈল্পিক ভঙ্গিতে বিমানের ওঠা-নামা প্রত্যক্ষ করেন বিপুল দর্শনার্থী।
উইচিটা শহরের আশপাশের শহর থেকে ছুটে আসা মানুষের স্রোতে উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। মেলায় আগত উৎসুক দর্শনার্থীদের যুদ্ধ কৌশল সম্পর্কে ধারণা দেন পাইলট ও বিমান বিশেষজ্ঞরা। ১৫টি পারফরমেন্স শো দেখার সৌভাগ্য হয়। এ ছাড়া ছিল- এয়ার ফোর্স থান্ডার বাডর্স, প্যাট্টিয়ট প্যারাসুট টিম, রেডলাইন, ব্রায়ানকোরেল, স্কট ফ্রান্সিস, স্মোক এন থান্ডার জেট শো, টোরা, ভ্যাম্পায়ার, গ্রেগ শেলটন, কেস্ট পিটসচসহ নানা ধরনের এয়ার শো। পাশাপাশি ছিল এফ ১৬ ফ্যালকন পি-৫১সি মাসট্যাং, এ-১০, বি-২, সি ১৭ ও কেসি-১৩৫ ফ্লাইবাই।
মেলায় ছিল শৈল্পিক কারুকাজ সংবলিত উড়োজাহাজের আদলে কাঠ দিয়ে বানানো খাবার স্টল। শত শত দর্শনার্থীকে লাইনে দাঁড়িয়ে স্টল থেকে খাবার সংগ্রহ করতে দেখা যায়। এ ছাড়া আগামী প্রজন্মের মধ্যে এ বিষয়ে পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে নানা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এয়ার শো ঘুরে পাইলটদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কানসাসের উইচিটা শহর হলো এয়ার ক্যাপিটাল নামে খ্যাত। এ শহরে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত সেসনা, লিয়ারজেড ও স্পিরিটসহ ডজনখানেক উড়োজাহাজ কোম্পানি। উইচিটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অ্যারো স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।