পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ভারতকে দেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সব ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দু’দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত চুক্তি হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গতকাল বুধবার দু’দেশের নৌ-পরিবহন সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দেয়াসহ চারটি বিষয়ে চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব চুক্তিগুলো হচ্ছে-চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার, পায়রা বন্দরে একটি বহুমুখী টার্মিনাল নির্মাণ, কোস্টাল ও প্রটোকল রুটে যাত্রী পরিবহন। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৮ ডিসেম্বর তিনদিনের সফরে ভারত যাবেন।
সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নৌসচিব পর্যায়ের এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আশোক মাধব রায় ও ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সেদেশের নৌসচিব রজিভ কুমার।
বৈঠকের শুরুতে নৌপরিবহন সচিব অশোক মাধব রায় সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) দু’দেশের নৌ প্রটোকল রুটের কমিটি মিটিং হয়েছে। আজ (বুধবার) সচিব পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখানে আমরা চারটি বিষয়ে আলোচনা করেছি। বৈঠকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার, পায়রা বন্দরে মাল্টিপারপাস (কন্টেইনার) টার্মিনাল নির্মাণ, লাইট হাউজেস ও লাইটশিপস বিষয়ে, কোস্টাল ও প্রটোকল রুটে যাত্রী ও ক্রুজ সার্ভিস সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের চুক্তি হবে।
চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর ভারত ব্যবহার করতে চাচ্ছে জানিয়ে অশোক মাধব বলেন, তারা কীভাবে বন্দর ব্যবহার করবেÑ এটা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করে একটি এগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করব। যার ড্রাফট (খসড়া) করা হয়েছে, দু’দেশ এটা নিয়ে মতবিনিময়ও করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে মতবিনিময়ে করে এটা চূড়ান্ত করব। ‘আজ শুধু আমরা এগ্রিমেন্ট (চুক্তি) করব। চুক্তিতে একটি ধারা থাকবে যে, দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি হবে।’
এ চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে দু’টি বন্দর ব্যবহারে কী কী সুবিধা দেয়া হবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহন সচিব বলেন, সাধারণভাবে বা বিশেষভাবে ভারতকে কোনো সুবিধা দেয়া হবে না। শুধু আমাদের রুটটা ব্যবহার করার জন্য চুক্তিটা করব। আন্তর্জাতিক অন্যান্য বন্দর ব্যবহার করলে যেভাবে বন্দর লেভি পায় সবকিছু প্রযোজ্য থাকবে। কাস্টম, বন্দরের যেসব চার্জ সবই তারা (ভারত) দেবে।’
বাংলাদেশের নৌসচিব বলেন, পায়রা বন্দরের সব কাজকে আমরা নয়টি কম্পনেন্টে ভাগ করেছি। এর একটি কম্পনেন্টে ভারত সহায়তা করতে সম্মত হয়েছে। এ বিষয়ে আজ আমরা আলোচনা করে একটি এগ্রিমেন্টে পৌঁছাব।
ভারতের পায়রা বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়ে সচিব বলেন, ভারত এটা পিপিপি (সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব), সরাসরি বিনিয়োগ যে কোনো একটি পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করে টার্মিনাল নির্মাণ করবে। এটা পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে ভারতের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করবে।
পায়রা বন্দরের বিষয়ে এখনও কারো কাছে কোনো টাকা চাওয়া হয়নি জানিয়ে নৌসচিব বলেন, এ বিষয়ে আমরা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে একটি পিডিপিপি (প্রাইমারি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফর্মা) পাঠিয়েছি। ১২৫টি দেশ বিভিন্ন কম্পনেন্টে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ভারতের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
নৌসচিব বলেন, সমুদ্র ও নৌপথে চলাচলে নির্দেশনামূলক বয়া, বাতি এগুলো দু’দেশ কীভাবে একসঙ্গে পরিচালনা করব এবং পাশাপাশি বয়া, বাতিসহ এগুলো যারা অপারেট করবে তাদের প্রশিক্ষণ কীভাবে শেয়ার করতে পারি এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) চূড়ান্ত করব।
তিনি বলেন, প্যাসেঞ্জার ক্রুজ সার্ভিস জাহাজের মাধ্যমে চালু করব। টুরিস্টরা ভারত থেকে বাংলাদেশে আসতে পারবে যে কোনো জায়গা দেখতে পারবে। একটা রুট করে দেয়া হবে। সেই রুটে তারা পরিদর্শন করতে পারবে। একইভাবে বাংলাদেশ থেকে যে কোনো জাহাজ টুরিস্ট নিয়ে ভারতে যেতে পারবে। ভারতের কোনো কোনো বন্দরে যেতে পারবে তা আমরা নির্ধারণ করব।
এ পর্যন্ত নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টুরিস্টরা জাহাজ থেকে নামতে পারবেন না জানিয়ে অশোক মাধব বলেন, জাহাজে থেকেই তারা দেখতে পারবেন। আগে তো জাহাজের ক্রুরাও নামতে পারতেন না। এবারের চুক্তিতে আসবে দু’দেশের ক্রুরা তিন দিনের অনঅ্যারাইভারে ভিসা পাবেন। পরবর্তী মিটিংয়ে হয়তো আসতে পারে প্যাসেঞ্জারও নামতে পারবেন। আগে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে চালাব, পরে সিদ্ধান্ত নেব।
আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের সফরে ভারত যাচ্ছেন। বৈঠকের আলোচনা প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা- এ বিষয়ে নৌসচিব বলেন, এটা এ মুহূর্তে বলতে পারব না। সচিব পর্যায়ের, জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটির সভা তিন মাস পর পর হয়। এখানে যে চুক্তিগুলো আমরা চূড়ান্ত করব সেগুলো ওখানে (প্রধানমন্ত্রীর সফরে) চূড়ান্ত হবে কী-না তা আমাদের পর্যায়ে বলতে পারব না। সেটা ইআরডি ও ফরেন মিনিস্ট্রি বসে ঠিক করবে ওখানে কোন কোনগুলো স্বাক্ষরিত হবে।
পায়রা বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহ দেখানো ভারতের প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাইলে ভারতের নৌসচিব রজীভ কুমার সাংবাদিকদের জানান, ইন্ডিয়ান পোর্ট গ্লোবাল নামের ভারতের একটি প্রতিষ্ঠান, এছাড়া বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান পায়রা বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
ভারত কবে থেকে চট্টগ্রাম ও মংলাবন্দর ভারত ব্যবহার করতে চায়- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভারতের নৌসচিব বলেন, আমরা যত দ্রুত সম্ভব সমঝোতার ভিত্তিতে চুক্তি ও এসওপির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায় তার চেষ্টা করছি। আমি আশা করছি এ বিষয়টি এ মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।